চট্টগ্রাম শনিবার, ১১ মে, ২০২৪

চট্টগ্রাম কাস্টমস : ৬ মাসে প্রবৃদ্ধি ২৬.৬১%

সারোয়ার আহমদ 

৩ জানুয়ারি, ২০২২ | ১২:৫৮ অপরাহ্ণ

সারোয়ার আহমদ 

 

দেশের সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায়কারী শুল্ক স্টেশন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের অর্ধেক সময়ে ২৬ দশমিক ৬১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এই অর্ধ অর্থবছরে (জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত) চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে রাজস্ব আহরণ হয় ২৭ হাজার ৪৩০ কোটি ১১ লাখ টাকা। এর আগের অর্থবছরের (২০২০-২১) একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ২১ হাজার ৬৬৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা। অর্থাৎ গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ৫ হাজার ৭৬৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বেশি আদায় হয়েছে। এর মাধ্যমে অর্থবছরের অর্ধ সময়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৬১ শতাংশ।

প্রবৃদ্ধি প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. ফখরুল আলম পূর্বকোণকে বলেন, গত অর্থবছরের সময়ে ছিল করোনার অতিমারীর সময়। সে সময় শিল্প-কারখানাগুলো সীমিত পরিসরে তাদের কার্যক্রম চালিয়েছিল। তাই আমদানি কম হয়েছিল এবং রাজস্ব আদায়ও কম হয়েছিল। কিন্তু চলতি অর্থবছরে আবার দেশের ব্যবসা বাণিজ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমদানি বাড়েছে, রাজস্ব আদায়ও বেড়েছে।

তিনি আরো বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়ার আরেক কারণ হলো আগের তুলনায় আমদানি-রপ্তানিতে অনিয়ম কমে যাওয়া। আগে এক একটি অনিয়মে বিপুল অর্থ জড়িত থাকতো। যার কারণে বড় অংকের রাজস্ব ফাঁকি হতো। কিন্তু এখন অনিয়ম কমে গেছে। যার কারণে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে ৬মাসে রাজস্ব আহরণে রেকর্ড গড়েছে।

তিনি আরো বলেন, আয় বাড়ার আরো বড় কারণ হলো কাস্টমসের অনিয়মের দ-বিধিতে পরিবর্তন আনা। আগে অনিয়ম করলেও কম শাস্তি হতো। যার কারণে অসাধু ব্যক্তিরা বার বার অনিয়ম করার সাহস পেতো। কিন্তু এখন অনিয়মের কারণে ন্যূনতম দ্বিগুণ জরিমানা করা হয়। যা ক্ষেত্র বিশেষে অনিয়মের মাত্রা হিসেবে সর্বোচ্চ চারগুণ করা হয়। এছাড়া বন্ড ব্যবস্থায় কঠোর অবস্থানের কারণেও রাজস্ব ফাঁকি কমে গেছে। আগে বন্ড সুবিধায় অনেকে কমার্শিয়াল পণ্য আমদানি করে খালাস করতো। এতে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হতো। করা নজরদারির কারণে এই সুযোগ আর কেউ পাচ্ছে না। এসব কারণে অপরাধের মাত্রা কমে গিয়ে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব আদায় চিত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে থাকলেও চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের সর্বশেষ মাস ডিসেম্বরে লক্ষ্যমাত্রার আশানুরূপ রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয়নি। চলতি অর্থবছরের অক্টোবরে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। কিন্তু এই মাসে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৪ হাজার ৮৪২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আহরণে ঘাটতি রয়েছে ৮৬০ কোটি ৩ লাখ  টাকা। প্রসঙ্গত, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৪ হাজার ৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে অর্ধ বছর শেষে আহরণ হয়েছে ২৭ হাজার ৪৩০ কোটি ১১ লাখ টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসকে আগামী ৬ মাসে আরো ৩৬ হাজার ৬৪৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকা আহরণ করতে হবে।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন