চট্টগ্রাম রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪

ইফতারে সাওয়াব ও বরকত অপরিসীম

১১ এপ্রিল, ২০২২ | ১২:১৭ অপরাহ্ণ

রায়হান আজাদ

ইফতার আরবি শব্দ, এর অর্থ নাস্তা। পরিভাষায় ইফতার হচ্ছে, সূর্যাস্তের সাথে সাথে রোজা পালনকারী কোন কিছু খেয়ে রোজা ভেঙে দেয়া। ইফতার গ্রহণ সুন্নাত। শারীরিক স্থিতিশীলতা, গতিশীলতা ও অপরিসীম বরকত হাছিলের জন্য ইফতার করা প্রয়োজন। ইফতার রকমারি নাস্তার পসরা নয়, যে কোন কিছু খেয়ে রোজা ভেঙে ফেলা মাত্র। ইফতারে প্রচুর সাওয়াব, কল্যাণ, আনন্দ ও পরিতৃপ্তি রয়েছে।

পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ। অজু করে পাক সাফ হয়ে ইফতার করতে যাওয়া উত্তম। ইফতার গ্রহণের পূর্বে পড়ার একটি প্রসিদ্ধ দু’আ রয়েছে। এ দু’আ পড়ে ইফতার শুরু করলে অনেক সাওয়াব হয়। দু’আটি- “আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া বিকা আমানতু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু ওয়া আলা রিয্কিকা আফতারতু”।

ইফতারির সময়টি রোজাদারের জন্য দারুণ আনন্দের। এ সময় চাপা চাপা খুশিতে সবার মন ভরে উঠে। রাসুলে আকরাম (সা.) ফরমায়েছেন, ‘রোজাদারের আনন্দের সময় দুটো। একটি ইফতারের সময় অন্যটি আল্লাহ তা’য়ালার সাথে সাক্ষাৎ লাভের সময়”। আমাদের সামাজিক জীবনে ইফতারের খুশি সবার মনে এক অন্যরকম প্রাপ্তির ঢেউ খেলে যায়। ইফতারের সময় এলে বাসায় ছেলেমেয়েরা আনন্দে মেতে উঠে, দোকানপাট ভিড় ও রাস্তায় জ্যাম হালকা হয়ে পড়ে, একই সময়ে এবং একইসাথে খাওয়ার জন্য ডাক পড়ে । অনুপম ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের নমুনা সৃষ্টি হয় ধনী-দরিদ্র, মালিক-শ্রমিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী নির্ধারিত সময়ে ইফতার গ্রহণের মধ্য দিয়ে। ইফতারের সময় দু’আ করার গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “তিন শ্রেণির লোকের দু’আ ব্যর্থ যায় না(১) ইফতার প্রাক্কালে রোজাদারের দু’আ (২) ন্যায়পরায়ণ নরপতির করজোড়ে মিনতি (৩) মজলুমের বুক ফাটা ফরিয়াদ। খেজুর দিয়ে ইফতার করা উত্তম। এতে অশেষ বরকত ও ফজিলত রয়েছে। এ সম্পর্কে মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, হযরত আনাস (রদি.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) নামাজের পূর্বে গুটি কয়েক রুত্ব অর্থাৎ আধাপাকা বা সদ্য পাকা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। রুত্ব না পেলে পূর্ণ পাকা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। আর যদি তাও না পেতেন তাহলে কয়েক কুলি পানি দ্বারা ইফতার করতেন। (আবু দাউদ ও তিরমিজি) ।

ইফতার গ্রহণে পরিমিতিবোধ বজায় রাখা উচিত। পেট পুরে ভাজা-পোড়া খাওয়া ঠিক নয়। ইফতারের ক্ষেত্রে ইসলামে যেসব খাবার গ্রহণ ও বর্জন করার উপদেশ দেয়া হয়েছে সেটা আমাদের লক্ষ্য করা উচিত। অতিভোজন ইসলামী পদ্ধতি নয়। হাদীস শরীফে এসেছে, ‘নিশ্চয় প্রকৃত মোমিন স্বল্পভোজী, পরিমাণমত খায় আর কাফির নাক ডুুবিয়ে খায়’ এখানে অতিভোজন পরিহারের জন্য উপদেশ দেয়া হয়েছে। আমাদের পেয়ারা নবী ও ছাহাবীগণ সবসময় স্বল্পভোজী ছিলেন।
আল্লাহ পাক আমাদেরকে যথাসময়ে ইফতার করার তৌফিক দান করুন, আমীন।

 

পূর্বকোণ/এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট