চট্টগ্রাম সোমবার, ১৩ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

রূপচর্চার টুকিটাকি

শর্মী দাশ

২৮ আগস্ট, ২০১৯ | ১:০৯ পূর্বাহ্ণ

ট্রি অয়েল ব্যবহারে সুরক্ষিত ত্বক

বিভিন্ন ধরনের এসেনশিয়াল অয়েলের মাঝে টি ট্রি অয়েল সবচেয়ে পরিচিত ও প্রচলিত একটি। এই এসেনশিয়াল অয়েলের অসংখ্য উপকারিতার মাঝে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়। শুধু ত্বক নয়, চুলের যতেœও সমানভাবে ব্যবহৃত হয় টি ট্রি অয়েল। এছাড়াও ডিওডরেন্ট, পোকামাকড় দূর করতে ও মাউথওয়াশ হিসেবেও কার্যকর এই এসেনশিয়াল অয়েল।
টি ট্রি অয়েল ব্যবহার বিধি : টি ট্রি অয়েল ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুব কঠিন কোন বিধি নিষেধ নেই। তবে মনে রাখতে হবে, ত্বকে বা চুলে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরাসরি এই তেল ব্যবহার করা যাবে না। ক্যারিয়ার তেল তথা নারিকেল তেল অথবা অলিভ অয়েলের সাথে মিশিয়ে তবেই ব্যবহার করতে হবে এই এসেনশিয়াল অয়েল। অনেকেই টি ট্রি অয়েল পরিমাণে অনেক বেশি নিয়ে ফেলে। এক্ষেত্রে ১-৩ ফোঁটা ব্যবহার করাই যথেষ্ট। অল্প পরিমাণ এসেনশিয়াল অয়েল থেকেও স¤পূর্ণ উপকারিতা পাওয়া যাবে। তবে টি ট্রি অয়েল ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মনে রাখতে হবে অবশ্য। এই তেল চোখের আশেপাশের অংশ ব্যবহার না করাই শ্রেয়। এতে চোখের আশেপাশের অংশের ত্বকে জ্বালাপোড়া দেখা দেয়। কারণ মুখম-লের এ অংশের ত্বক তুলনামূলক বেশি পাতলা হয়ে থাকে। এছাড়া টি ট্রি অয়েল ব্যবহার পূর্বে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া ভালো, এই তেল ব্যবহারে ত্বকে কোন সমস্যা দেখা দেয় কিনা।
টি ট্রি অয়েলের উপকারিতা : এই এসেনশিয়াল অয়েলের বিবিধ উপকারিতার মাঝে মূল ও প্রধান কয়েকটি উপকারিতা তুলে ধরা হলো।
শুষ্ক ত্বকের সমস্যা কমায় : যাদের ত্বক খুব শুষ্ক, তাদের জন্য টি ট্রি অয়েল খুব ভালো কাজ করবে। এই তেলটি শুষ্ক ত্বকের জ্বালাপোড়াভাব ও চুলকানির প্রাদুর্ভাব কমায়। বিশেষত এতে থাকা জিংক অক্সাইড শুষ্ক ত্বক ও একজিমার সমস্যা কমাতে কাজ করে।
তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন : টি ট্রি অয়েলের অ্যান্টিসেপটিক উপাদান তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপকারি। একটি গবেষণা জানাচ্ছে, সানস্ক্রিনের সাথে টি ট্রি অয়েল মিশ্রিত থাকলে ত্বকের তৈলাক্ততা কমে যায় অনেকখানি।
ত্বকের প্রদাহ : উপকারী এই এসেনশিয়াল অয়েলের অ্যান্ট-ইনফ্ল্যামেটরি প্রভাব ত্বকের প্রদাহ, ব্যথা ও জ্বালাপোড়ার সমস্যাকে কমিয়ে এনে আরাম প্রদান করে। এমনকি ত্বকের কোন অংশ ফুলে গেলে বা ত্বকে লালচে ভাব দেখা দিলে সেটা কমাতেও কাজ করে টি ট্রি অয়েল।
ক্ষত সারাতে টি ট্রি অয়েল : টি ট্রি অয়েলের অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ধর্ম ত্বকের কাটাছেঁড়া ও ক্ষত সারাতে খুব চমৎকার কাজ করে। ২০১৩ সালের একটি গবেষণা থেকে দেখা গেছে প্রতি ১০ জনের মাঝে ৯ জনের টি ট্রি অয়েল ব্যবহারে ক্ষত দ্রুত ও অল্প সময়ের মাঝে ভালো হয়েছে।
ত্বকের ফাটা দাগ কমাতে ক্যাস্টর অয়েল
ত্বকের বিভিন্ন স্থানে ফাটা দাগ দেখা দিতে পারে নানান কারণেই। গর্ভধারণজনিত কারণ ছাড়াও বয়ঃসন্ধিকালীন ও অতিরিক্ত ওজনের ফলে ত্বক ফেটে যায়। যা থেকে ত্বকে ফাটা দাগ দেখা দেয়। ত্বকের ফাটা দাগ পুরোপুরি দূর না করা গেলেও, প্রাকৃতিক উপাদান ও ক্যাস্টর অয়েলের ব্যবহারে, এই সমস্যাটি অনেকখানি কমিয়ে আনা যায়। এই ফিচারে ক্যাস্টর অয়েলের তিন ভিন্ন ব্যবহার তুলে ধরা হলো, যা ত্বকের ফাটা দাগের প্রাদুর্ভাব কমাতে কাজ করবে।
আলুর রস ও ক্যাস্টর অয়েলের মিশ্রণ : এর জন্য প্রয়োজন হবে একটি আলুর রস ও দুই টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল। দুইটি উপাদান একসাথে মিশিয়ে রেফ্রিজারেটরে কয়েক ঘন্টার জন্য রেখে দিতে হবে। ঠা-া তেলের মিশ্রণটি ত্বকের ফাটা দাগযুক্ত স্থানে তিরিশ মিনিট ধরে ম্যাসাজ করে আরও তিরিশ মিনিট রেখে দিতে হবে। এরপর কুসুম গরম পানিতে স্থানটি ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে ৩-৪ দিন ব্যবহারই যথেষ্ট।
কেন এটা কাজ করবে?: তেলের এই মিশ্রণটি ত্বকের ইলাস্টিসিটির মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের গভীর থেকে আর্দ্রতা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত ত্বককে ভালো হতে সাহায্য করে।
লবঙ্গ ও ক্যাস্টর অয়েলের মিশ্রণ : এই মিশ্রণ তৈরিতে প্রয়োজন হবে ৫-৬টি লবঙ্গ ও দুই টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল। প্রথমে এই দুইটি উপাদান একসাথে মিশিয়ে মাঝারি আঁচে গরম করতে হবে। তেলের রঙে পরিবর্তন আসলে নামিয়ে ঠা-া করতে হবে। এই তেলটি ফাটা দাগযুক্ত স্থানে পনের মিনিট ম্যাসাজ করে আধা ঘন্টা পর্যন্ত রেখে দিতে হবে। পরবর্তীতে কুসুম গরম পানিতে ত্বক ধুয়ে নিতে হবে। এই তেলটি প্রতিদিন ব্যবহার করতে হবে।
কেন এটা কাজ করবে? : ত্বকের ফাটা দাগ দূর করার ক্ষেত্রে লবঙ্গ উপকারী একটি প্রাকৃতিক উপাদান। বিশেষত ক্যাস্টর অয়েলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহারের ফলে এর উপকারিতা বেড়ে যায় অনেকখানি।
হলুদ গুঁড়া, ক্যাস্টর অয়েল ও অলিভ অয়েল: এক চা চামচ হলুদ গুঁড়ার সাথে এক চা চামচ ক্যাস্টর অয়েল ও অলিভ অয়েল একসাথে মিশিয়ে ত্বকের আক্রান্ত স্থানে ম্যাসাজ করতে হবে। প্রায় ঘন্টাখানিক মিশ্রণটি ত্বকে রেখে দেওয়ার পর কুসুম গরম পানিতে ত্বক ধুয়ে নিতে হবে।
কেন এটা কাজ করবে? : ত্বকের যতেœ হলুদ গুঁড়া ও অলিভ অয়েলের ব্যবহার নতুন কিছু নয়। এই উপাদানগুলোতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমূহ ত্বকের ফাটা দাগ কমাতে ও ত্বক উজ্জ্বল করতে কাজ করবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট