চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫

সর্বশেষ:

শুল্ক-কর কমলেও দাম চড়া ফলের

আরাফাত বিন হাসান

৬ এপ্রিল, ২০২৫ | ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ

চলতি বছরের শুরু থেকেই চড়া ফলের বাজার। এরমধ্যে গেল রমজানের শেষ দিকে খুচরা পর্যায়ে আরও ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে।

 

আমদানিতে রমজানে কয়েক দফায় ১৫ শতাংশ শুল্ক-কর কমানো হলেও ঈদ ঘিরে এখনও বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে তাজা ফল। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের ঠিক আগে শুল্ক-কর কমানোর সুফল এখনও পাননি তারা। আবার ঈদে বন্দরে শুল্কায়ন বন্ধ থাকায় ফলের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, তাতে বেড়েছে দাম।

 

গতকাল শনিবার নগরের অক্সিজেন, দুনম্বর গেট, চকবাজার, বহদ্দারহাট, আগ্রাবাদ, কাজীর দেউড়িসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, খুচরায় প্রায় সব ধরনের তাজা ফলের দামই ৩০০ টাকার বেশি। এরমধ্যে মানভেদে প্রতিকেজি আপেল ৩৮০-৪৫০, নাশপাতি ৩৫০, কমলা ৩২০-৩৫০, মাল্টা ৩৩০-৩৫০, আঙ্গুর ৩৮০-৪২০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগেও এসব ফলের মধ্যে আপেল ৩০০-৩৫০, কমলা ২৭০-৩২০, মাল্টা ২৮০-৩৩০, আঙ্গুর ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। অর্থাৎ প্রতিকেজি ফলে দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা।

 

কয়েক দিনের ব্যবধানে ফলের এত বেশি দাম বৃদ্ধির জন্য আমদানিকারক ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। নগরের অক্সিজেন এলাকার খুচরা ফল ব্যবসায়ী মো. সাগর উদ্দিন বলেন, ২৬ রমজানের পর পাইকারিতে ফলের দাম বেশি বেড়ে গেছে। আগে আমরা ১৮ কেজি ওজনের আপেলের কার্টন কিনতাম ৫ হাজার টাকায়, এখন কিনতে হচ্ছে ৮ হাজার টাকায়। এরকম প্রায় সব ফলের দামই বেড়েছে। পাইকারিতে দাম বেশি হওয়ায় আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।

 

এদিকে চড়া বাজারের মধ্যেই বছরের শুরুতে শতাধিক পণ্য ও সেবার পাশাপাশি তাজা ফল আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করেছিল সরকার। তাতে আমদানি শুল্ক, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক, আয়কর, অগ্রিম আয়করসহ সব মিলিয়ে তাজা ফল আমদানিতে শুল্ক-কররের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৩৬ শতাংশে। পরে ফল আমদানিকারকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গেল মার্চে দুই দফায় ১৫ শতাংশ কমানো হয় শুল্ক-কর। শুরুতে ১০ মার্চ ফল আমদানিতে বিদ্যমান অগ্রিম আয়করের হার ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়। পরবর্তীতে ১৬ মার্চ সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ কমায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। একই দিন পৃথক প্রজ্ঞাপনে আমদানি পর্যায়ে আরোপিত ৫ শতাংশ আগাম কর পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়।

 

ফলের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ফল ব্যবসায়ী সমিতি-ফলমণ্ডির সাধারণ সম্পাদক মো. তৌহিদুল আলম বলেন, আমরা রমজানের এক মাস আগে থেকে শুল্ক-কর কমানোর দাবি করেছিলাম। কিন্তু কমানো হয়েছে রমজানের মাঝামাঝি। তা কার্যকর হয়েছে শেষদিকে। তখন আর কিছু করার সুযোগ ছিল না। এরমধ্যে ঈদের বন্ধে ফলের শুল্কায়ন করা যায়নি। তাই বন্দর থেকে ফল খালাস করা যায়নি। এতে বাজারে চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কমে গিয়েছিল। তাই দাম বেড়ে গেছে।

 

শিগগির কমবে দাম, আশ্বাস ব্যবসায়ীদের :

 

বন্দরে শুল্কায়ন শুরুর পর থেকেই ফলের দামের বড় পতন হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতা মো. তৌহিদুল আলম। তিনি জানান, এখন বন্দরে শুল্কায়ন শুরু হয়েছে। এরমধ্যে শনিবারেই তাজা ফলের দামের বড় পতন ঘটেছে। শনিবার প্রতি কার্টন (১৮ কেজি) আপেলের দাম দেড় হাজার টাকা কমে সাড়ে ৫ হাজার, প্রতি কার্টন (৯ কেজি) নাশপাতির দাম ৫০০ টাকা কমে ২ হাজার ৩০০ এবং প্রতি কার্টন (৯ কেজি) মাল্টা ৭০০ টাকা কমে ৩ হাজার ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

 

তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে ফল বোঝাই ৭ থেকে ৮টি জাহাজ অপেক্ষমাণ রয়েছে। এসব ফল বাজারে আসলে দাম কমে আসবে।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট