শিশু গৃহকর্মী মিফতাহ মণিকে (১০) গরম তেল ছিটিয়ে শরীর ঝলসে দেয়ার পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন গৃহকর্ত্রী সুমা আক্তার। স্বামী কামাল হারুনের সহায়তায় মরদেহ রেখে দেয় ডিপ ফ্রিজে। হত্যাকে ডায়রিয়ায় মারা বলে প্রচার চালায় তারা। কিন্তু বিপত্তি ঘটে দাফনের পূর্বে জীবনের শেষ গোসল করানোর সময় শরীরে আঘাতের চিহ্ন নজরে আসায়। অতঃপর হয় ময়নাতদন্ত ও হত্যা মামলা। আলোচিত ও হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের উত্তর লোটনী গ্রামে।
অবশেষে সেই চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রধান আসামি সুমা আক্তার গ্রেপ্তার হয়েছে শনিবার (২৭ মে) বিকাল সাড়ে ৩টায়।
এর আগে, গত ১০ মে শিশু গৃহকর্মীর মরদেহ উদ্ধার হয়। ১৬ মে নিহত শিশু মিফতাহ মণির বাবা মো. সৈয়দ নূর বাদী হয়ে চকরিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামি করা হয় সুমা আক্তার ও তার স্বামী কামাল হারুনকে।
র্যাব-১৫’র সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সালাম চৌধুরী জানান, শিশু গৃহকর্মী মিফতাহ মণিকে হত্যার পর গৃহকর্ত্রী সুমা তার স্বামীর সহায়তায় ডিপ ফ্রিজে রেখে দেয় মরদেহ। ডায়রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে প্রচার করে কয়েকদিন পর ফ্রিজ থেকে লাশ নিয়ে এম্বুলেন্সে করে চকরিয়া থেকে মহেশখালী নিয়ে শিশুর বাড়ির পাশে মরদেহ রেখে পালিয়ে যায় সেই দম্পতি। এরপর তারা ছিল আত্মগোপনে। মৃতদেহের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন এবং মৃত্যুর পরবর্তীতে মরদেহ ফ্রিজে রাখার আলামত পেয়ে মহেশখালী ও চকরিয়া থানাকে অবহিত করে আঘাতের চিহ্ন দেখা লোকজন।
ঘটনাটি প্রকাশের পর থেকেই কক্সবাজারসহ সমগ্র বাংলাদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। উক্ত অপরাধ সংঘটনের খবর পাওয়ার পর থেকেই র্যাব-১৫ আসামির গ্রেপ্তারের লক্ষে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করে এবং র্যাবের আভিযানিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। র্যাব আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা করলে আসামিরা গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য বারংবার নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকে। বিশ্বস্ত গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আজ শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় র্যাব-১৫, কক্সবাজারের একটি চৌকস আভিযানিক দল সুমা আক্তারকে গ্রেপ্তার করে। পলাতক কামাল হারুনকে ধরতে অভিযান চলমান রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া সুমা হত্যার ঘটনা স্বীকার করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ