চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ফের গ্রেপ্তার শাল্লার ঝুমন দাশ

অনলাইন ডেস্ক

৩১ আগস্ট, ২০২২ | ১:২৮ অপরাহ্ণ

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাশকে (২৬) ফের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ফেসবুকে ‘বিতর্কিত’ পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করেছে। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে পুলিশ ঝুমনকে বাড়ি থেকে আটক করে। পরে রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, ঝুমন দাশ কয়েকদিন আগে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে মসজিদ ও মন্দির নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছে। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ঝুমন দাশের স্ত্রী সুইটি রানী দাশ বলেন, চারদিন ধরে তাদের গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুলিশ অবস্থান করছে। গতকাল দুপুরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাদের বাড়িতে যান। তারা ঝুমনকে বলেন, এলাকার নোয়াগাঁও বাজারে পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঝুমনের সঙ্গে কথা বলবেন। এরপর ঝুমন ও তিনি (সুইটি) নৌকায় ওঠেন। কিন্তু পরে নোয়াগাঁও বাজার না গিয়ে তাদের শাল্লা থানায় নেওয়া হয়। সারা দিন তিনি ঝুমনের সঙ্গে থানায় ছিলেন। পরে রাত নয়টার দিকে তিনি ঝুমনকে থানায় রেখে বাড়িতে ফিরে আসেন। আজ বুধবার সকালে থানায় ফোন দিলে পুলিশ তাকে জানায়, ঝুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি ঝুমনকে ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন। ঝুমন তাকে জানিয়েছেন, কেউ ক্ষুব্ধ হওয়ার মতো কিছু তিনি লেখেননি। তবে সম্প্রতি নারীদের পোশাক নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে ঝুমন দু-একটি পোস্ট দিয়েছেন।

ঝুমনের মা নিভা রানী দাশ বলেন, ‘পুলিশ বলছে, ঝুমন নাকি ফেসবুকে আবার কী লিখেছে! এ কারণে তাকে থানায় নেওয়া হয়েছে। গতকাল দিনে ও রাতে বারবার পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। আজ সকালে পুলিশ জানিয়েছে, ঝুমনের বিরুদ্ধে আবার মামলা হয়েছে।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাঈদ জানান, ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা হয়েছে। এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ তাকে আদালতে নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত বছর হেফাজতে ইসলামের তৎকালীন নেতা মামুনুল হককে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে শাল্লা থানায় ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। ১৬ মার্চ ফেসবুকে দেওয়া ওই পোস্টের জেরে ১৭ মার্চ সকালে নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলা চালানো হয়। ঝুমন দাশকে ১৬ মার্চ রাতেই আটক করে পুলিশ। এরপর ২২ মার্চ শাল্লা থানায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে পুলিশ। এই মামলায় ২৩ মার্চ ঝুমনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ৬ মাস ১২ দিন কারাবাসের পর গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ কারাগার থেকে মুক্তি পান ঝুমন।

পূর্বকোণ/পিআর/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট