চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

তিন তরুণের ভিন্নধর্মী অনলাইন ক্লাস

ইফতেখারুল ইসলাম

৯ জুলাই, ২০২০ | ৪:৪৩ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) কম্পিউটার ইনস্টিটিউটের খণ্ডকালীন  তিন প্রশিক্ষক করোনা মহামারীতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা অনলাইন ক্লাসের জন্য তৈরি করেছেন একটি ভিন্নধর্মী ও ব্যতিক্রমী ওয়েবসাইটভিত্তিক ক্লাসরুম। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি স্কুল, কলেজ ও ইনস্টিটিউটে পরীক্ষামূলক চালু করে সফলতা পেয়েছেন। উপকৃত হয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক। প্রশিক্ষক নূর উদ্দিন, আশরাফ রেজা ও হায়দার আলী ইনস্টিটিউটের পরিচালক আনিছ আহমদের দিকনির্দেশনায় ওয়েবসাইটটি নির্মাণ করেন। তারা জানান ওয়েবসাইটে ক্লাশ নেয়ার জন্য একজন শিক্ষককে দেয়া হবে পৃথক একটি প্যানেল। শিক্ষকরা তাদের তৈরিকৃত টিউটোরিয়ালগুলো (ভিডিও, ওয়ার্ড ফাইল, পিডিএফ, পাওয়ার পয়েন্ট ফাইল) প্রতিষ্ঠানের সাইটে দিয়ে দিবেন। শিক্ষার্থীরা বাসায় বসে যেকোনো সময় খুব সহজেই দেখতে এবং পড়তে পারবে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ যেকোনো নোটিশ মোবাইল বার্তার মাধ্যমে সকল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর নিকট খুব সহজে পাঠাতে পারবে।

এর আগে এ তিন তরুণ চসিক পরিচালিত ৭১টি স্কুল-কলেজের ফলাফল ও ভর্তি কার্যক্রম অনলাইনে প্রকাশের সফটওয়্যার উদ্ভাবন করেন। করোনা বিপর্যয়ের এ সময়ে আগ্রহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে ওয়েবসাইটটি। যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবেদনের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে নিজস্ব ওয়েবসাইট ও ক্লাশ কার্যক্রম পরিচালনায় অনলাইন প্যানেল পেতে পারেন। অনলাইন ক্লাশ রুমের সুযোগ পেতে বফঁড়িৎষফবৎঢ়.পড়স ঠিকানায় গিয়ে আবেদন করতে হবে।
চসিক কম্পিউটার ইনস্টিটিউটের পরিচালক আনিছ আহমদ বলেন, ‘করোনা মহামারীকে কেন্দ্র করে আগামীর বিশ্বে অনলাইন নির্ভরতা বেড়ে যাচ্ছে। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অনলাইন প্লাটফরম তৈরি এখন সময়ের দাবি। ইতোমধ্যেই অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চালু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে করোনার দুর্যোগকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক অনলাইন ক্লাশ রুমের মতো ভিন্নধর্মী চিন্তাকে সামনে নিয়ে তিন তরুণ তৈরি করেছেন ওয়েবসাইটটি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবেদনের মাধ্যমে পৃথক ওয়েবসাইট দেয়া, প্রতিষ্ঠানের জন্য নোটিশ সেকশন, প্রাতিষ্ঠানিক তথ্য সংযোগসহ ব্যতিক্রমধর্মী কিছু বৈশিষ্ট্য আছে এটির।

তরুণ উদ্ভাবক আশরাফ রেজা বলেন, মহামারীর কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় চারমাস ধরে বন্ধ। মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এরই মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফেসবুকের মাধ্যমে ক্লাশ চালু করেছে। তাতে প্রতিষ্ঠানের স্বকীয়তা ক্ষুণ্ন হওয়ার শঙ্কা আছে। কয়েকদিন আগের টিউটোরিয়ালগুলোও খুঁজে নিতে শিক্ষার্থীদের বেগ পেতে হচ্ছে। আছে ইন্টারনেটের গতির তারতম্যও। এ কারণে সিংহভাগ শিক্ষার্থী অনলাইন ভিডিও ক্লাশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এসব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এটি তৈরি করেছি। ইতোমধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠান পরীক্ষামূলক চালিয়ে সফল হয়েছে।

নূর উদ্দিন বলেন, প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনেই প্রতি শিক্ষার্থীর জন্য পৃথক প্যানেল, অনলাইনে ফি গ্রহণ, স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরীক্ষার ফলাফল প্রদানসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে পরিচালনা করার পুরো পদ্ধতি প্রদান করা হবে। দেশের সকল স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, ইনস্টিটিউটের উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে ওয়েবসাইটভিত্তিক ক্লাসরুম।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট