চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪

ভ্যাকসিন জটিলতায় প্রবাসীরা

অনলাইন ডেস্ক

২৩ মে, ২০২১ | ৪:২৩ অপরাহ্ণ

করোনা মহামারি যুদ্ধে ভ্যাকসিন জটিলতায় পড়েছেন প্রবাসীরা। যে দেশেই যাক প্রবাসীদের জন্য ভ্যাকসিন সনদ নেয়া বাধ্যতামূলক। নাহয় নিজ খরচে ৭ থেকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে।

জনশক্তি খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন অনেক দেশেই কর্মী যাচ্ছে না। সামনে এখানে জনশক্তি যাওয়া শুরু হলে নতুন জটিলতা তৈরি হবে। কারণ সামনে আর কোনো দেশই টিকা ছাড়া জনশক্তি নেবে না। তাই প্রবাসীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেয়ার পরামর্শ তাদের।

ভ্যাকসিন কার্যক্রমের প্রথম দিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছিলেন, যারা বিদেশ যেতে চাইবেন, তাদের ভ্যাকসিনের ডবল ডোজের সার্টিফিকেট নিয়ে যেতে হবে। প্রবাসীরা যে দেশে যাবেন, সে দেশের কর্তৃপক্ষ এটা দেখতে চাইবে। মন্ত্রীর এমন বক্তব্যের পরও প্রবাসীরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন কেউ কেউ। অনেকে বলছেন, অন্যান্য পেশার মানুষ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন পেলেও যারা দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখছে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। সরকারের কাছে তারা অগ্রাধিকারভিত্তিতে ভ্যাকসিন পেতে চান। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন সংকটে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা) ও অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার আগে বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রতি মাসে ৬০ হাজারের কাছাকাছি শ্রমিক বিদেশ যেতেন। বর্তমানে এর সংখ্যা কয়েক হাজারে ঠেকেছে। যেতে চাইলেও করোনার কারণে যেতে পারছেন না। অনেকে দেশে এসে আটকা পড়ছেন। তবে সীমিত পরিসরে ফ্লাইট চালু হওয়ায় কিছুসংখ্যক প্রবাসী ফিরে যেতে পেরেছেন।

এবিষয়ে জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান জেপি ইন্টারন্যাশনালের কর্ণধার জামাল হোসেন জানান, করোনার কারণে দেশ থেকে প্রবাসী কর্মীরা যেতে পারছেন না। সীমিত পরিসরে কিছু দেশে লোকজন পাঠাতে করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট লাগছে। আবার ভ্যাকসিনের সনদ চাওয়া হচ্ছে। সমস্যা হলো দেশের অনেক প্রবাসী ভ্যাকসিন নিতে পারেনি। অনেকে প্রথম ডোজ নিলেও দ্বিতীয় ডোজ সম্পন্ন করতে পারেনি। এতে দেখা দিয়েছে নানা ধরনের সংশয়। তাই সরকারের উচিত দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে সকল প্রবাসীদের ভ্যাকসিনের আওতায় নিয়ে আসা।

বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (বায়রা)-এর সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান জানান, বর্তমানে বিদেশ গমনেচ্ছুক ৭০ থেকে ৮০ হাজার কর্মীর ভিসা প্রসেসিংয়ের মধ্যে আছে। এদের বেশির ভাগ এখনো ভ্যাকসিন পায়নি। খুব অল্পসংখ্যক প্রবাসী ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিয়েছেন। এরা দ্বিতীয় ডোজ কখন নিতে পারবে তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। ইতিমধ্যে সৌদি সরকার ভ্যাকসিন ছাড়া কর্মী নেয়ার ক্ষেত্রে কঠোর হয়েছে। ভ্যাকসিন ছাড়া করোনার নেগেটিভ সনদ নিয়ে গেলেও নিজের অর্থে সাত থেকে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়। এতে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ প্রায় লক্ষাধিক টাকা অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হচ্ছে প্রবাসী কর্মীদের। তবে যারা ভ্যাকসিনের ডোজ সম্পন্ন করেছেন তাদের শুধু নেগেটিভ রিপোর্ট নিয়ে গেলেই হয়। বিশ্বের অনেক দেশেই এখন প্রবেশ বন্ধ। খুলে দিলে তারাও করোনার ভ্যাকসিন দেয়া ছাড়া কোনো কর্মীকে তাদের দেশে ঢুকতে দিবে না। বিষয়টি নিয়ে সরকারের কাছে একাধিক বার দাবি জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিলেও তবে তা এখনো কার্যকর হয়নি। সবার একটাই চাওয়া, দেশে নতুন করে ভ্যাকসিন আসা মাত্র প্রবাসীদের অগ্রাধিকার দেয়া হোকযাতে তাদের ভ্যাকসিন জটিলতায় পড়তে না হয়।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট