দেশের বাণিজ্য ব্যবস্থাপনা ও পণ্য আমদানি-রপ্তানির প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ, দ্রুত ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো (বিএসডব্লিউ) প্ল্যাটফর্মে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগামী ১ জুলাই মঙ্গলবার থেকে দেশের ১৯টি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানের বা রেগুলেটরি অথরিটির ইস্যুকৃত ছাড়পত্র, সার্টিফিকেট কিংবা পারমিট অনলাইনে বিএসডব্লিউ প্ল্যাটফর্মে ইনপুট না থাকলে সেসব আবেদন আর গ্রহণযোগ্য হবে না। ম্যানুয়াল বা কাগজপত্রভিত্তিক কোনো ছাড়পত্র এই সময়ের পর কার্যকর বিবেচিত হবে না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অধীনস্থ বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে গত ১৯ জুন এক পরিপত্র জারি করে ঘোষণা দিয়েছিল। আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী কাস্টমস ও বাণিজ্য প্রক্রিয়াকে ডিজিটালাইজ করার অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে সময়, খরচ ও জালিয়াতি কমবে এবং ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
যে ১৯ প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র বিএসডব্লিউ’তে বাধ্যতামূলক ইনপুট করতে হবে সেগুলো হলো- ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, বিএসটিআই (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন), প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ উইং, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পারমাণবিক শক্তি কমিশন, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি, বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথরিটি, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস, পেট্রোবাংলা, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, বস্ত্র অধিদপ্তর, তথ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যা ব্যবসায়িক সেবাপ্রদানকারী বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করে আমদানি-রপ্তানি ও কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সকে সহজ ও দ্রুত করতে সহায়তা করে। এটি একক প্ল্যাটফর্ম থেকে একাধিক ছাড়পত্রের জন্য আবেদন, যাচাই ও অনুমোদনের সুযোগ দেয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-সভাপতি এ এম মাহবুব চৌধুরী বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ আমদানি-রপ্তানি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনবে। তবে সফল বাস্তবায়নের জন্য সকল প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়ানো এবং ব্যবসায়ীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা জরুরি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন- যেসব আমদানি/রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এখনো বিএসডব্লিউ ব্যবহার করছেন না, তাদের দ্রুত এই প্ল্যাটফর্মে রেজিস্ট্রেশন করে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র অনলাইনে প্রক্রিয়াকরণের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। কারণ এটি ছাড়া এখন বিকল্প নেই। নিজেদের স্বার্থেই ব্যবসায়ীদের এই প্লাটফর্মে দ্রুত চলে আসতে হবে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের অংশ হিসেবে বিএসডব্লিউ প্ল্যাটফর্মকে বাধ্যতামূলক করার এই সিদ্ধান্ত দেশের ট্রেড ফ্যাসিলিটেশনকে আরও উন্নত করবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। সময়মতো অনলাইন ইনপুট নিশ্চিত না করলে ছাড়পত্র গ্রহণে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, যা এড়াতে আগেভাগেই প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পূর্বকোণ/ইবনুর