চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

করোনার প্রভাব : ফুল ব্যবসায় কোটি টাকার ক্ষতি

নিজস্ব প্রতিবেদক

২ এপ্রিল, ২০২০ | ৭:৪৪ অপরাহ্ণ

প্রতিটি দোকানে সার্টার লাগানো ও তালা ঝুলছে। নেই সাজানো ফুলের সারি কিংবা বুকেট। আগের মত হেঁটে যাওয়ার সময় বাতাসে ভেসে আসছে না চেনা সেই ফুলের মিষ্টি গন্ধ। নেই মানুষের কোলাহল। অথচ নগরীর অন্যান্য ব্যস্ততম এলাকাগুলোর মধ্যে এটিও একটি। প্রতিদিন এখানে ফুল বিকিকিনিতে সরগরম থাকতো ভোর থেকে রাত অবধি। কিন্তু করোনার প্রার্দুভাব ঠেকাতে সরকারের বন্ধ ঘোষণায় চেরাগী পাহাড় মোড়ের বর্তমান দৃশ্য এটি। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষতির মুখে পড়েছে ছোট থেকে বড় সকল ব্যবসায়ী। অন্যান্য ব্যবসার মত বিশ্বমহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে নগরীর ফুল ব্যবসার ওপরও।

প্রায় ১ কোটি টাকা লোকসান গুনছেন নগরীর মোমিন রোড ও চেরাগী পাহাড় মোড় এলাকার ফুল ব্যবসায়ীরা। করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশেও সকল প্রকার জনসমাগম হয় এমন সামাজিক অনুষ্ঠান, বিয়ে ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর অনুষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেয় সরকার। পরিস্থিতির এমন পরিবর্তনের কারণে আগে থেকে বুকিং করা বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান ও বিয়ের অর্ডার বাতিল হয়ে যায়। এছাড়া সামনেই আসছে পহেলা বৈশাখ। এ নিয়েও ফুল ব্যবসায়ীদের নেই কোনো প্রস্তুতি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এসময়ও ব্যবসার সুযোগ হবে না বলে হতাশায় ভুগছেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে আরো লোকসান হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

মোমিন রোড ও চেরাগী পাহাড় মোড় এলাকায় ছোট-বড় মিলে প্রায় ১৫০টি ফুলের দোকান রয়েছে। এছাড়া নগরীর চাকবাজার, বহদ্দারহাট, ২ নম্বর গেট, দামপাড়া, নিউমার্কেট, আগ্রবাদসহ বিভিন্ন স্থান মিলে রয়েছে প্রায় ১শ’ এর বেশি দোকান। প্রতিটি দোকানই বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে শুধু ফুল ব্যবসায়ীরা নয়, লোকসান হচ্ছে ফুল চাষিদেরও।

চট্টগ্রাম ফুল মালিক সমিতির সভাপতি মো. কুতুব উদ্দিন বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাব বাংলাদেশে দেখা যাওয়ার সাথে সাথেই আমার প্রতিষ্ঠানে প্রায় তিন লাখ টাকার নয়টি বিয়ের অর্ডার বাতিল হয়ে যায়। অনেক বিপদে আছি। আমাদের কর্মচারীদের বসিয়ে বসিয়ে টাকা দিতে হচ্ছে। আর কয়েকদিন পরেই আসছে পহেলা বৈশাখ। এ অনুষ্ঠানগুলোতে এখানে প্রতি বছর প্রায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার বেশি ফুল বিক্রি হয়। এবারে এটিও হবে না। এ লোকসান কেটে উঠতে খুব কষ্ট হবে। প্রতি বছর চায়না, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ফুল আসতো। কিন্তু এবার সেটিও বন্ধ রয়েছে। তবে ৪০ ভাগ ফুলের চাহিদা দেশের চাষী মেটায়। ফুল ডেলিভারি করতে না পারায় চাষীরা বলছে বাগানেই নষ্ট হচ্ছে ফুল।

অপরাজিতা ফুলের দোকানি মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, বেশিরভাগ ফুল বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্টান ও সাংস্কৃতিক সংগঠন অর্ডার করতো। এখন এরকম কোনো অর্ডার আমাদের কাছে নেই। প্রতিদিন আমাদের একটি দোকানে কমপক্ষে তিন থেকে চারটি অর্ডার থাকতো। কি করবো বুঝছি না। কিভাবে কর্মচারীদের বেতন দিবো এসব নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। সরকার যেহেতু কিছু ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে ক্ষুদ্র পরিসরে খোলার অনুমতি দিয়েছে আমাদেরও যদি খুলতে দেয় আমরা কোনো মতে খেয়ে বাঁচবো।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট