একটু ভালভাবে বাঁচার জন্য বাংলাদেশে অবস্থান করা শত শত রোহিঙ্গা শরণার্থী পাচারকারীদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন অর্থ। কিন্তু সমুদ্রপথে প্রায় ২ শতাধিক দিনের মতো সময় দুর্ভোগের শিকার হয়ে অবশেষে এ সপ্তাহে তারা ইন্দোনেশিয়ার উত্তর উপকূলে এসে পৌঁছান। কিন্তু সেখানেও তাদের আশ্রয় হয়েছে শরণার্থী শিবিরে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেতে জানা যায়, এসব শরণার্থীদের প্রহার করা হয়েছে। কাঠের নৌকায় তাদেরকে খাবারের জন্য, পানীয়ের জন্য যুদ্ধ করতে হয়েছে। তারা দেখেছে, কিভাবে মৃত মানুষকে বোট থেকে পানিতে ছুড়ে ফেলা হয়েছে। এসব শরণার্থীর এখন ঠাঁই হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে।
গত মার্চে একটি বিশাল বোটে করে বাংলাদেশ ছাড়ে প্রায় ৮০০ রোহিঙ্গা। এ জন্য প্রতিজন পাচারকারীর হাতে তুলে দিয়েছে ২৪০০ ডলার পর্যন্ত। কিন্তু জুনে ইন্দোনেশিয়া পৌঁছেছেন প্রায় ১০০ রোহিঙ্গা।
জাকার্তা ভিত্তিক ইন্সটিটিউট ফর পলিসি এনালাইসিস অব কনফ্লিক্ট (আইপিএসি) এক রিপোর্টে বলেছে, পাচারকারীরা ১২০০ ডলার পর্যন্ত দাবি করেছে শরর্থীদের কাছে। তাদের এই দুর্দশা সত্ত্বেও তাদের কাউকে কাউকে তুলনামুলক সুস্থ মনে হয়েছে। এর অর্থ পাচারকারীরা তাদেরকে বাঁচিয়ে রেখেছে তাদের স্বার্থে।
আইপিএসি থেকে জানা যায়, বোটে যে নারীরা থাকেন তাদের অনেকেই স্বপ্ন দেখেন মালশিয়ায় পৌঁছে তার রোমান্টিক পার্টনারকে খুঁজে পাবেন। এর মধ্যে অনেকেই ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন অথবা অন্য কোনভাবে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত পুরুষদের সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ। তারাই এসব নারীর সফরের অর্থ সরবরাহ করেছে।
বেঁচে যাওয়া শরণার্থীরা জানান, তাদেরকে সামান্য ভাত ও এক গ্লাস করে পানি দেয়া হয়েছে প্রতিদিন। এক্ষেত্রে একটি কৌশল নেয় পাচারকারীরা। মাছ ধরার ছোট ছোট বোট আসা-যাওয়া করতো। তারা খাদ্য ও পানি দিয়ে যেতো।
এদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক এজেন্সি ইউএনএইচসিআরের ইন্দোনেশিয়া প্রতিনিধি অ্যান মায়মান জানান, এ বছরই সমুদ্রে মারা গেছেন প্রায় ২০০ রোহিঙ্গা। তিনি এএফপিকে জানান, এটা এক ভয়াবহ সফর। এটা অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত। যারা গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন সম্ভবত তাদের পরিবার এ জন্য মূল্য দিয়েছেন।
পূর্বকোণ/এএ