চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪

দেশে বন ও নদী দখলদারের সংখ্যা ২ লাখ ৩২ হাজার

পূর্বকোণ ডেস্ক

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ | ১০:২৮ অপরাহ্ণ

সারা দেশে বন ও নদী দখলদারদের সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৩২ হাজার। বন ও পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পান সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ১ লাখ ৬০ হাজার ৫৬৬ জনের দখলে আছে ২ লাখ ৫৭ হাজার ১৫৮ একর বনভূমি। ৮৮ হাজার ২১৫ জন সংরক্ষিত বনভূমি দখল করে রেখেছেন। তাঁদের জবর দখলে আছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৩ দশমিক শূন্য ৬ একর সংরক্ষিত বনভূমি।

সম্প্রতি সংসদীয় কমিটির কাছে উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংরক্ষিত বন দখল করে স্থায়ী স্থাপনাসহ শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা করেছেন ১৭২ জন। তাঁরা ৮২০ একর সংরক্ষিত বন দখল করে রেখেছেন। অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, যেমন হাটবাজার, দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কটেজ, ফার্ম, রিসোর্ট ইত্যাদি করে ৪ হাজার ৯১৪ একর বন দখল করেছেন ৩ হাজার ৩২৯ জন। সংরক্ষিত বনে ঘরবাড়ি করেছেন ৫৮ হাজার ৪০৭ জন। স্থায়ী স্থাপনা না করে কৃষিকাজ, বাগান ইত্যাদি করে বন দখলে রেখেছেন ২৬ হাজার ৩০৭ জন।

অন্যান্য শ্রেণিভুক্ত বনভূমির মধ্যে ৯০১ একর বনভূমি দখল করে শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা করেছেন ১২৭ জন। বনের জায়গায় অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, যেমন হাটবাজার, দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কটেজ, ফার্ম ইত্যাদি করে বন দখল করেছেন ২ হাজার ২২৭ জন। ঘরবাড়ি, বসতভিটা করেছেন ৫২ হাজার ৪২৯ জন। স্থায়ী স্থাপনা না করে বনের জমি দখলে রেখেছেন ১৭ হজার ৫৬৮ জন।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানায়, সারাদেশের ছোট নদী, খাল ও জলাশয়ের অবৈধ দখলদারের সংখ্যা ছিল ৪৫ হাজার ৯৫। এর মধ্য থেকে ২৩ হাজার ৮০২টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখনো বাকি রয়েছে অবশিষ্ট ২১ হাজার ২৯৩টি স্থাপনা। এসব স্থাপনা সরানোর জন্য বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও করোনার কারণে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

অপরদিকে নদীরক্ষা কমিশনের তথ্যানুযায়ী নদ নদী দখলদারদের সংখ্যা মোট ৪৯ হাজার ৭২৩। কমিশনের তথ্যানুযায়ী, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে দখলের কবলে পড়ে নদনদীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিপন্ন অবস্থায় পড়েছে কুমিল্লা জেলা। এ জেলায় নদনদীর জমি দখলদার ৫ হাজার ৯০৬ জন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ চট্টগ্রাম জেলা। এখানে দখলদার ৪ হাজার ৭০৪। তৃতীয় অবস্থানে নোয়াখালী জেলা। এখানে নদনদী দখলদার ৪ হাজার ৪৯৯ জন।

প্রতিবেদনে কক্সবাজারে দখলদার ২৭৮ জন, চাঁদপুরে ৫৩৮, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৬৭৮, ফেনীতে ৩০১, লক্ষ্মীপুরে ১ হাজার ১৫৯, খাগড়াছড়িতে ২৬, বান্দরবানে ৩৬৮, রাঙামাটিতে ৮০, ঢাকায় ৯৫৯, নারায়ণগঞ্জে ৭৮৫, মুন্সীগঞ্জে ৫৭, গাজীপুরে ১০৫, মানিকগঞ্জে ১ হাজার ৩৯৯, শরীয়তপুরে ২৬১, কিশোরগঞ্জে ১২৩, নরসিংদীতে ২৫০, মাদারীপুরে ৩৮৩, গোপালগঞ্জে ৫৪০, রাজবাড়ীতে ২৬, ফরিদপুরে ১ হাজার ৮৩৪, টাঙ্গাইলে ১ হাজার ৭৮৮, খুলনায় ২ হাজার ৮৬৮, নড়াইলে ৯৭, কুষ্টিয়ায় ৩ হাজার ১৩৪, মাগুরায় ১৩৩, ঝিনাইদহে ১৬৯, যশোরে ৬৯৪, সাতক্ষীরায় ৪৮৫, মেহেরপুরে ২২৪, চুয়াডাঙ্গায় ১ হাজার ২৮৩, বাগেরহাটে ২ হাজার ১৫৮, মৌলভীবাজারে ৪১৮, সিলেট ৩৩০, সুনামগঞ্জে ৬৯৬, হবিগঞ্জে ৬০০, ময়মনসিংহে ২ হাজার ৪৭৯, জামালপুরে ৭০৫, নেত্রকোনায় ১ হাজার ৩৮৬, শেরপুরে ২৭৮, রংপুরে ৩০, দিনাজপুরে ১ হাজার ৪৭, নীলফামারী ৭০৯, লালমনিরহাটে ১৩, কুড়িগ্রামে ৫২, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩০৮, পঞ্চগড়ে ১৩৩, গাইবান্ধায় ২৭৬, রাজশাহীতে ১৯৭, নাটোরে ১ হাজার ৫৪১, নওগাঁতে ১৯৫, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৫, পাবনায় ৩৬০, সিরাজগঞ্জে ২২৫, বগুড়ায় ৪০, জয়পুরহাটে ৮০, বরিশালে ২ হাজার ২৭২, বরগুনায় ১ হাজার ৫৫৪, পিরোজপুরে ১২৯, পটুয়াখালীতে ৯৯৯, ভোলায় ৪৫৪ এবং ঝালকাঠিতে ২০৩। মোট দখলকারী ৫৬ হাজার ৫৬ জন। কমিশনের সুপারিশের আলোকে এখন পর্যন্ত উচ্ছেদ করা হয়েছে ১৬ হাজার ৮৬৭ জনের স্থাপনা। সরকারের সংশ্নিষ্ট সংস্থা সেখানে দখল নিয়েছে। যার হার ৩০ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ।

এ বিষয়ে নৌ পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ একটি চলমান প্রক্রিয়া। এ উচ্ছেদ অব্যাহত থাকবে। যারাই নদী দখল করে রাখুক না কেনো তাদের উচ্ছেদ করা হবে। এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ চলছে। নদীকে তার নিজস্ব রূপ ফিরিয়ে দিতে আমরা কাজ করছি। সম্প্রতি জেলা প্রশাসকদের বৈঠকে নদী দখল কারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে সারা দেশে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। সূত্র: বার্তা ২৪

 

পূর্বকোণ/রাজীব/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট