চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিপদ কাটে দোয়ার মাধ্যমে

উমায়রা সুলতান সাফফানা

১৩ মার্চ, ২০২০ | ৯:৪৭ পূর্বাহ্ণ

দোয়া মুমিনের জন্য নিরন্তর সহযোগী। দোয়ার মাধ্যমে জীবনে সমৃদ্ধি আসে। বিপদ-আপদ দূর হয়ে যায়। বস্তুত মুমিন ব্যক্তি প্রতিটি কাজে দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সহযোগিতা প্রার্থনা করে। মহান আল্লাহতায়ালাও চান, বান্দা তার কাছে কায়মনোবাক্যে দোয়া-প্রার্থনা করুক।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমার বান্দারা যখন আপনার কাছে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করে, নিশ্চয় আমি কাছেই আছি। আমি দোয়াকারীর দোয়া কবুল করি, যখন সে আমার কাছে দোয়া করে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৮৬)

কোরআনের অন্য জায়গায় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের দোয়া শিখিয়ে বলেন, ‘হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি দুনিয়ায়ও আমাদের কল্যাণ দান করো এবং আখেরাতেও কল্যাণ দান করো এবং তুমি জাহান্নামের আজাব থেকে আমাদের রক্ষা করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২০১)

আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘তোমরা ভয় এবং আশা নিয়ে আল্লাহকে ডাকো। নিশ্চয়ই আল্লাহর রহমত সৎকর্মশীলদের নিকটবর্তী।’ (সুরা আরাফ, আয়াত : ৫৬) অনেক সময় বিপদে পড়লে বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনরা মুখ ফিরিয়ে নেয়। কিন্তু পরম করণাময় আল্লাহ সবসময় তার বান্দার সঙ্গ দেন। সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালার অনেক আত্মমর্যাদা রয়েছে। সুতরাং যখন মানুষ চাওয়ার জন্য তার কাছে দুই হাত তোলে, তখন তিনি সেই হাত দুইটিকে ব্যর্থ ও খালি ফেরত দিতে লজ্জাবোধ করেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৩২১)

আলী (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘দোয়া মুমিনের হাতিয়ার, দীনের স্তম্ভ ও আসমান-জমিনের নুর।’ (মুসলিম, হাদিস : ৪৬৫) আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহতায়ালার কাছে দোয়া অপেক্ষা কোনো জিনিসই অধিক ফজিলত ও সম্মানের নেই।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৭)

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের প্রত্যেকের দোয়া কবুল হয়ে থাকে, যদি সে তাড়াহুড়া না করে এবং এ কথা বলে যে, আমি দোয়া করলাম, অথচ আমার দোয়া কবুল হলো না।’ (বোখারি, হাদিস : ৫৯০১)

দোয়া করলে কিংবা আল্লাহর কাছে চাইলে তিনি খুশি হয়ে যান। এছাড়া আল্লাহকে রাজি-খুশি করার মাধ্যম হলো তার কাছে বিনীত হয়ে সাহায্য প্রার্থনা করা। আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা আল্লাহতায়ালার কাছে তার দয়া ও রহমত চাও। কেননা তার কাছে চাইলে তিনি খুশি হন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৭১)

হাদিসবিশারদ ও তাফসিরবিদরা বলেন, সাধারণত ভগ্ন-হৃদয়ের মানুষের দোয়া আল্লাহ বেশি কবুল করেন। মন-মানস যখন ব্যথিত ও বিষাদক্লিষ্ট থাকে, তখন আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস ও ভরসা অত্যধিক থাকে। এ কারণে দোয়ায় আলাদা একটা ভাবাবেগ তৈরি হয়। আর মহান আল্লাহ তার অনুকম্পার কারণে সহজেই দোয়া কবুল করেন। আল্লাহতায়ালা প্রতিটি মুমিনের সুখ-দুঃখের উত্তম সঙ্গী। নির্জনে-নিভৃতে বান্দা যখন মালিকের কাছে প্রার্থনা করে, আল্লাহতায়ালা তখন মহানুভবতায় বান্দার সমস্যা দূর করে দেন। কণ্টকাকীর্ণ পথকে কুসুমাস্তীর্ণ করে দেন। সবার অলক্ষ্যে ও সন্তর্পণে আল্লাহর জন্য যে অশ্রু ঝরে, তা আল্লাহর কাছে ভীষণ প্রিয় বলে হাদিসে এসেছে। দোয়া এক মুসলমানের প্রতি অপর মুসলমানের অধিকার। দোয়ার মাধ্যমে পারস্পরিক কল্যাণ কামনা করা হয়। বিনিময়ে বিপদ-আপদ দূর হয়। দোয়ার পাশাপাশি যারা চেষ্টা করে আল্লাহতায়ালা তাদের সমাধানের পথ বের করে দেন।

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট