চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ব্রাজিল না আর্জেন্টিনা ?

স্পোর্টস ডেস্ক

১ জুলাই, ২০১৯ | ১:০৯ পূর্বাহ্ণ

ব্রাজিল নাকি আর্জেন্টিনা? ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার প্রতিদ্বন্দীতা ফুটবল ইতিহাসের অংশ। প্যারাগুয়েকে টাইব্রেকারে হারিয়ে থার্ড টাইম লাকি ব্রাজিল, অন্যদিকে ভেনেজুয়েলাকে হারিয়ে ব্রাজিলের বিপক্ষে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে আর্জেন্টিনা। ৩ জুলাই কোপার ফাইনালের জন্য মুখোমুখি হবে বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম দুই শক্তি। ১২ বছর পর কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে খেলতে যাচ্ছে দু’দল। ২০০৭ সালে ভেনেজুয়েলার কোপাতে ফাইনালে সবশেষ দেখা হয়েছিল দুইদলের। একপেশে ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ব্রাজিল সেবার জিতেছিল নিজেদের অষ্টম শিরোপা। তখনকার দুই দলের মোট ৪৬ জনের স্কোয়াডের মাত্র দুইজন খেলোয়াড় আছেন এখন। তারা দুইজন এখন দুইদলের অধিনায়ক। বার্সেলোনায় একসঙ্গে ৭ বছর খেলার সুবাদে তারা খুব ভালো বন্ধুও। ব্রাজিলের দানি আলভেজ ও আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি। সেবার আলভেজের বয়স ছিল ২৩। ফাইনালে একাদশে ছিলেন না তিনি। এলানো ইনজুরিতে পড়ার পর ৩০ মিনিটে মাঠে নেমেছিলেন আলভেজ। এরপর গোলও করেছিলেন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফাইনালে। আর সেবারের কোপা থেকেই ১৯ বছর বয়সী মেসি নিয়মিত হয়েছিলেন আর্জেন্টিনা দলে। গ্রুপপর্ব, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনালে দুর্দান্ত খেলেছিলেন, কিন্তু ফাইনালে গিয়ে তাকে হার মানতে হয়েছিল ব্রাজিলের কাছে। এরপর মেসি আরও তিনবার জাতীয় দলের হয়ে ফাইনাল খেলেছেন, কিন্তু ভাগ্যটা বদলাতে পারেননি। আর আলভেজ এরপর ব্রাজিলের হয়ে দুইবার জিতেছেন কনফেডারেনস কাপের শিরোপা।
স্বাগতিক দেশ, তারওপর আর্জেন্টিনার নড়বড়ে অবস্থা- সবমিলিয়ে এই টাইয়ে ব্রাজিলই ফেভারিট। ইতিহাসও তেমনটাই বলছে, ব্রাজিলের মাঠে কোপা আমেরিকাতে কখনই ব্রাজিলকে হারাতে পারেনি আর্জেন্টিনা। ১৯১৯ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত মোট ৬ বার স্বাগতিক হিসেবে ব্রাজিল কোপা আমেরিকায় খেলেছে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। এর মধ্যে আর্জেন্টিনার সেরা সাফল্য ১৯৮৩ সালে একটি গোলশূন্য ড্র। ৬ ম্যাচে আর্জেন্টিনা গোল করতে পেরেছে তিন দফায় মোট তিনটি। স্বাগতিকের হিসাব বাদ দিলে অবশ্য দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে আছে আর্জেন্টিনা। কোপায় ১৫ বার জয়ী আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল ৯ বার। বাকি ৮ বার ম্যাচ হয়েছে ড্র। আর সবমিলিয়ে হিসাব করলে মোট ১১০ বার একে অপরের বিপরীতে খেলেছে দুইদল। ১৯১৪ সালে প্রীতি ম্যাচ দিয়ে শুরু। প্রথম ম্যাচটা আর্জেন্টিনা জিতে নিয়েছিল ৩-০ গোলে। এরপর অনেকদিন আর্জেন্টিনা হেড টু হেডে এগিয়ে থাকলেও, সাম্প্রতিক সময়ে ব্রাজিলই একচেটিয়া আধিপত্য দেখিয়েছে। ১১০ ম্যাচে ব্রাজিলের জয় ৪০ আর আর্জেন্টিনার ৩৮। এবারের সেমিফাইনালের মাহাত্ম্যটা আরও একদিক দিয়ে বাড়তি উন্মাদনা চড়িয়ে দিচ্ছে দুইদলের সমর্থকদের। বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা আর কনফেডারেশনস কাপ মিলিয়ে দুই দলের শিরোপা ১৭টি করে। সেমিফাইনালে জয়ী দল নিজেদের শিরোপা সংখ্যা বাড়িয়ে শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণার সুযোগটাও পেয়ে যাবে এবার। আর একটা ব্যাপার নিশ্চিতভাবেই বদলে যাচ্ছে এবার। ১৯৯৩ সাল থেকে কোপা নতুন ফরম্যাট চালু হওয়ার পর ৫ বার করে সেমিফাইনাল খেলেছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দুইদলই। প্রতিবারই দুইদল উঠেছে ফাইনালে। এবার সেই রেকর্ডে ছেদ পড়বে যে কোন এক দলের। তবে সেমিফাইনালের ভেন্যুা ব্রাজিলের জন্য পয়া নয় মোটেই। ৩ জুলাই, ঘুম থেকে উঠে বা না ঘুমিয়ে কাক ডাকা ভোরে টিভি অন করে রেফারির কিক অফের বাঁশির সঙ্গে আপনার বুকেও দুরুদুরু কাপনটাও শুরু হয়ে যাবে। তার আগে কয়েকদিন ধরে চলবে আলোচনা, তর্ক। ম্যাচশেষেও থামবে না সেসব। আগের রাতে ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ভাগ্যে যাই থাকুক না কেন, আরও একবার উৎসবে মাততে অথবা আরেকটু মন খারাপ হওয়ার ঝুঁকি নিয়ে আপনিও মিশে যাবেন কয়েক’শ ক্রোশ দূরে মিনেইরোতে। একটি ফুটবল ম্যাচে। মেসি-আলভেজদের সঙ্গে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট