চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫

সর্বশেষ:

ঈদ উৎসবে নির্বাচনী উত্তাপ বিএনপি-জামায়াতের

মোহাম্মদ আলী

৫ এপ্রিল, ২০২৫ | ১২:২৬ অপরাহ্ণ

ঈদ উৎসবের পাশাপাশি বিরাজ করছে নির্বাচনী উত্তাপ। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এ উত্তাপ চলছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী ও নেতারা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে ঈদ উদযাপনের পাশাপাশি নির্বাচনী প্রচার চালিয়েছেন। এবারের ঈদ উৎসবে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা নেমে পড়েছেন গণসংযোগেও। ঈদ শুভেচ্ছার আড়ালে চলেছে ভোটারদের কাছে যাওয়ার প্রতিযোগিতা। নেতাদের ছবিসম্বলিত ব্যানার, পোস্টারে বর্ণিল হয়ে গেছে গ্রামের রাস্তাঘাট, হাট-বাজার।

 

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী এবং মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ব্যস্ত দিন পার করছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ সংসদীয় এলাকায় যোগ দিচ্ছেন নানা কর্মসূচিতে। নেতাদের বাসা-বাড়ি, বৈঠকখানা, বাগানবাড়িতে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের ভিড়। সবখানেই চলছে নির্বাচন নিয়ে আলোচনা।

 

এর আগে পবিত্র রমজান মাসজুড়ে চলেছে ইফতার মাহফিলের মতো সামাজিক অনুষ্ঠান। সেখানে বিএনপি-জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। এই ধারাবাহিকতায় ঈদ উৎসবেও চলেছে ব্যাপক গণসংযোগ। ঈদজামাতে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি নিজেদের বাড়িতে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নানা আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে নিশ্চিত করা হয়েছে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণও।

 

দেড় দশকের বেশি সময় পর এবার নির্ভয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন চট্টগ্রামের বিএনপি-জামায়াতের নেতারা। নগরীর কাট্টলীতে পারিবারিক ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। ঈদের দিন কাট্টলীতে এবং পরদিন তার মেহেদীবাগের বাসায় হাজারও নেতাকর্মীর মিলনমেলা বসে। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে নিয়ে ঈদ উৎসবে শরিক হন দলের নেতাকর্মীরা।

 

এছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, লায়ন আসলাম চৌধুরী, এসএম ফজলুল হক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনসহ দলের নেতারা নিজ নিজ এলাকায় ঈদের জামাতে শরিক হন। এরপর তাদের অনেকে গ্রামের বাড়িতে দলের নেতাকর্মী ও এলাকার মানুষের জন্য আয়োজন করেন মেজবানও।

 

এদিকে, নগরীর জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রধান ঈদজামাতে একসঙ্গে শরিক হয়েছিলেন বিএনপি ও জামায়াতের স্থানীয় শীর্ষনেতারা। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, নগর জামায়াতের আমির শাহজাহান চৌধুরী, নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, দক্ষিণ জেলার সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, নগর জামায়াতের নায়েবে আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুজ্জামান হেলালী, তরুণ বিএনপি নেতা সাঈদ আল নোমান প্রমুখ।

 

তাছাড়া নগরীতে যারা ঈদের জামাতে শরিক হয়েছেন তারাও জামাত শেষে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ছুটে যান। তাদের বাসাবাড়িতে আয়োজন করা হয় নানা আপ্যায়নের। এসব আয়োজনে নেতাদের কাছে পেয়ে উচ্ছ্বাসিত হয়ে পড়েন কর্মী-সমর্থকেরা।

 

জানতে চাইলে নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, প্রায় দেড় দশক পর মানুষ শান্তি আর স্বস্তিতে ঈদ উদযাপন করতে পেরে খুব খুশি। ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার সরকার মানুষের ভোটের অধিকারসহ সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। এবার নির্ভয়ে মানুষ বিশেষ করে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদ উৎসবে শামিল হতে পেরেছে। এবার ঈদের আমেজের সাথে সম্ভাব্য প্রার্থীরাও ভোটের প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট