চট্টগ্রাম শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪

জীবন রক্ষায় জীবনদান

­চট্টগ্রামে ২৭ চিকিৎসক করোনার বলি হয়েছেন

৩ এপ্রিল, ২০২২ | ১২:৪৪ অপরাহ্ণ

ইমাম হোসাইন রাজু

চারদিকে কোভিড আতঙ্কে মানুষ যখন ঘরবন্দী, তখনও রোগীর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের ডা. এস এম জাফর হোসাইন রুমি। কে জানতো, চিকিৎসকদের মধ্যে করোনায় মারা যাওয়া চট্টগ্রামে প্রথম ব্যক্তিটিই হবেন তিনি। এ তরুণ চিকিৎসকের মতোই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দিনরাত রোগীদের সেবা দিয়েছিলেন ডা. মাহিদুল হাসান। কোভিড রোগী থেকে শুরু করে সাধারণ রোগীদেরও জীবন বাঁচাতে লড়েছেন প্রাণপণে। কিন্তু তাকেও হার মানতে হয়েছে করোনার কাছে। শুধু এ দুই তরুণ চিকিৎসকই নন, করোনার সাথে লড়াই করে অন্যদের জীবন বাঁচাতে যারা কাজ করে গেছেন তাদের মধ্যে গেল দুই বছরে হারাতে হয়েছে ২৭ চিকিৎসককে। আলোচিত এ মৃত্যুগুলো এখনও কাঁদায় পরিবার, স্বজন ও সহপাঠীদের।

যে মৃত্যুগুলো আজও কাঁদায়
চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে ২০২০ সালের ২৫ মে প্রথম মারা যান মা ও শিশু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. এস এম জাফর হোসাইন রুমি, ৩ জুন চট্টগ্রাম মেরিন সিটি মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এহসানুল করিম, ৪ জুন চমেক হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. মাহিদুল হাসান, ৮ জুন চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আবু বকর সিদ্দিক, ১২ জুন (উপসর্গ নিয়ে) ডা. আরিফ হাসান, ১৪ জুন জেমিসন রেড ক্রিসেন্ট মাতৃসদন হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সাদেকুর রহমান, ১৭ জুন মেট্রোপলিটন হাসপাতালের সিনিয়র আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. নুরুল হক, ১৮ জুন ডা. জান্নাতুল নাঈম জিনিয়া, ২১ জুন নাক-কান-গলারোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ললিত কুমার দত্ত, ২৪ জুন চমেক হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সমিরুল ইসলাম বাবু ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. শহিদুল আনোয়ার, ২৬ জুন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অবসরপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ হোসেন, ১৪ জুলাই মা ও শিশু হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. সুলতানা লতিফা জামান আইরিন, ২০ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতালের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. নজরুল হক, ৩ আগস্ট চমেক হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, ১৩ অক্টোবর বন্দর হাসপাতালের চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. কাউসার আহমদ মজুমদার, ৫ নভেম্বর ডা. মৌসুমি রায় এবং ২১ ডিসেম্বর মারা যান চমেক মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রভাষক ডা. হাসান মাহমুদ।

২০২১ সালে হারাতে হয়েছে ৯ চিকিৎসককে। তাদের মধ্যে ১৪ মার্চ মৃত্যু হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ও চমেক কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সুলতান উল আলমের। ১৯ মার্চ মৃত্যু হয় ডা. সেখ কামাল উদ্দিন নামে আরেক চিকিৎসকের। ৯ এপ্রিল করোনার কাছে হার মানতে হয় মানবিক ডাক্তারখ্যাত গরিবের চিকিৎসক বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল লতিফকে। ৮ মে মারা যান শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. গোলাম মর্তুজা হারুন। ২৯ মে করোনার কাছে হার মানতে হয় ডা. ফরিদ খানকে। ৩০ মে মৃত্যু হয় চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের শিশু রোগ বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ফরিদুল আলমের। ২৫ জুন মৃত্যু হয় চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা. মীর দিনার জেবিনের। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় করোনার সঙ্গে লড়াই করে হার মানেন তিনি। ৩০ জুন মারা যান চমেকের ১৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ডা. মোস্তাফিজুর রহমান। ১৩ জুলাই মারা যান চমেকের হৃদরোগ বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক প্রফেসর ডা. এস এম মোস্তফা কামাল।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট