চট্টগ্রাম রবিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ:

এবার নতুনরূপে কালুরঘাট সেতু, যান চলাচল শুরু

পূজন সেন, বোয়ালখালী

২৭ অক্টোবর, ২০২৪ | ১১:৫১ পূর্বাহ্ণ

সংস্কার কাজের জন্য কর্ণফুলী নদীর উপর নির্মিত কালুরঘাট সেতুতে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিলো যান চলাচল। দীর্ঘ ১৪ মাস ধরে কয়েক ধাপে চলে সেতুর সংস্কার কাজ। সংস্কার কাজ শেষে রবিবার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকে সেতু দিয়ে শুরু হয়েছে যান চলাচল। তবে বড় বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধে ৮ ফুট উচ্চতায় স্থায়ী প্রতিবন্ধক নির্মাণ করে দিয়েছে রেলওয়ে।

 

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৯৩ বছরের পুরোনো এ সেতুকে মজবুত করে ট্রেন ও যান চলাচলের জন্য উপযোগী করতে লেগে যায় এক বছরেরও বেশি সময়। এসময় নদী পারাপারের জন্য ব্যবহার করতে হয় ফেরি। ফেরি পারাপারে পোহাতে হয় ভোগান্তি-দুর্ভোগ। ঘটে প্রাণহানিসহ একাধিক দুর্ঘটনা। কালুরঘাট সেতু একমুখী হওয়ায় এক প্রান্তের গাড়ি পার হওয়ার পর অপর প্রান্তের গাড়ি পার হওয়ার সুযোগ পায়। এছাড়া গাড়ির সাথে পাল্লা দিয়ে পায়ে হেঁটে পার হতেন পথাচারীরা। ফলে দুর্ঘটনা ছিলো নিত্য দিনের বিষয়।

 

তবে এবার সেতু সংস্কার করে একপাশে যুক্ত করা হয়েছে ওয়াকওয়ে। যা গত কোরবানির ঈদের সময় পথচারীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। সেতু সংস্কার কাজের তিনমাসের মাথায় শুরু হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন চলাচল। সেতুর সংস্কার কাজ বিলম্বিত হওয়ায় ও ফেরি পারাপারে দুর্ভোগ এড়াতে যান চলাচলের জন্য দ্রুত সেতু খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন সেতু ব্যবহারকারীরা। অবশেষে সেই প্রতীক্ষার অবসান হলো যান চলাচল শুরুর মধ্য দিয়ে। এ সেতু দিয়ে যানচলাচল শুরু হওয়ায় নগর যাতায়াতের দুর্ভোগ অনেকাংশে কমে যাবে বলে জানিয়েছেন গাড়ি চালক ও যাত্রীরা।

 

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশলীরা জানান, বুয়েট বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের পরামর্শে ও রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের তত্ত্বাবধানে গত বছরের ১ আগস্ট থেকে সংস্কার কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। সংস্কার কাজ শুরুর তিন মাসের মধ্যেই সেতুটি ট্রেন চলাচলে মজবুত ও উপযোগী করে তোলা হয়। এরপর ২০২৩ সালের ১২ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। প্রায় ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুর সংস্কারকাজ শেষ হয়েছে। সেতুতে নতুন করে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুর পাটাতনের ওপর বিশেষ প্রযুক্তির কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন আর সেখানে পানি জমবে না। সেতু নির্মাণের ৯৩ বছর পর রেল ও যানবাহন চলাচলের পাশাপাশি এখন পথচারীরা পায়ে হেঁটে পারাপার হতে পারবেন। রাতের জন্য সেতুতে রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা।

 

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেতু প্রকৌশলী জিসান দত্ত বলেন, কয়েকটি ধাপে সেতুটির সংস্কার কাজ করা হয়েছে। সর্বশেষ যান চলাচলের জন্য উপযোগী করে সেতু খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বড় বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধে সেতুর দুই প্রান্তে ৮ ফুট উচ্চতায় স্থায়ী প্রতিবন্ধকতা দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর ১৯৩১ সালে প্রায় ৭০০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্টিলের কাঠামোর কালুরঘাট রেলসেতুটি নির্মিত হয়েছিলো।

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট