ভূমিকম্প প্রস্তুতি কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে চারটি পৃথক সমঝোতা স্মারক সইয়ের অনুষ্ঠান মহাখালীতে অবস্থিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে আজ (বুধবার) বেলা ১১টায় একটি অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা ছিল। অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যথাসময়ে উপস্থিত হন আমন্ত্রিত অতিথিরা।

এর মধ্যে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকশিনার রবার্ট ক্যাথারটন ডিকসন, সুইডিশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত শার্লোটা সিল্টার, ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি। কিন্তু অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান ও মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল যথাসময়ে উপস্থিত হননি।

১১টার অনুষ্ঠান যখন দুপুর ১টায়ও শুরু হচ্ছিল না, তখন আয়োজকদের একজনকে সুইডিশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত শার্লোটা সিল্টার জানান, তিনি দুপুর দেড়টার পর আর থাকতে পারবেন না।

তাদের এ কথোপকথনের মাঝে আয়োজকদের আরেকজন এসে জানান, প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান দুপুর ১২টার দিকে সাভার থেকে রওনা দিয়েছেন। তিনি দেড়টার আগে কিছুতেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারবেন না।

প্রধান অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানের উপস্থিতি ছাড়া অনুষ্ঠান শুরুর সুযোগ না থাকায় আয়োজকদের পক্ষ থেকে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত শার্লোটা সিল্টারকে বক্তব্য দিতে বলা হয়। দুপুর ১টা ১৮ মিনিটের দিকে সুইডেনের রাষ্ট্রদূত বক্তব্য দিতে শুরু করেন। শুরুতেই তিনি বলেন, ‘অনুষ্ঠান দেরিতে শুরু হওয়ায় আমার আগে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ হলো।’ বক্তব্য শেষে বিদায় নেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত।

অনুষ্ঠান শুরু হতে দেরি হওয়ায় আগত অন্য অতিথিরা বিরক্তি প্রকাশ করেন। অলস সময় কাটাতে গণমাধ্যমকর্মীসহ আগত অতিথিদের কেউ কেউ বসার জায়গায়ই ঘুমাতে শুরু করেন। আগত বিদেশি অতিথিদেরও একজন মাথায় হাত দিয়ে ঝিমুতে থাকেন।

সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের নিজস্ব প্রতিবেদক নাজমুল সাঈদ। তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের এই প্রোগ্রাম বেলা ১১টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল। এখন দুপুর ১টা পার হয়ে গেছে। কিন্তু অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কোনো খোঁজ-খবর নেই। এদিকে দুপুর সাড়ে ১২টায় আমার আরেকটা প্রোগ্রাম ছিল, এই প্রোগ্রামের জন্য আমি সেই প্রোগ্রামেও যোগ দিতে পারলাম না। এতে আমার ও আমার অফিস, উভয়েরই ক্ষতি হলো। আয়োজক ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর সময়ের বিষয়ে আরও যত্নশীল হওয়া উচিত। আমার মতো এখানে অনেকেই বিরক্ত।’

বিরক্তি প্রকাশ করে আয়োজকদের একজন জানান, ‘আমরা আসলে বুঝতে পারছি না মন্ত্রী মহোদয় কখন আসবেন। এদিকে অনুষ্ঠানে আমরা রাষ্ট্রদূতদের দাওয়াত দিয়েছি। অনুষ্ঠান শুরু করতে না পারায় আমরাই তাদের কাছে ছোট হয়ে গেলাম।’

সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা ছিল রংপুর সিটি করপোরেশন, টাঙ্গাইল পৌরসভা, রাঙ্গামাটি পৌরসভা এবং সুনামগঞ্জ পৌরসভার সঙ্গে। এতে সভাপতিত্ব করার কথা ছিল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামালের।

ঘটনাস্থলে অবস্থান করে দেখা যায়, ৩ ঘণ্টা দেরি করে দুপুর ২টায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমানে উপস্থিত হন। তখন অনুষ্ঠান শুরু হয়।

পূর্বকোণ/পলাশ