চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

রোজায় যেভাবে চিকিৎসার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবেন

রায়হান আজাদ

১০ মে, ২০২০ | ৮:০৩ অপরাহ্ণ

বর্তমান যুগে চিকিৎসাশাস্ত্রে প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে। প্রতিদিন নিত্য-নতুন পদ্ধতি ও যন্ত্রপাতি আবিষ্কার হচ্ছে যা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় মানুষের শরীরে প্রবেশ করানো হয়। ফলে রোজাদারের রোজা ভঙ্গ হওয়া না হওয়া প্রসঙ্গটিও নতুনভাবে আলোচনায় আসছে। নিম্নে রমজানে বহুল ব্যবহৃত কতিপয় যন্ত্রপাতি ব্যবহারের পদ্ধতি ও তার শরীয়তী বিধান উপস্থাপন করা হলো।
১. ইনহেলার : ইনহেলার ব্যবহারের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ হবে না। কারণ ইনহেলারের মাধ্যমে কোন জিনিস পাকস্থলী পর্যন্ত পৌঁছা প্রায় অসম্ভব এবং ইনহেলার খাবার বা পানীয় পর্যায়ে পড়ে না।

২. এনডোসকপি : এনডোসকপি একটি চিকিৎসা যন্ত্র যা মুখ গহ্বরের ভিতর দিয়ে পাকস্থলী পর্যন্ত পৌঁছানো হয়, যা দ্বারা ভিতরকার ক্ষত উপড়ে ফেলা অথবা তার চিত্রধারণ করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এর দ্বারা রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে। কারণ, এটি পাকস্থলী পর্যন্ত পৌঁছে।

৩. নাকের ড্রপ : নাকের ড্রপ ব্যবহার করলে রোজা ভেঙে যাবে। কারণ নাসারন্দ্রের সাথে পাকস্থলীর সংযোগ রয়েছে।

৪. এনেসথেসিয়া : এনেসথেসিয়া দু’ধরনের। আংশিক অবশীকরণ এবং সম্পূর্ণ অবশীকরণ। ঘ্রাণের মাধ্যমে, চীনা আংকুপাংচার পদ্ধতিতে বা ইনজেকশান দিয়ে যদি রোজাদারের শরীরের আংশিক ও ক্ষণস্থায়ী অবশ করা হয় তাহলে রোজা ভঙ্গ হবে না। আর যদি সম্পূর্ণ শরীর দীর্ঘক্ষণ সময় ধরে অজ্ঞান করে রাখা হয় তাহলে রোজা ভেঙে যাবে।

৫. কানের ড্রপ : রোজা অবস্থায় কানে যে কোন প্রকার ড্রপ দিলে অধিকাংশ আলিমদের মতে রোজা ভেঙে যাবে।

৬. চোখের ড্রপ : রোজা অবস্থায় চোখের ড্রপ দিলে রোজা ভাঙ্গবে না। কারণ চোখের ড্রপে যে পরিমাণ পানি ও ঔষধ থাকে তা পাকস্থলী পর্যন্ত পৌঁছার আগেই শুকিয়ে যায়।

৭. ইনজেকশন : ইনজেকশন সাধারণত তিন প্রকার : চামড়া, রগ ও পেশীতে ব্যবহৃত ইনজেকশন। চামড়ায় দেয়া ইনজেকশন (ইনসুলিন) এবং পেশীতে দেয়া ইনজেকশানের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ হবে না। কারণ, এগুলো কোন প্রকার খাবার ও পানীয় জাতীয় দ্রব্যের আওতায় পড়ে না। তবে রগে দেয়া ইনজেকশন যাতে খাবার সরবরাহ করা হয় (স্যালাইন) এতে রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে।

৮. সাপোজিটরি : দীর্ঘ ও প্রচ- জ্বর কমানোর জন্য অথবা অর্শ রোগের ব্যথা কমানোর জন্য মলদার দিয়ে ঢুকানোর ট্যাবলেট হচ্ছে সাপোজিটরি। এটি ব্যবহারে অধিকাংশ আলিমের মতে, রোজা ভঙ্গ হবে না। কারণ, এটি খাবার ও পানীয়ের আওতায় পড়ে না।

৯. রক্ত দান : রোজাবস্থায় অপর কাউকে রক্ত দান করলে ইমাম ইবনে তাইমিয়াসহ অধিকাংশ আলিমের মতে, রোজা ভেঙে যাবে।

১০. সাম্প্রতিক ইস্যু করোনা টেস্টে রোজা ভঙ্গ হবে না মর্মে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদ্রাসা ফতোয়া দিয়েছে। তারা বলেছে, করোনা টেস্টে নাক বা কণ্ঠনালীর আদ্রতা নেয়ার সময় এতে কোন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। বরং পরিষ্কার শুষ্ক তুলার মাঝে আদ্রতা তুলে আনা হয় এবং যন্ত্রের মাধ্যমে তা চেক করা হয়। একাজের ফলে রোজা ভঙ্গ হওয়ার কোন কারণ পাওয়া যায় না।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট