চট্টগ্রাম বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

অফডকে কমছে আমদানি পণ্য

সারোয়ার আহমদ

১৭ অক্টোবর, ২০২০ | ১২:১৪ অপরাহ্ণ

করোনার লকডাউন উঠে যাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে দেশের অর্থনীতি। তবে তার ছোঁয়া পায়নি বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোটস এসোসিয়েশন (বিকডা) পরিচালিত ১৯টি অফডকে। কারণ গত তিন মাসে ধরেই ক্রমান্বয়ে আমদানি পণ্যের কন্টেইনার সংখ্যা কমছে অফডকগুলোতে। তাই সক্ষমতা থাকলেও পুরোদমে কাজে লাগছেনা এই অফডকগুলো। এতে তারা ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছেন।
বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোটস এসোসিয়েশন সূত্রে জানা যায়, গত জুলাই মাসে অফডকগুলো ২৩ হাজার ৩২২ টিইইউস আমদানি কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং করে। পরে গত আগস্ট মাসে হ্যান্ডেলিং করে ২১ হাজার ৩৮৫ টিইইউস কন্টেইনার এবং সেপ্টেম্বর মাসে হ্যান্ডেলিং করে ২০ হাজার ৮২৫ টিইইউস আমদানি কন্টেইনার। অর্থাৎ প্রতি মাসেই এক হাজারের বেশি টিইইউস পরিমাণ আমদানি কন্টেইনার কমেছে। এছাড়া চলতি অক্টোবরের গত ১৫ দিনে অফডকগুলো আমদানি কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং করেছে ১১ হাজার ২০৮ টিইইউস। যা থেকে ধারণা করা যায় অক্টোবর মাসেও বাড়ছে না অফডকে আমদানি পণ্যের কন্টেইনার।
এদিকে সক্ষমতা থাকলেও পুরোপুরি কাজে লাগানো না যাওয়াতেও ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে অফডকগুলো। এর কারণ হিসেবে দেখা যায়, করোনার মহামারীতে গত এপ্রিল-মে মাসের দিকে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আমদানি পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বন্দরের অভ্যন্তরে ভয়াবহ কন্টেইনার জট বাঁধে। প্রায় অচল অবস্থা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরকে মুক্তি দিতে তখন অফডকগুলোর সহায়তা নিতে হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সিদ্ধান্ত দেয় ৩৮ ধরণের পণ্য ছাড়াও সব ধরণের পণ্য বিকডার অফডকগুলো থেকে খালাস করা যাবে। এতেই কন্টেইনার জট থেকে মুক্তি পায় চট্টগ্রাম বন্দর। সেই সুবাদে গত জুন মাসে ৩৮ ধরণের পণ্যসহ মোট ৩৬ হাজার ৭০৮ টিইইউস আমদানি কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং করে অফডকগুলো। এতো পরিমাণ কন্টেইনার হ্যান্ডেলিংয়ে সক্ষম অফডকগুলো এখন অর্ধেকের একটু বেশি কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং করছে। এতে ক্ষতির মুখেও পড়ছে অফডকগুলো।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিকডা সচিব রুহুল আমিন সিকদার পূর্বকোণকে বলেন, করোনার পরে দেশীয় ব্যবসায়ীরা কম পরিমাণে আমদানি এলসি খুলছে। যার কারণে আমদানিও কমেছে। এর প্রভাব পড়েছে বেসরকারি অফডকগুলোতে। ক্ষতিও হচ্ছে অনেক। তিনি আরো বলেন, অফডকগুলো করোনাকালে দেখিয়ে দিয়েছে ৩৮ ধরণের পণ্যের বাইরেও সব ধরণের পণ্য অফডক থেকে খালাস সম্ভব। কারণ জুন মাসে মোট ৩৬ হাজার ৭০৮ টিইইউস আমদানি কন্টেইনার হ্যান্ডেলিং করলেও কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তাই নীতি নির্ধারকদের উচিত অফডক থেকে ৩৮ ধরণের পণ্য ছাড়াও আরো পণ্য খালাসের অনুমোদন দেওয়া। এতে বন্দরের উপরেও চাপ কমবে। বাণিজ্যও তরান্বিত হবে।
জানা যায়, বিকডা পরিচালিত ১৯টি অফডক থেকে যে সব পণ্য বেশি খালাস হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- র’কটন, এনিম্যাল ফিড, বিটুমিন, ওয়েস্ট পেপার, বিভিন্ন ধরণের সস ও মসুর ডাল। এসব জাতীয় পণ্য এখন আমদানি কমেছে।
স্বল্প আমদানি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম পূর্বকোণকে বলেন, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যে মন্দা অবস্থা চলছে। বিদেশে পণ্যের দাম বেড়েছে। যার কারণে দেশীয় আমদানিকারকেরা আমদানি কম করছে। করোনা পরিস্থিতি স্বভাবিক হলে এবং বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম কমলে দেশীয় আমদানিকারকেরাও আমদানি বাড়াবে বলে আশা করা যায়।
এদিকে আমদানি কমে যাওয়ায় বহির্নোঙ্গরেও জাহজে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করে থাকতে হচ্ছে না। জাহাজ আসামাত্রই বার্থিং পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দরে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট