চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

বিজিএমইএ সভাপতির বক্তব্য ‘দূরভিসন্ধিমূলক’ : জাসদ

পোশাক খাতে করোনার প্রভাব

২৬৪ কারখানার প্রায় ৬১ কোটি ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ মার্চ, ২০২০ | ৮:৫১ অপরাহ্ণ

নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো একের পর এক লকডাউন ঘোষণা করছে। বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করছে পোশাকের ব্র্যান্ডগুলো। এ পরিস্থিতিতে ভোক্তা চাহিদায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বাজার চাহিদার এ পরিস্থিতিতে নতুন ক্রয়াদেশ দিচ্ছে না ক্রেতারা। এরই মধ্যে দেয়া ক্রয়াদেশগুলোর পরিমাণ কমাচ্ছে। চলমান ক্রয়াদেশগুলোর উৎপাদন থেকে বিরত থাকতে বলছে ক্রেতারা। আবার কর্মক্ষেত্রে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঝুঁকিতেও আছেন শ্রমিকরা।

বাংলাদেশের পোশাক শিল্পসংশ্লিষ্ট সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) তথ্যমতে, ২৬৪ কারখানার প্রায় ৬০ কোটি ৭৮ লাখ ৯৪ হাজার ৯৮ ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে কারখানা বন্ধে পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিবেচনায় নেয়া হবে বলে জানিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

করোনার প্রভাবে প্রথমে কাঁচামাল সরবরাহ সংকটে পড়তে হয়েছিল পোশাক খাতকে। চীননির্ভর কাঁচামালগুলো আসতে পারছিল না। কারণ করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ধীরগতিতে হলেও কাঁচামাল সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও এখন চাহিদা সংকটে পড়েছে দেশের পোশাক খাত। পশ্চিমা দেশগুলোর ক্রেতারা একের পর এক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় ভোক্তা চাহিদা কমে বিক্রি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিতাদেশ দিচ্ছে ক্রেতারা। বিরূপ পরিস্থিতিতে ক্রেতাদের ক্রয়াদেশ বাতিলের তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে বিজিএমইএ।

গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, বিজিএমইএর সদস্য ২৬৪ কারখানার প্রায় ৬০ কোটি ৭৮ লাখ ৯৪ হাজার ৯৮ ডলারের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ক্রয়াদেশ বাতিল-স্থগিত করা ক্রেতাদের মধ্যে প্রাইমার্কের মতো বড় ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানও আছে। ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত না করতে ৪১ ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানকে অনুরোধ জানিয়ে ই-মেইল দিয়েছে বিজিএমইএ।

শিল্পমালিকরা বলছেন, বর্তমানে যে কাজ আছে তা নিয়ে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ কারখানা সচল রাখা যাবে। এছাড়া একই ছাদের নিচে অনেক শ্রমিক কাজ করায় রয়েছে সংক্রমণের ঝুঁকিও। এ পরিস্থিতিতে কারখানা চালু থাকবে নাকি বন্ধ করে দেয়া হবে, তা নিয়েও আলোচনা চলছে। সর্বশেষ গতকাল শ্রম ভবনে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ত্রিপক্ষীয় সভা করেন শিল্পসংশ্লিষ্টরা। তবে সভায় কারখানা বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

গতকাল সভার বিষয়ে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কলকারখানা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, পরবর্তী সময়ে পরিবর্তিত পরিস্থিতি বিবেচনায় নেয়া হবে।

আলোচনা সভায় শ্রমিকদের করোনাভাইরাস সম্পর্কে আরো সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেয়া হয়। সরকার মালিক-শ্রমিক সবাইকে বৈশ্বিক এই মহামারী মোকাবেলায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়। বিশেষ করে কারখানায় শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরবরাহ করার জন্য মালিকপক্ষকে অনুরোধ করা হয়। সভায় মালিকপক্ষ থেকে জানানো হয়, বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় ক্রেতারা এরই মধ্যে অনেক ক্রয়াদেশ বাতিল করেছে। এতে উৎপাদন ও রফতানিতে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের আহ্বানের দাবি জানানো হয়। -তথ্যসূত্র : বণিক বার্তা

 

পূর্বকোণ-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট