চট্টগ্রামের রাউজানে খালে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ আবদুর রহিম (৩৭) নামে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ৫ ঘণ্টা চেষ্টায় উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। পরে স্থানীয় মৎস্যজীবীরা সন্ধ্যায় ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে।
আজ বুধবার (৩১ মে) ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ১৪ নম্বর বাগোয়ান ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের গশ্চি এলাকায়। নিহত আবদুর রহিম ওই এলাকার জাফর চেয়ারম্যানের বাড়ির মৃত আবু তাহেরের ছেলে।
নিহতের ছোট ভাই মো. নাদির উদ্দিন বলেন, বড় ভাইয়ের ১০২ ডিগ্রি জ্বর ছিল। সকালে তাকে ওষুধ খাওয়াই। দুপুরে দোকান থেকে এসে তাকে গোসল করাবো বলেছিলাম। এর আগে তিনি বেলা ১১টায় বাড়ির পাশে অধ খালে (অধর খাল) প্রবল জোয়ারের সময় গোসল করতে ঝাঁপ দেন। একপর্যায়ে প্রবল জোয়ারে তাকে ডুবে যেতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মন্নান।
তিনি বলেন, স্থানীয়দের বিষয়টি বলতে বলতে ভাই রহিম খালে ডুবে যায়। এরপর স্থানীয়রা উদ্ধারের চেষ্টায় ব্যর্থ হলে কালুরঘাট ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই। তাদের ৫ জনের একটি দল দুপুর ১টার দিকে এসে চেষ্টা চালান। সফল না হলে চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলকে খবর পাঠান তারা। তাদের ৩ জন ডুবুরি ও ২ জন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে আসেন। তারা দুপুর ২টার দিকে খালে নামে। উভয়দল চেষ্টা চালাতে থাকেন। বিকেলে কালুরঘাট ফায়ার সার্ভিস সফল না হয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
তবে চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল বিকেল ৫টা পর্যন্ত উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত রাখার পরও উদ্ধার করতে না পেরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। পরে খালে ভাটা পড়লে সন্ধ্যা সোয়া ৬টার পর স্থানীয় মৎস্যজীবী মো. মোবারক ও মন্নানসহ চারজন নৌকা করে নৌকায় থাকা বাঁশ দিয়ে ভাইয়ের সন্ধান করতে থাকেন ওই খালে।
একপর্যায়ে খালের যে স্থানে ভাই রহিম গোসল করতে ঝাঁপ দিয়েছিল, সেখানে মোবারকের বাঁশে লাগে রহিমের মৃতদেহ। এরপর মোবারকসহ স্থানীয় চারজন খাল থেকে তুলে আনেন রহিমের মৃতদেহ। খাল পাড়ে আনতে সহযোগিতা করেন আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলও।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ভুপেশ বড়ুয়া বলেন, উদ্ধারের সময় রহিমের মৃতদেহ খালের ভিতর কাদায় ডুবা ছিল। পা বাঁকা অবস্থায় ছিল। উদ্ধারের পর নাকে মুখে রক্ত ছিল। তার গায়ের জ্বর ছিল বলে স্বজনরা জানিয়েছে।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার টিটু কুমার বলেন, আমরা ও কালুরঘাট টিমের ১০ জন ঘটনাস্থলে এসে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারে চেষ্টা চালাই। আমরা ডুবুরি দিয়ে তল্লাশি করে না পেয়ে যাওয়ার প্রস্তুতিকালে খালে ভাটা অবস্থায় স্থানীয় মৎস্যজীবীরা ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। পরে আমরাসহ সহযোগিতা করে মৃত ব্যক্তিকে খাল পাড়ে তুলে আনি।
জানা যায়, আবদুর রহিম ৮ ভাই ও ৫ বোনের মধ্যে ৬ নম্বর। সে বেকার ছিল। তবে ছোট ভাই মো. নাদির উদ্দিনের সাথে দোকানে সহযোগিতা করতেন।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ