চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রস্তুত ব্রেক্সিট চুক্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৭ অক্টোবর, ২০১৯ | ৪:৫৯ অপরাহ্ণ

ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত কয়েক দিন প্রায় বিরতিহীন আলোচনা চালিয়ে পরিবর্তিত ব্রেক্সিট চুক্তির একটি খসড়া সম্পর্কে ঐকমত্যে পৌঁছেছে৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট জঁ-ক্লোদ ইয়ুংকার এই খবর জানিয়েছেন৷

কিন্তু এ যাত্রায় ইইউ আগের তুলনায় সতর্ক হয়ে উঠেছে৷ সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ও ইইউ’র সঙ্গে বিচ্ছেদ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন৷ তা সত্ত্বেও তিন-তিনবার তিনি সংসদে তা অনুমোদন করতে ব্যর্থ হন৷ বর্তমান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ব্রিটেনের সংসদে সর্বশেষ বোঝাপড়ার লক্ষ্যে যথেষ্ট সমর্থন আদায় করতে পারবেন কিনা, তাও এখনো স্পষ্ট নয়৷ বিশেষ করে উত্তর আয়ারল্যান্ডে সরকারি জোটের শরিক দল নতুন চুক্তির বিরোধিতা করছে৷ দেশ হিসেবে ব্রিটেন এই চুক্তি মেনে নিলে তবেই ইইউ আনুষ্ঠানিকভাবে এই সমঝোতা মেনে নিতে প্রস্তুত৷ তবে কিছু সূত্র অনুযায়ী, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কয়েকটি বিষয় নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর হয় নি৷ ইউরোপীয় সরকারগুলির পরিষদের প্রধান ডোনাল্ড টুস্ক আগেই জানিয়েছিলেন যে নীতিগতভাবে চুক্তির মৌলিক ভিত্তি প্রস্তুত হয়ে গেছে৷

এমন প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ব্রাসেলসে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা ব্রেক্সিট চুক্তি স্বাক্ষর করবেন কিনা, তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ ব্রিটেনের সরকার এবং সংসদ চুক্তি অনুমোদন করলে চলতি মাসে আরেকটি জরুরি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে ইইউ নেতারা চূড়ান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে৷ শনিবার ব্রিটিশ সংসদের বিশেষ জরুরি অধিবেশনে নতুন ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে সমর্থনের মাত্রা স্পষ্ট হয়ে যাবে, এমনটাই আশা করা হচ্ছে৷ তবে সব পক্ষ সম্মতি জানালেও ৩১ অক্টোবর ব্রেক্সিট কার্যকর করার জন্য যথেষ্ট সময় আর নেই বলে ইইউ কর্মকর্তারা মনে করছেন৷ সে ক্ষেত্রে শুধু প্রক্রিয়াগত কারণে এই তারিখ কিছুকাল পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে৷ ইউরোপীয় কমিশনের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জঁ ক্লোদ ইয়ুংকার রসিকতা করে বলেন, ‘‘সবাই ইংরেজি বোঝে, কিন্তু কেউ ইংল্যান্ডকে বোঝে না৷”

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বরিস জনসন আগেই সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন৷ ইইউ’র সঙ্গে বিচ্ছেদ চুক্তির আওতায় উত্তর আয়ারল্যান্ড প্রদেশকে যুক্তরাজ্য থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করতে চাইলে তিনি বিরোধী ও বিদ্রোহী পক্ষের প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়বেন৷ তবে কিছু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের মতে, জনসন ইইউ-পন্থি ও কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিদের সাবধান করে দিতে পারেন৷ এই চুক্তি মেনে না নিলে তিনি প্রথম দলকে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের ভয় দেখাতে পারেন৷ দ্বিতীয় দলকে বলতে পারেন, এখনই চুক্তি মেনে না নিলে ব্রেক্সিটের স্বপ্ন পুরোপুরি বানচাল হয়ে যেতে পারে৷ নতুন নির্বাচন অথবা ব্রেক্সিটের প্রশ্নে দ্বিতীয় গণভোট আয়োজিত হলে ভোটাররা ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে রায় দিতে পারেন৷ উল্লেখ্য, লেবার পার্টির নেতা জেরেমি কর্বিন দ্বিতীয় গণভোটের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন৷

ইইউ ও ব্রিটেনের ভিন্ন ভ্যাটের হারের মধ্যে সামঞ্জস্য আনা মধ্যস্থতাকারীদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে৷ বিষয়টির নিষ্পত্তি হলে চূড়ান্ত আইনের খসড়া প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷

পূর্বকোণ/টিএফ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট