চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

একাদশে ভর্তি : ডিজিটাল কলেজের দিকে ঝুঁকছে শিক্ষার্থীরা

এম. মোরশেদ

৩১ আগস্ট, ২০২০ | ৬:৪৯ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশের পর অনেক শিক্ষার্থীর মুখে হাসি ফুটলেও একাংশ ভুগছে হতাশায়। কেননা প্রতিবছরের মত এবারও নগরীর খ্যাতিমান সরকারী কলেজগুলোতে জিপিএ-৫ প্রাপ্তরাই ঠাঁই করে নিয়েছে। ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৯০০ টি আবেদন যাচাই বাছাই করে প্রকাশিত এই ফলাফলে হাজারো শিক্ষার্থীর স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে! কেননা এ বছর সব বিভাগ মিলে মোট জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী মোট ৯,০০৮ জন। অপরদিকে ৫,০৩৪ জন শিক্ষার্থী কোন কলেজের জন্যই মনোনীত হয়নি। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীও রয়েছে ৪৪২ জন। জিপিএ-৫ এর নীচে স্কোর যাদের তারা এখন চরম হতাশায় ভুগছে।
কাঙ্ক্ষিত কলেজে সুযোগ না পেয়ে হতাশায় মুষড়ে পড়া শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর জাহিদুল হক বলেন, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির মেধাতালিকা প্রস্তুত করেছে কেন্দ্রীয় আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় সাব কমিটি। আর প্রথম আবেদনে কোন কলেজেই মনোনীত না হওয়ার কারণ হলো আবেদন পূরণের সময় কলেজ পছন্দক্রম নির্বাচনে এসএসসি তে শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত গ্রেড পয়েন্ট বিবেচনায় না রাখা। অর্থাৎ গ্রেড পয়েন্টের সাথে কলেজ পছন্দক্রম নির্বাচনের সামঞ্জস্য থাকতে হবে। আবার অনেকে আত্মবিশ্বাসী হয়ে পছন্দের তালিকায় ১০টির পরিবর্তে শুধু ৫টি বা তারও কম কলেজের নাম দিয়েছে। তাই ২য় আবেদনে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আর এটাও জানিয়ে দিতে চাই যে, কোন শিক্ষার্থীই ভর্তি না হয়ে থাকবে না । কারণ এবার এসএসসি পাশ করেছে ১ লাখ ২১ হাজার ৮৮৮ জন, আর সবমিলিয়ে বোর্ডের অধীনে কলেজগুলোতে আসন সংখ্যা প্রায় দেড়লাখ। অন্যদিকে মেধাতালিকায় মনোনীত কলেজে ভর্তি নিয়ে দ্বিধা রয়েছে অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের। এমন একজন অভিভাবক সালেক সিদ্দিকী বলেন, সরকারী কলেজে পড়ার সুযোগ না পেলেও উন্নততর শিক্ষাপরিবেশ রয়েছে এমন বেসরকারী কলেজই এখন ভরসা, কারণ এখানে জবাবদিহিতা রয়েছে। বিশেষ করে ডিজিটাল প্রযুক্তিসমৃদ্ধ মাল্টিমিডিয়া ক্লাসে পাঠদান করানো হয় এমন কলেজে সন্তানকে ভর্তি করাবো। কারণ করোনা সংকটকালে স্থবির শিক্ষাঙ্গণে অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষাসেবা সচল রেখেছে এই প্রাইভেট কলেজগুলো।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবোর্ড অনুমোদিত বাংলা ভার্সন ও ইংরেজী ভার্সনে (ন্যাশনাল কারিকুলাম) কলেজ অব সায়েন্স, বিজিনেস এন্ড হিউমিনিটিজ (সিএসবিএইচ) এর প্রতিষ্ঠাতা মেহরাব মাসুক এমবিএ (আইবিএ) বলেন, বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণে তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল পাঠদান ব্যবস্থার কোন বিকল্প নেই। করোনা মহামারীর এই দুর্দিনে এই বাস্তবতা প্রচন্ডরুপে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ ক্ষেত্রে সরকারী উদ্যোগের তুলনায় বেসরকারী পর্যায় অনেকটাই এগিয়ে আছে। নগরীতে কয়েকটি প্রাইভেট কলেজ রয়েছে যেখানে বিগত কয়েক বছর ধরে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীরা শিক্ষালাভ করছে। তাই মেধাতালিকায় আসা কলেজ কারো পছন্দ না হলে শিক্ষার্থী ঐ কলেজে ভর্তি নিশ্চায়ন করবে না। ফলে যারা ১ম তালিকায় মনোনীত হয়নি তারা ৩১ আগষ্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বার রাত ৮ টা পর্যন্ত পুনরায় আবেদন করতে পারবে এবং পছন্দক্রমে যে কলেজের নাম প্রথমদিকে রাখবে, সে কলেজেই ভর্তি হতে পারবে। এই আবেদনে শিক্ষার্থী চাইলে পূর্বের পছন্দক্রম পরিবর্তন, নুতন কলেজ অন্তর্ভূক্তকরণ বা কোন কলেজ বাদ দিতে পারবে।
এক্ষেত্রে চট্টগ্রামের সচেতন অভিভাবকমহলের আস্থা অর্জনকারী কলেজ অব সায়েন্স, বিজিনেস এন্ড হিউমিনিটিজ হতে পারে অন্যতম পছন্দ। নিয়মিত ক্লাস গ্রহণ, মেধাবী শিক্ষকগণের তৈরী হ্যান্ডনোট, ছাত্রছাত্রীদের নিবিড় পরিচর্যা, দ্রুত সিলেবাস সমাপন ইত্যাদি ব্যতিক্রমী পাঠপদ্ধতির মাধ্যমে এই কলেজ সচেতন অভিভাবক মহলের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছাত্রছাত্রী জিপিএ-৫ সহ কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল করছে।
ডিজিটাল এই কলেজে ওভারহেড প্রজেক্টর ও মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে লেকচারশীট ভেসে ওঠে পর্দায়। একই সময়ে হোয়াইট বোর্ডে শিক্ষক তা বুঝিয়ে দেন ডায়াগ্রাম এর মাধ্যমে। ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয় সহজে অনুধাবন করার জন্য সকল শিক্ষার্থীকে তাদের ট্যাব-এ পাঠ্য সংশ্লিষ্ট অ্যানিমেশন, ভিডিও ক্লিপস, প্রেজেন্টেশন স্লাইড ইত্যাদি দেয়া হয় যাতে ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যতবার খুশি ক্লাস লেকচারটি পুনরায় দেখতে পারে। ফলে শিক্ষার্থীদের কাছে পাঠ হয়ে ওঠে সহজবোধ্য ।
অন্যদিকে করোনাকালে শিক্ষাসেবায় সিএসবিএইচ অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। করোনাকালের সূচনালগ্ন থেকে আমরা অনলাইনে উচ্চমাধ্যমিক শাখার নিয়মিত শ্রেণি পাঠদান, শ্রেণি পরীক্ষা ও মূল্যায়ন কার্যক্রম অনলাইন প্রযুক্তির মাধ্যমে চালিয়ে আসছি। সিএসবিএইচ-এ বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও মানবিক সকল শাখার শিক্ষার্থীরা হোয়াটÕস এ্যাপে ও জুম এ্যাপে নির্দিষ্ট রুটিন অনুসারে ক্লাস করছে গত ১৮ মার্চ থেকে। ফলে যথাসময়ে প্রথম বর্ষের সিলেবাস শেষ হয়েছে এবং ২০ এপ্রিল তারিখে আমরা প্রথম বর্ষ সমাপণি পরীক্ষাও নিয়েছি। ১৪ মে প্রকাশিত ফলাফলে এই পরীক্ষায় ২৯১ জন অংশগ্রহণ করে ২৫৪ জন ২য় বর্ষে উত্তীর্ণ হয়। ঈদের বন্ধের পরে পুনরায় ২য় বর্ষের পাঠদান শুরু হয়েছে। আশা করছি সঠিক সময়েই আমরা সিলেবাস শেষ করে নির্বাচনী (টেস্ট) পরীক্ষা নিতে পারব।
কলেজ অধ্যক্ষ বলেন, চলমান একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রমেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সিএসবিএইচ-এর ভর্তি কার্যক্রম হবে সম্পূর্ণ অনলাইনে। ক্যাম্পাসে না এসে কলেজ ওয়েব সাইটে লগইন করে এডমিশান ফরমে ক্লিক করলে যে ফরমটি আসবে তা পূরণ করলে এবং নির্দিষ্ট বিকাশ নম্বরে ভর্তি ফির টাকা জমা দিলেই ভর্তি সম্পন্ন হবে। তাই করোনা বিভীষিকায় সন্তানের শিক্ষাজীবন সচল ও কার্যকর রাখতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীগণ ২য় আবেদনে ডিজিটাল কলেজগুলোকে প্রাধান্য দিবেন বলে আশা করি। ২২, পাঁচলাইশ (চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সন্নিকটে) চট্টগ্রাম, এই ঠিকানায় ০১৮৮১-৫৬৪৫০৫ ফোন নম্বরে যোগাযোগ এবং www.csbh.edu.bd এই সাইটে লগ ইন করে আরও বিস্তারিত জানা যাবে।

পূর্বকোণ / আরআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট