চট্টগ্রাম সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিশ্বকে বদলে দিয়েছেন যে বিজ্ঞানী

মরিয়ম আকতার

২৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৩:০৬ পূর্বাহ্ণ

নেহাতই এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া মাইকেল ফ্যারাডেকে মাঝে মাঝে সামান্য একটি রুটি দিয়েও পুরো সপ্তাহ পার করতে হতো ফ্যারাডের। সেই ফ্যারাডেই একটা সময়ে এসে পৃথিবীর রূপ পাল্টে দিয়েছেন!

যুক্তরাজ্যের নিউইংটন বাটস অঞ্চলে এক দরিদ্র পরিবারে ১৭৯১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে। কামার পিতা এবং গৃহিণী মাতার চার সন্তানের সংসারে ফ্যারাডের অবস্থান

তৃতীয়। জন্মের পর থেকেই অভাবের সাথে যুদ্ধ শুরু হয় ফ্যারাডের। ফ্যারাডের মা সবসময় তাকে সঙ্গ দিতেন। মাঝে মাঝে সামান্য একটি রুটি দিয়ে পুরো সপ্তাহ পার করতে হতো ফ্যারাডের।

১৮১৩ সালের ১ মার্চ ফ্যারাডে রয়্যাল ইন্সটিটিউটের গবেষণাগারে যোগ দেন। নতুন কর্মস্থলে যোগের পর ফ্যারাডের জীবন থেকে দারিদ্র্যের অভিশাপ দূর হয়।
ফ্যারাডে বইয়ের দোকানের পেছনে একটি ছোট গবেষণাগার গড়ে তুলেন। এরপর তৎকালীন অন্যতম প্রভাবশালী বিজ্ঞানী হামফ্রে ডেভির তত্ত্ব নিয়ে কাজ শুরু করেন তিনি। নির্বোধ ফ্যারাডের প্রতিভা বিকশিত হতে থাকে। কয়েক মাসের ভেতর তিনি প্রায় ৩০০ পৃষ্ঠার গবেষণাপত্র তৈরি করে ফেলেন।
পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়ন দুই বিষয়ের সমান আগ্রহী এবং প-িত ছিলেন মাইকেল ফ্যারাডে। বিজ্ঞানী হিসেবে তার প্রথম আত্মপ্রকাশ হয় রসায়নবিদ হিসেবে। ১৮২০ সালে তিনি কার্বন এবং ক্লোরিনের সমন্বয়ে গঠিত যৌগ প্রস্তুত করেন ফ্যারাডে। কয়েকদিনের মধ্যে চারিদিকে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।
ফ্যারাডে কৌতূহলবশত সেই তেল নিয়ে গবেষণা করতেন। ১৮২৫ সালে ফ্যারাডে সেই তেলের ভেতর এক গুপ্তধনের সন্ধান লাভ করেন। সেই গুপ্তধনের নাম ছিল (বেনজিন)। রসায়নের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত যৌগের তালিকায় বেনজিনে’র নাম প্রথমদিকে থাকবে সেটা নির্দ্বিধায় বলা যায়।
এরপর ফ্যারাডে তার সবচেয়ে পছন্দের বিষয় ‘বিদ্যুৎ’ এবং ‘চুম্বক’ নিয়ে কাজ শুরু করেন। তিনি চুম্বকের বলরেখা আবিষ্কার করেন। এরপর তিনি একটি বৈদ্যুতিক তারের উপর একটি চুম্বকের প্রভাব নিয়ে কাজ শুরু করেন। একদিন তিনি একটি কু-লাকৃতির তারের সাথে ব্যাটারির সংযোগ দিলেন। পুরো বর্তনীর সাথে একটি গ্যালভানোমিটার যুক্ত করে দিলেন। এরপর কু-লীর ভেতর একটি চুম্বক প্রবেশ করান। সাথে সাথে গ্যালভানোমিটারের কাঁটা কেঁপে উঠে। তিনি ফের চুম্বকটি বাইরে বের করে আনার সময় কাঁটা বিপরীত দিকে কেঁপে উঠলো। তিনি বিস্মিত হয়ে গেলেন। তিনি এই ধর্মের নাম দিলেন তড়িৎ-চুম্বকীয় আবেশ (ঊষবপঃৎড়সধমহবঃরপ রহফঁপঃরড়হ)।

জীবিত থাকা অবস্থায় মাইকেল ফ্যারাডেকে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো যে ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবি- তে তার কবর দেয়া হবে। সেখানে ব্রিটেনের রাজা-রাণীদের কবর দেয়া হয়। সেখানে আইজ্যাক নিউটনের মত বিজ্ঞানীর মৃতদেহ রাখা আছে। তিনি সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। ৭৫ বছর বয়সে, ১৮৬৭ সালের আগস্টের ২৫ তারিখে, মারা যাওয়ার পর তাকে লন্ডনের হাইগেইট সেমেটারিতে কবর দেয়া হয়। সেখানে স্ত্রী সারাহ এবং তার কবর পাশাপাশি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট