চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সৌদি নিষেধাজ্ঞায় চট্টগ্রামের ১৩ হাজার জন হজ-বঞ্চিত হলেন

মোহাম্মদ আলী

২৪ জুন, ২০২০ | ৭:০৭ অপরাহ্ণ

সীমিত পরিসরে আয়োজনের কারণে এবার চট্টগ্রাম থেকে ১৩ হাজার ব্যক্তি হজ বঞ্চিত হচ্ছেন। শুধুমাত্র সৌদি আরবে যারা অবস্থান করছেন তারাই এবার হজ করার সুযোগ পাবেন। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। গত ২২ জুন সৌদি আরবের হজ এবং ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ ঘোষণা দেয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জনের বিপরীতে নিবন্ধন করেছিলেন মোট ৬৪ হাজার ৫৯৪ জন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৪৫৭ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬১ হাজার ১৩৭ জন। চট্টগ্রাম থেকে এবার হজের কোটা ছিল প্রায় ১৩ হাজার। করোনার কারণে ফাইনাল নিবন্ধিত হয়েছিলেন মাত্র সাড়ে ৭ হাজার। কিন্তু সৌদি আরবের হজ এবং ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবার হজ সীমিত করার ঘোষণায় এ সাড়ে সাত হাজারও হজ থেকে বঞ্চিত হলেন।
এদিকে, হজে যেতে ইচ্ছুক চূড়ান্ত নিবন্ধন করা চট্টগ্রামসহ সারাদেশের ৬৫ হাজার হজযাত্রী চাইলে নিজেদের টাকা ব্যাংক থেকে তুলে নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ধর্মসচিব মো. নূরুল ইসলাম। করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর সৌদি আরবে নিজ দেশ ছাড়া অন্যান্য দেশের নাগরিকরা হজ করতে পারবেন না বলে ঘোষণা দেওয়ার পর এ কথা জানিয়েছেন ধর্মসচিব। গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
ধর্মসচিব বলেন, টাকা ফেরত নিয়ে কোনো হয়রানির সুযোগ নেই। টাকা উত্তোলনে কারও সমস্যা যাতে না হয় সে বিষয়টা বিশেষভাবে নজর রাখবে ধর্ম মন্ত্রণালয়। যে কেউ না যেতে চাইলে টাকা ফেরত পাবেন। ব্যাংকে টাকা সঠিকভাবে গচ্ছিত আছে, হজে যেতে ইচ্ছুকদের ভয় নেই।
সূত্র আরো জানায়, শুধুমাত্র সৌদি আরবে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিক এবং সৌদি নাগরিকরা এবারের হজ পালন করতে পারবেন। অন্য কোনো দেশ থেকে কেউ এবার হজ করতে আসতে পারবেন না। করোনা মহামারীর জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি সরকার। গত বছর বিশ্বের প্রায় ২৫ লাখ মানুষ হজ করেছিলেন। কিন্তু এবার বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ এর বিস্তারের ব্যাপকতায় হজের পরিসর সীমিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়টি জানিয়েছে, বড় সমাবেশ থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকির আশঙ্কা থেকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার।
হজ এজেন্সি এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) চট্টগ্রাম শাখার চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘যেসব ব্যক্তি এবার হজের জন্য এক লাখ ৫২ হাজার টাকা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধিত হয়েছিলেন তারা ইচ্ছা করলে আগামী বছরের জন্য নিবন্ধন করে রাখতে পারবেন। আবার কেউ ইচ্ছা করলে নিবন্ধন বাতিল করে এ টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে তাদেরকে সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করতে হবে। এছাড়াও যারা ৩০ হাজার ৭৫২ টাকা দিয়ে সরকারের কাছে প্রাথমিক পর্যায়ে নিবন্ধন করেছিলেন তারা মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে এ টাকাও ব্যাংক থেকে তুলে নিতে পারবেন।
মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ২০১৯ সালে সারাদেশ থেকে হজের সুযোগ পান এক লাখ ২৭ হাজার। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ছিল ১২ হাজার। ২০২০ সালে বাংলাদেশের কোটা এক লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে প্রায় ১৩ হাজার। সারাদেশে প্রায় ১৪০০ হজ এজেন্সি রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ১০৯টি এজেন্সি হজ নিয়ে কাজ করে থাকে। কিন্তু হজ বাতিলের কারণে এজেন্সিগুলো আর্থিক ক্ষতি শিকার হবে।’

পূর্বকোণ / আর আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট