চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ফুটবল মওসুমের অপেক্ষায় চট্টগ্রাম

দেবাশীষ বড়–য়া দেবু

২২ মে, ২০১৯ | ১:১২ পূর্বাহ্ণ

শেষ হয়েছে চট্টগ্রামের ক্রিকেট মওসুম। এবার ফুটবলের পালা। ইতিমধ্যে চট্টগ্রামের ফুটবলের সর্বোচ্চ আসর প্রিমিয়ার ও প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগের আয়োজক চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন (সিডিএফএ)-র পক্ষ থেকে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে এই লিগ শুরুর ঘোষনা দেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি সিডিএফএ চট্টগ্রাম ২য় ও ৩য় বিভাগ লিগ ফুটবলেরও আয়োজন করবে।
আগামী সেপ্টেম্বরে ফুটবল লিগ। এখন চলছে মে। মানে, এখনো আরো ৩/৪ মাসের মতো বাকি। এ সময়ে কি ফাঁকা থাকবে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের মাঠ।
না, থাকবে না। এ সময়ে স্থানীয় ক্রীড়াঙ্গনের অবিভাবক সংগঠন চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থা (সিজেকেএস)-র ফুটবল আয়োজনে মেতে ওঠবে এ মাঠ। সিজেকেএস ফুটবল কমিটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে আসন্ন রোজা’র ঈদের ৮/১০ দিনের মধ্যেই আন্ত: বিশ^বিদ্যালয় ফুটবল প্রতিযোগিতা দিয়ে মাঠে গড়াবে এবারের মওসুম। আগামী সেপ্টেম্বরের মাসের আগে আরো ২টি বড় আসর, মেয়র কাপ (আন্ত:ওয়ার্ড) ও উপজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করবে সিজেকেএস ফুটবল কমিটি। সিজেকেএস কমিটির সম্পাদক নির্বাহী সদস্য ও ফুটবল সম্পাদক মোহাম্মদ ইউসুফ এ কথা বলেছেন।
তবে সিজেকেএস ফুটবল কমিটির আয়োজনের আগে সিজেকেএস ক্রিকেট কমিটির একটি আসর অনুষ্ঠিত হতে পারে। গত ৬মে সিজেকেএস প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে রোজার ঈদের পর চট্টগ্রামের কর্পোরেট হাউস বা প্রিমিয়ারের ক্লাবগুলোকে নিয়ে মেয়র কাপ টি-২০ ক্রিকেটের ঘোষনা দেয়া হয়েছিলো। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ওটা কি কেবল ঘোষনাতেই সীমাবদ্ধ থাকবে নাকি আলোর মুখ দেখবে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সিজেকেএস ক্রিকেট কমিটির সম্পাদক আব্দুল হান্নান আকবর জানান, এ ব্যাপারে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। ৬ মে তারিখের ঘোষনার পর এ নিয়ে আর কোন আলোচনাও হয়নি বলে তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, জুন মাস থেকেই বৃষ্টি শুরু হবে। ক্লাবগুলোও তাদের অনুুশীলন করে দিয়েছে। এই অবস্থায় টুর্নামেন্টটি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
যদি তাই হয়. তাহলে আসন্ন ঈদুল ফিতরের পরপরই শুরু হয়ে যাবে আন্ত: বিশ^বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট। এই টুর্নামেন্টের জন্য স্পন্সর যোগাড় হয়ে গেছে। এরপরও কো-স্পন্সরের চেষ্টা চলছে। আগামী ঈদুল আজহা’র পরে শুরু হবে উপজেলা ফুটবল টুর্নামেন্ট। এ দুয়ের মাঝে হবে মেয়র কাপ আন্ত: ওয়ার্ড ফুটবল টুর্নামেন্ট।
আন্ত: বিশ^বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট বরাবরের মতো এবারেও জমজমাট হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী ২৫/২৬ মে তারিখে ফুটবল কমিটির সভায় এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। মেয়র কাপ বয়সভিত্তিক না উন্মুক্ত সেটা আলোচনা করা হবে অংশগ্রহণকারি ওয়ার্ড সমুহের কর্মকর্তাদের সাথে। কিন্তু যাই হোক না কেন, আমরা এই ওয়ার্ড ফুটবলে প্রায় প্রত্যেকটি দলেই দেখি বাইরের জেলার খেলোয়াড় অবাধে এই আসরে খেলে যাচ্ছে। কয়েকটি ওয়ার্ড ছাড়া বাকি প্রত্যেকেই ভাড়াটে খেলোয়াড় এনে ট্রফি জয় করতে চায়। এই যেমন ‘তোরা যে যা বলিস ভাই আমার ফুটবল ট্রফি চাই’ এর মতো। ব্যাপারটিকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। খেলোয়াড় বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সকলকে চোক কান খোলা রেখে সজাগ থাকতে হবে। এরপরও দেখা যায়, ফাঁকফোঁকর দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন অবৈধ খোলোয়াড়গুলো। এতে করে খেলোয়াড় সৃষ্টির যে লক্ষ্য নিয়ে এ টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হচ্ছে তা অংকুরেই বিনাশ হয়ে যাবে।
এদিকে আর যাই হোক না কেন, উপজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজনটা বিশ^বিদ্যালয় বা মেয়র কাপের তুলনায় একেবারেই ভিন্ন ধারার। এই যেমন খেলা হয় ৪ ভেন্যুতে। পরে ৪ ভেন্যুর চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ দল নিয়ে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্ব খেকে ফাইনাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ৪ ভেন্যুর মধ্যে থাকে সেরা হওয়ার এক প্রতিযোগিতা। তার উপর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার প্রতিযোগিতা’তো রয়েছেই। আরো একটা জঘন্য অলিখিত প্রতিযোগিতাতেও সকলে মেতে ওঠে। তা হলো, অবৈধ ফুটবলার খেলানো প্রসঙ্গে। মেয়র কাপের মতো, এখানেও থাকে খেলোয়াড় বাছাই, এখানে চলে বাইরের খেলোয়াড় খেলানোর প্রতিযোগিতা। তারপরও ঐ ফাঁকফোঁকর দিয়ে অবৈধ খোলোয়াড়গুলো বৈধ হয়ে যাচ্ছেন। ঠিক এখানেই এসে সবকিছু যেন এলোমেলো হয়ে যায়। ধরুণ, এক ফুটবলারের বাড়ি রাঙ্গামাটি, কিন্তু যে কোন কারণে, সে বর্তমানে কোন একটি উপজেলায় বাস করছেন। সে কিন্তু রাঙ্গামাটির ভোটার। তিনি কী ঐ উপজেলা দলের হয়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। কিন্তু তিনি রাঙ্গামাটির ভোটার হলেও বাসকরার কারণে ইউনিয়ন থেকে বার্থ সার্টিফিকেট নিতে পারছেন।
মেয়র কাপ এবং উপজেলা ফুটবলে স্কুলগুলোর বড় একটা ভুমিকা থাকে। এমনও অভিযোগ আছে, ছাত্র না হয়েও স্কুল থেকে ছাত্র হিসেবে বয়স প্রমাণের সার্টিফিকেট আনা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে স্কুলগুলো ব্যাপারটিকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট