চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

দীঘিনালায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ, দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ল ৬০ দোকান

অনলাইন ডেস্ক

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১১:৩৪ অপরাহ্ণ

খাগড়াছড়িতে মো. মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময়ে অগ্নিসংযোগে পুড়ে গেছে ৬০টি দোকান। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মামুনকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন দীঘিনালা সরকারি কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সমাবেশের একপর্যায়ে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের ওপর কয়েক রাউন্ড গুলিও ছুড়েছে তারা। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী ও স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে অবস্থান নিলে উপজেলার লারমা স্কয়ারসংলগ্ন পাহাড়ি ও বাঙালিদের মিশ্রিত দোকান ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন লাগিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিকাল ৫টার দিকে ৩০০ থেকে ৪০০ স্থানীয় বাসিন্দা জামতলি ও বোয়ালখালী বাজারের দিক থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। তারা লারমা স্কয়ারের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় কয়েকজন ব্যক্তি বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে অন্তত পাঁচ জন আহত হন। সংঘর্ষের একপর্যায়ে লারমা স্কয়ার ও দীঘিনালা কলেজের পাশের দোকানপাট জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সেইসঙ্গে দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুনুর রশিদ বলেন, ‌‘বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। এ ঘটনায় পাঁচ জন আহত হয়েছেন। আগুনে ৬০টি দোকান পুড়ে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।’

এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, ‘পাহাড়িদের সঙ্গে বাঙালিদের উসকে দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল একটি পক্ষ। সেখান থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এ সুযোগে দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।’

জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। ঘটনার পর পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। কালকের ঘটনা নিয়ে আজ যাতে অপ্রীতিকর কিছু না ঘটে, সেজন্য এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা সভাও করেছিলাম আমরা। এর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে গেলো। আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি, এ নিয়ে কেউ উসকানি দেবেন না। পরিস্থিতিটা স্বাভাবিক থাকতে দিন।’

এদিকে, দোকানপাটে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইউপিডিএফের খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘বিকাল থেকে পাহাড়িদের ওপর হামলা চালালেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে হামলাকারীরা নির্বিঘ্নে ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে অগ্নিসংযোগ করেছে। ফলে কত সংখ্যক ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে তার বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।’ বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে হামলা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। সূত্র : বাংলাট্রিবিউন

পূর্বকোণ/আরআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট