চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪

অর্থ-পেশি অপশক্তির লাগাম টানবে কে?

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী

৪ আগস্ট, ২০২২ | ৫:২৫ অপরাহ্ণ

বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছরের শুরু থেকে হঠাৎ করে বেড়েছে রোমহর্ষক খুনের ঘটনা। পাশাপাশি বৃদ্ধি পেয়েছে চুরি-ছিনতাইসহ বহুমাত্রিক অপরাধ কর্মকান্ড। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা সত্ত্বেও ঘটছে একের পর এক নৃশংস হত্যা। পুলিশ বাহিনীর ভাষ্যমতে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে, সামাজিক আধিপত্য বিস্তার-ব্যক্তিগত বিরোধ, জমি-জমা দখল, পারিবারিক কলহ, আর্থিক লেনদেনে সমস্যা, মাদক এবং ক্ষেত্রবিশেষে রাজনৈতিক কারণে দেশব্যাপী সংঘটিত হচ্ছে এসব হত্যাকাণণ্ডের মতো ঘটনা।

 

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ১২ বছরে খুন-হত্যার ঘটনা ঘটেছে ৪৫ হাজার ১৪৬টি। তন্মধ্যে ২০২১ সালে ঘটেছে ৩ হাজার ৪৫৮টি। ২০২০ ও ২০১৯ সালে এর সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৩ হাজার ৫৩৯ ও ৩ হাজার ৬৫৩টি। ২০২২ সালের প্রথম দুই মাসে দেশজুড়ে প্রতিদিন গড়ে ৭ জন করে খুন হয়েছে। এই দুই মাসে দেশে মোট হত্যাকান্ড ঘটেছে ৪ শতেরও বেশি। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে ঘটে যাওয়া এসব হত্যাকণ্ডের পেছনে অন্যতম কারণ আধিপত্য বিস্তার-জমিসংক্রান্ত বিরোধ, পরকীয়া, মাদকের অর্থ জোগাড়, ইন্টারনেটের অপব্যবহার, অসহিষ্ণুতা, অতিমাত্রার ক্ষোভ, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থলিপ্সুতা, অর্থনৈতিক বৈষম্য, নৈতিকতা ও মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়।

 

উল্লেখ্য নানামুখী কদর্য ঘটনাসমূহের পিছনে কতিপয় হিংস দানবরূপী মানুষের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল-উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ হাসপাতাল-সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা ইত্যাদির পদ-পদায়ন-পদক দখলের অনৈতিক বেপরোয়া দৌরাত্ম্য সমগ্র সমাজে নিষ্ঠুরতার মাত্রা ছড়িয়ে দিচ্ছে।

৪ জানুয়ারি ২০২২ প্রকাশিত মহিলা পরিষদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তির পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২১ সালে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১ হাজার ২৩৫ জন। এর মধ্যে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ১৭৯ জন নারী ও ৬২ কন্যাশিশু। উল্লেখ্য, সময়ে নির্যাতনের শিকার হওয়া নারী ও কন্যাশিশুর সংখ্যা ৩ হাজার ৭০৩ জন।

 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ঐ বছরে ৯৩ কন্যাশিশুসহ ১৫৫ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। শ্লীলতাহানি হয়েছে ১৪ কন্যাশিশু ও ৩৩ জন নারীর। যৌননিপীড়িত হয়েছে ৬২ কন্যাশিশুসহ ৯৫ জন। অ্যাসিডদগ্ধ ও অ্যাসিডদগ্ধের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা যথাক্রমে ২২ ও ৪ জন। অগ্নিদগ্ধ কবলিত হয়েছে ২৩ এবং অগ্নিদগ্ধতায় মৃত্যুবরণ করেছে ১০ জন। অপহরণ হয়েছে ১৮০ এবং অপহরণের চেষ্টা করা হয়েছে ১১ জনকে। এছাড়াও পাচার হয়েছে ৪২ জন। যার মধ্যে পতিতালয়ে বিক্রি করা হয় ২ জনকে।

 

উক্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তির দাবী অনুযায়ী, যৌতুকের কারণে নির্যাতিত হয়েছে ১৩৮ জন। এর মধ্যে হত্যা করা হয়েছে ৪৫ জনকে। শারীরিকভাবে নির্যাতিত হয়েছে ২০৮ জন। বিভিন্ন কারণে ১১৪ কন্যাশিশুসহ হত্যা করা হয়েছে ৪৪৪ নারী ও কন্যাশিশুকে। রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে ৪২৭ জনের এবং ১২১ জনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।

আমাদের সকলের জানা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হাতেগোনা কতিপয় কথিত নেতা নামধারী নষ্ট চরিত্রের নেতৃত্ব-প্রশাসনিক কর্মকর্তার পৃষ্ঠপোষকতা-স্বজনতন্ত্র-অঞ্চলপ্রীতির পরিচয়ে পেশিশক্তির জোরে প্রতিনিয়ত দখল করে নিচ্ছে সরকারি খাস জমি-খাল-বিল-নদী-নালাসহ মানুষের ব্যক্তিগত ও পৈতৃক সম্পত্তি। ক্ষেত্রবিশেষে ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের যোগসাজসে জাল দলিল-নামজারি করে একের পর এক জায়গা দখল করছে ভূমিদস্যু চক্র। প্রভাবশালী ভূমিদস্যুদের প্রত্যক্ষ মদদে গড়ে উঠেছে পেশাদার ভূমি সন্ত্রাসী যারা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালিত করে নিরীহদের জমি দখল করে নেয়। দখলকে কেন্দ্র করে প্রায়শই গোলাগুলি, সন্ত্রাস ও হত্যাকান্ড সংঘটিত হচ্ছে। ভূমি সন্ত্রাসীদের দাপট-ভূমিদস্যু সিন্ডিকেটের রাহুগ্রাস থেকে রক্ষা পাচ্ছে না মসজিদ-মন্দির-শতবর্ষী কবরস্থান-জলাশয় ও জলাশয়ের পাড়-স্কুল-কলেজসহ শিক্ষা-ধর্মীয়-সেবামূলক প্রতিষ্ঠানও।

 

সুখের বিষয় হচ্ছে অবৈধভাবে ভূমির দখল, ক্ষতিসাধনে পেশিশক্তি, দেশীয় অস্ত্র অথবা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে সংঘটিত অপরাধ প্রতিরোধ এবং দ্রুত প্রতিকার নিশ্চিতে ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২২’ প্রণয়ন করা হচ্ছে। আইনের দুটি উদ্দেশ্য হলো- ব্যক্তি মালিকানাধীন বা সরকারি খাসজমিসহ সরকারি যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা সংবিধিবদ্ধ সংস্থার মালিকানাধীন ভূমিতে প্রকৃত মালিকদের স্বত্ব ও দখলভোগ নিশ্চিত এবং ভূমিলিপ্সু কোনো ব্যক্তির জালিয়াতি বা প্রতারণামূলক ও অন্যের সঙ্গে যোগসাজসে সৃষ্ট দলিলমূলে বা কোনো দলিল ছাড়া ঐ ব্যক্তি কর্তৃক অবৈধভাবে ভূমির দখল-দখলের চেষ্টা বা এর ক্ষতিসাধন রোধ করা। প্রাসঙ্গিকতায় সম্মানিত ভূমিমন্ত্রী আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে বলেন, ‘মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষের দ্রুত আইনি প্রতিকার বা ন্যায়সঙ্গত সমাধানের ব্যবস্থা করা সুবিচার নিশ্চিতের জন্য অপরিহার্য।’

 

সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে অনুমান করা যায় যে, জালিয়াত ও প্রতারক চক্রের সদস্যরা খেলাপি ঋণের অধিকাংশ অর্থ আমদানিতে ওভার ইনভয়েসিং, রফতানিতে আন্ডার ইনভয়েসিং ও হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচারে সচেষ্ট রয়েছে। তাদের জঘণ্য-হীন-অশুভ তৎপরতায় প্রতিবছর খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৬ জুন ২০২২ প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণসংক্রান্ত হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মার্চ মাস শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতে মোট বিতরণকৃত ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকার বিপরীতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। যা বিতরণকৃত মোট ঋণের ৮ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা। এই হিসেবে ৩ মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা। ২০২১ সালের মার্চ মাসের তুলনায় বেড়েছে ১৮ হাজার ৩৫৫ কোটি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে পূর্বের ১০ থেকে ৩০ শতাংশের পরিবর্তে এখন আড়াই থেকে ৬ শতাংশ অর্থ জমা এবং ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ ২ বছরের বিপরীতে করা হয়েছে পাঁচ থেকে আট বছর। এই সুযোগ নিয়ে যারা খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করবে তারা পুনরায় নতুন ঋণ নিতে পারবে। ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ পরিশোধ না করার যে সুবিধা দিয়েছে তা গ্রাহকদের ঋণ পরিশোধে অনাগ্রহী করে তুলেছে যার প্রভাব দীর্ঘ মেয়াদে আরও ভয়াবহ হবে।

 

অর্থ-পেশি শক্তির অন্যতম অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে বিভিন্ন অবৈধ পন্থায় উপার্জিত-পাচারকৃত অর্থ। অর্থ পাচার শুধু দেশের অর্থনীতিকেই বিপর্যস্ত করছে না বরং এই অর্থের অপব্যবহারে দেশের সামগ্রিক পরিবেশকে ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত করছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও যে অর্থ পাচার প্রবল প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে দেশের অর্থনীতিবিদরাও তা একবাক্যে স্বীকার করছেন। ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) ২০২১ সালের প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানি ও রফতানির মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে গত ১০ বছরে (২০০৯-২০১৮) গড়ে ৮ দশমিক ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। যা দেশের বর্তমান বাজেটের মোট রাজস্ব আয়ের প্রায় ১৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। সংস্থাটির মতে, পাচারকৃত অর্থের প্রায় ৮০ শতাংশেরও বেশি বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমে পাচার হয়। এছাড়াও অবৈধ হুন্ডি, বিটকয়েন বা ক্রিপ্টো কারেন্সির মাধমেও দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে। বিবিসি নিউজ এর ভাষ্যমতে, সারা বিশ্বে ২০২১ সালে তার আগের বছরের তুলনায় ৩০ শতাংশ মানি লন্ডারিং বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থ পাচারে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান।

 

২৬ জুলাই ২০২২ প্রকাশিত গণমাধ্যম সূত্রমতে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ভোটে অর্থ ও পেশি শক্তির ব্যবহার বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান সংলাপের অষ্টম দিনে তিনি বলেন, ‘অর্থশক্তিকে আমরা কীভাবে সামাল দেব? আপনারা আমাকে একটা বুদ্ধি দেন। দেশে অর্থ বেড়েছে আমাদের সকলের বাড়িতে বস্তা বস্তা টাকা। বস্তা বস্তা অর্থ আমরা নির্বাচনে ব্যয় করি। এই অর্থ নিয়ন্ত্রণ করবো কিভাবে? যেটা প্রকাশ্যে হয় তার কিছুটা নির্বাচন কমিশনে দেখানো হয়। বলা হয় যে, ৫ লক্ষ টাকা খরচ করেছে। তার বাইরে গিয়ে যদি আমি গোপনে ৫ কোটি টাকা খরচ করি, কিভাবে আপনি আমাকে ধরবেন বা আমি আপনাকে ধরব? এগুলো অসম্ভব, এ জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘একটি অপসংস্কৃতি হয়ে গেছে। পয়সা নিয়ে ঢালতেছি। মাস্তান হায়ার করতেছি। প্রফেশনাল কিলারও হায়ার করতে খুব বেশি পয়সা লাগবে না। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে আমাদের সকলকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। অর্থশক্তি, পেশিশক্তির ব্যাপারে আমরা এখনই কিছু বলতে পারব না। মাঠে আপনাদের থাকতে হবে। তথ্যগুলো পাঠালে আমরা কিন্তু সাহায্য করব।’

 

দেশবাসী সম্যক অবগত আছেন পণ্যের চাহিদা-সরবরাহের দোলাচলে অসাধু ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফা লোভ শুধু অরাজক নয়; দেশব্যাপী ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরিতেও কুৎসিত সহায়ক। সমকালীন বাজার অর্থনীতিতে এই অপশক্তির কারসাজিতে জনমনে পণ্য ক্রয়ের আর্তনাদ প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। সবকিছুর মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে অতিসম্প্রতি ভোজ্যতেলের তেলেসমাতি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-সংস্থা-প্রতিষ্ঠানের বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা সরকারের সামগ্রিক উন্নয়ন অগ্রগতিকে যেন ধূসর চাদরে ঢেকে দিচ্ছে। একটি (ডিও)’র বিনিময়ে শতকোটি টাকা লাভের গণমাধ্যমে সংবাদ পরিবেশন এসব অপকৌশল এবং অপকর্মের দুর্ভেদ্য রহস্য আবিষ্কারের সামান্য কিছুই অনুভূত হয়েছে। বাংলাদেশের সংকট পর্যালোচনায় প্রণিধানযোগ্য বিষয় হচ্ছে অসহনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি। কারো মতে এর পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র সক্রিয় ও সীমাহীন জনদুর্ভোগ বাড়িয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে ঘোলাজলে মাছ শিকারের দুরভিসন্ধির বিষবাষ্প ছড়ানো হচ্ছে।

 

দুভাগ্যের বিষয় হচ্ছে; রাজনীতি-বাণিজ্য-নাগ নাগিনীর অভিশপ্ত পদচারণায় সক্রিয় মহল ম্যানেজ অপসংস্কৃতির মোড়কে সর্বত্রই সমাদৃত। বিজ্ঞ মহলের মতে অবৈধ অর্থ-পেশিশক্তির অদমনীয় প্রভাবে সততা-মেধা-প্রজ্ঞা-দেশপ্রেম-দক্ষতা-যোগ্যতা-অভিজ্ঞতা দ্রুততর নির্বাসিত হচ্ছে। বিপরীতে অন্ধকারের নিকৃষ্ট পশুশক্তি-দুর্বৃত্তায়নের বেড়াজালে দেশবাসীর জীবন-জীবিকার দৃশ্যপট দুর্বিষহ রূপ পরিগ্রহ করছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণ এবং খাদ্য-জ্বালানি-মূল্যস্ফীতিসহ সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার ভয়াবহ সংকটে পুরোবিশ্ব বিপর্যস্ত। এটি সহজেই অনুমেয় যে বিরাজিত সংকট দীর্ঘায়িত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। দেশ-সরকার-জনগণের সম্মিলিত প্রেচেষ্টায় প্রায়োগিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যর্থতা আগামীতে অধিকতর কঠিন চ্যালেঞ্জের দুর্ভেদ্য প্রাচীর নির্মাণ করবেই – নিঃসন্দেহে তা বলা যায়।

 

প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

 

 

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট