চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৮ জুলাই, ২০২৫

সর্বশেষ:

নবীন শিক্ষার্থীদের চবি শিবিরের প্রতীকী সিট বণ্টন
প্রতিবাদে চবি শিবিরের প্রতীকী সিট বন্টন

নবীন শিক্ষার্থীদের চবি শিবিরের প্রতীকী সিট বণ্টন

চবি সংবাদদাতা

২ জুলাই, ২০২৫ | ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের প্রশাসন কর্তৃক সিট বরাদ্দ না দেওয়ার প্রতিবাদে প্রতীকী সিট বণ্টন কর্মসূচি পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা।

 

মঙ্গলবার (১ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।

 

এ সময়ে শাখার অফিস সম্পাদক মোহাম্মদ পারভেজ আইসিটি সেল ও শাখার সাহিত্য সম্পাদক সাঈদ বিন হাবিব প্রভোস্টের প্রতীকী দায়িত্ব পালন করেন। পরে তারা নবীন শিক্ষার্থীদের মাঝে উপাচার্যের বাংলোতে ও শিক্ষক ক্লাবে প্রতীকী সিট বরাদ্দ দেন।

 

এর আগে গত রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কারে ৭ দফা দাবি জানায় সংগঠনটি। দাবিগুলো হলো- শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং আবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অনাবাসিক সকল শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা প্রদান করতে হবে, সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে অনতিবিলম্বে সেশনজট নিরসন এবং শিক্ষার আধুনিকায়ন নিশ্চিত করতে হবে, পর্যাপ্ত ও নিরাপদ যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, অনতিবিলম্বে চাকসু নির্বাচন দিতে হবে, দ্রুত সময়ের মধ্যে টিএসসি স্থাপন, সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম নির্মাণ, কেন্দ্রীয় মসজিদ পুনর্নির্মাণ এবং আবাসিক হল ও অন্যান্য স্থাপনাসমূহ সংস্কার করতে হবে, জুলাই বিপ্লব ও ফ্যাসিবাদী শাসনামলে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার এবং জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করতে হবে এবং বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে অবৈধ নিয়োগের সাথে জড়িত সকলের বিচার এবং নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকুরিচ্যুত করতে হবে।

 

৭ দফা বাস্তবায়নে সংগঠনটির পক্ষ থেকে ১০ দিনের সংস্কার ক্যাম্পেইন ঘোষণা করা হয়। তারই অংশ হিসেবে আজ প্রতীকী সিট বণ্টন কর্মসূচি পালন করে নেতাকর্মীরা। আগামী বৃহস্পতিবার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে মতবিনিময়, ৭ জুলাই গণ-স্বাক্ষর কর্মসূচি এবং ১০ জুলাই ৭ দফা দাবিতে মানববন্ধন করবে সংগঠনটি।

 

সিলেট থেকে আগত ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি সিলেট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। আজ আমাদের উদ্বোধনী ক্লাস। পাঁচদিন আগে ক্যাম্পাসে এসেছি। হলে তো আমাদের থাকার কোনো ব্যবস্থা নাই। বাধ্য হয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে হচ্ছে। বাসা ভাড়া নিতে গিয়ে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। আমি নতুন কিছুই চিনি না! বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিৎ আবাসন সুবিধা বাড়ানো, যাতে দূর-দূরান্ত থেকে আমাদের মতো নতুন যারা ভর্তি হয় তারা যেন ভোগান্তির শিকার না হয়।

 

প্রতীকী সিট বণ্টন কর্মসূচিতে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী বলেন, আজ নতুন বর্ষের ক্লাস শুরু হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে ভর্তি হয়। প্রশাসন তাদের থাকার কোনো জায়গা দিতে পারছে না। নবীনদের কাছে নতুন জায়গা, নতুন ভাষা সবকিছুই নতুন। তাদের থাকার জায়গা খুঁজতে গিয়ে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

 

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ৬ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা রয়েছে। বাকি ২২ হাজার শিক্ষার্থীর থাকার কোনো ব্যবস্থা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নাই৷ আমরা বিভিন্ন সময়ে প্রশাসন এ সমস্যা সমাধানের জন্য বলেছি। আজ প্রতীকী সিট বণ্টনের মাধ্যমে আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রশাসন যেন দ্রুত আবাসন সমস্যা সমাধানের জন্য বহুতল হল নির্মাণের রোডম্যাপ দেয়। নাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে যাবো।

 

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য আলাওল হলে ২৬০টি, এএফ রহমান হলে ২৫৮টি, শাহ্‌জালাল হলে ৪৭৫টি, শাহ্‌ আমানত হলে ৬৩২টি, সোহ্‌রাওয়ার্দী হলে ৩৭৫টি, শহীদ আব্দুর রব হলে ৫০৯টি ও মাস্টারদা সূর্যেসন হলে ১৭৬টি, শহীদ ফরহাদ হোসেন হলে ৭০০টি এবং ৩২০টি আসন রয়েছে। ছাত্রী হলগুলোর মধ্যে শামসুন নাহার হলে ৪৮১টি, প্রীতিলতা হলে ৫৩১টি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হলে ৫০৮টি, জননেত্রী শেখ হাসিনা হলে ৭৫০টি, মাস্টারদা সূর্যেসন হলের ছাত্রী অংশে ৪০টি আসন রয়েছে।

 

পূর্বকোণ/জুনায়েদ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট