দেশের শেয়ারবাজারে আবারও ধস দেখা দিয়েছে। রবিবার (২১ জুলাই) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৭৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে প্রধান মূল্য সূচক কমেছে প্রায় একশ’পয়েন্ট। মূল্য সূচকের ধসে পড়ায় একদিনেই বিনিয়োগকারীদের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা হাওয়া হয়ে গেছে।
শেয়ারবাজারের দরপতন হচ্ছে গত কয়েক মাস ধরেই। তবে দুই সপ্তাহ ধরে দরপতনের মাত্রা বেড়েছে। শেষ ১১ কার্যদিবসের মধ্যে ৯ কার্যদিবসই দরপতন হয়েছে। বাজারের এমন দুরবস্থায় প্রতিনিয়ত পুঁজি হারাচ্ছেন লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। ফলে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা সিংহভাগ বিনিয়োগকারীরাই এখন দিশেহারা।
রবিবার (২১ জুলাই) লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৩১৫ কোটি টাকা, যা আগের কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ছিল ৩ লাখ ৮২ হাজার ২৮৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ একদিনের ব্যবধানেই বাজার থেকে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা হাওয়া হয়ে গেছে।
এদিকে, দরপতনের মাত্রা ভয়াবহ রূপ নিলেও এর পেছনের যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে কারসাজি চক্রকে দায়ী করা হচ্ছে। এসব কারসাজি চক্রের শাস্তির দাবিতে গত দুই সপ্তাহ ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনও করেছেন তারা। দিনের পর দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে শেয়ারবাজারের পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন এসব বিনিয়োগকারীরা। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে ১৫ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপিও দিয়েছেন তারা। তবে রোববার (২১ জুলাই) শেয়ারবাজারে নামা ধসে এসব বিনিয়োগকারীরা এখন হতভম্ব।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি মিজান উর রশিদ চৌধুরী জানান, ‘আমরা বাকরুদ্ধ। শেয়ারবাজারে দরপতন চলছে, তা ২০১০ সালের মহাধসের থেকে কোনো অংশে কম নয়। প্রতিনিয়ত আমাদের বিনিয়োগকারী ভাইয়েরা পুঁজি হারাচ্ছেন। অনেকে বলছেন, পরিস্থিতি যা দাঁড়াচ্ছে তাতে এক পর্যায়ে হয়তো আত্মহত্যা করতে হবে। শেয়ারবাজারে কোনো তারল্য সংকট নেই। কারসাজি চক্রের খপ্পড়ে পড়ে বাজারে এমন দুরবস্থা বিরাজ করছে। বাজারে যদি তারল্য সংকট থাকতো তাহলে আজকে কিভাবে ৩৬৫ কোটি টাকার উপরে লেনদেন হলো? ২০১০ ও ১৯৯৬ সালে যে চক্র বাজার থেকে ফায়দা লুটেছে, তারাই আবার বাজারে সক্রিয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।’
পূর্বকোণ/আল-আমিন