চট্টগ্রাম শনিবার, ১১ মে, ২০২৪

বিরল অস্ত্রোপচারে জীবন বাঁচল ক্যান্সারের শেষ ধাপে থাকা আলবার্টের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৫ মার্চ, ২০২২ | ১২:৫৮ অপরাহ্ণ

ফুসফুসের ডাবল ট্রান্সপ্ল্যান্ট জীবন বাঁচাল ক্যান্সারের শেষ পর্যায়ে থাকা এক রোগীর। ৫৪ বছর বয়স্ক আলবার্ট খুরি ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন।

যখন তার অপারেশন করা হয়, তখন ক্যান্সার তার পুরো ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়েছে। এ পর্যায় থেকে কাউকে বাঁচিয়ে আনা এতদিন অসম্ভব হিসেবেই বিবেচনা করা হতো।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকরা সফলভাবে তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেছেন এবং আলবার্ট এখন ক্যান্সারমুক্ত। এ সফলতা আশা জাগাচ্ছে, ক্যান্সারের উচ্চ পর্যায়ে গিয়েও বেঁচে ফেরা সম্ভব। খবর আরব নিউজের।

শিকাগোর নর্থওয়েস্টার্ন মেডিসিন হাসপাতালে সাত ঘণ্টার ওই অস্ত্রেপচার চলে। গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বর নতুন ফুসফুস পান আলবার্ট। ৬ মাস পরও সেটি দারুণভাবে কাজ করছে এবং তার শরীরে আর ক্যান্সার ফিরে আসেনি।

এ সফল চিকিৎসা নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে বলা হয়, ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ফুসফুস প্রতিস্থাপন অত্যন্ত বিরল একটি ঘটনা। যাদের ক্যান্সার চতুর্থ ধাপে চলে গেছে, তাদের জন্য ফুসফুস প্রতিস্থাপনে কোনো চিকিৎসকই সায় দেবেন না।

তবে আলবার্টের ক্যান্সারটি যেখানে বাসা বেঁধেছিল, আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে তার জীবন বাঁচাতে পারব। এর আগের এ ধরনের অপারেশনের ক্ষেত্রে দেখা গেছে ক্যান্সার আবার ফিরে এসেছে। তবে প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকরা এখন ক্যান্সারকে ভালোভাবে বুঝতে শিখেছেন।

২০২০ সালের প্রথম দিকে শিকাগোর একটি সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন খুরি আলবার্ট। তখনই তিনি নানা শারীরিক সমস্যা টের পেতে শুরু করেন। প্রথম দিকে তিনি ধারণা করেছিলেন তার কভিড হয়েছে। কিন্তু এক সময় কাশির সঙ্গে রক্ত পড়তে শুরু করলে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। তখন তার ক্যান্সার ধরা পড়ে।

চিকিৎসকরা জানান, তিনি ক্যান্সারের প্রথম ধাপে রয়েছেন। কিন্তু সে সময় কভিডের ভয়াবহ সংক্রমণ চলায় তার চিকিৎসা শুরু হয়নি। জুলাই মাস নাগাদ তার ক্যান্সার দ্বিতীয় ধাপে পৌঁছে যায়। সে সময় তাকে কেমোথেরাপি দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু কয়েক দফা কেমোথেরাপির পরও টার্মিনাল লেভেলে চলে যায় ক্যান্সার।

আলবার্টকে তখন জানিয়ে দেওয়া হয়, তার বাঁচার আর কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে তার বোন তখন নর্থওয়েস্টার্ন হাসপাতালের আধুনিক চিকিৎসার খবর পান। ২০২০ সালেই ওই হাসপাতালে এক নারীর ডাবল লাং ট্রান্সপ্লান্টে সফল হন চিকিৎসকরা।

তবে আলবার্টই প্রথম ব্যক্তি যিনি ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার পরও তার ডাবল লাং ট্রান্সপ্লান্ট করে ওই হাসপাতাল। হাসপাতালে ভর্তির দুই সপ্তাহের মাথায় তার অপারেশন সম্পন্ন হয়।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার ফুসফুস থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ক্যান্সার কোষ ফেলতে হয়েছে। এটি ছিল উত্তেজনাপূর্ণ একটি রাত।

বর্তমানে আলবার্ট সম্পূর্ণ সুস্থ জীবন পার করছেন এবং নিয়মিত জিমে যাচ্ছেন। তার কোনো ওষুধও লাগছে না আর।

আলবার্ট বলেন, ‘আমার জীবন শূন্য থেকে আবার একশতে পৌঁছে গেছে। আমি এক বছর একবারের জন্যও হাসতে পারিনি। আর এখন আমি হাসি থামাতে পারি না।’ সূত্র: ডক্টর টিভি

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট