হাটহাজারী পৌরসদরের রেলস্টেশনের রেলপথের উপরেই সপ্তাহের রবি ও বৃহস্পতিবার বসে পশুর হাট। এছাড়া পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাত দিন বাজার বসছে। এতে ট্রেন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকির পাশাপাশি যেকোন মুহুূর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ থেকে কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়াই রেলপথের উপরেই বাজার বসছে। স্টেশন মাস্টারের আপত্তি সত্ত্বেও বাজার ইজারাদার নিয়মিত হাট পরিচালনা করছেন।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসদরের হাটহাজারী স্টেশনের রেললাইনেই বসছে পশুর হাট। রেললাইনের উপর অবৈধভাবে পশুর হাট বসিয়ে বছরের পর বছর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ইজারাদার। বিক্রেতারা সিগন্যাল, রেলের স্লিপার বা পয়েন্টের চাবির সঙ্গে গরু বেঁধে বিক্রি করছেন। অনেকে গরু, ছাগল নিয়ে রেললাইনের ওপরেই বসে থাকছেন। ট্রেন এলে শুরু হয় ছুটোছুটি। এতে করে যেকোন মুহুূর্তে বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সংশ্লিষ্টরা দাবি করছেন এতে করে ট্রেন চলাচলে মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে।
সুত্রে জানা যায়, হাটহাজারী স্টেশন এলাকায় প্রতি রবিবার ও বৃহস্পতিবার স্থানীয় লোকজন ও বাজার কমিটির সমম্বয়ে গরু বেচাকেনার জন্য গরুর হাট পরিচালিত হয়। স্টেশন এলাকার বাউন্ডারি ও সীমানা প্রাচীর না থাকায় বাজারে ক্রয় বিক্রয় করার জন্য নিয়ে আসা গরু রেল লাইনের উপর অবস্থান করে। রেল লাইনে গরুর হাট বসার জন্য রেল লাইনে দেওয়া পাথর সমূহ রেল লাইন হতে সরে যাচ্ছে এবং ট্রেন চলাচলের ঝুঁকি বৃদ্ধি পাচ্ছে। রেল পথের নিরাপত্তার স্বার্থে গরুর হাট না বসানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় প্রকৌশলী/২ কে জানানো হয়েছে।
গরু বিক্রেতা করিম ও ক্রেতা মোরশেদ আলম বলেন, রেললাইনের উপর পশুর হাট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ইজারাদার ও পশুর হাট আয়োজকরা এখানে স্থান দিয়েছেন, ঝুঁকি জেনেও কেউ কিছু বলছেন না। তাছাড়া ট্রেন আসার শব্দ অনেক সময় শোনাও যায় না। এখান থেকে গরু বেচাকেনা সরিয়ে দেওয়া উচিত বলে তারা দাবি করেন।
অভিযোগ বিষয়ে পৌরসভার হাটহাজারী বাজার ইজারাদার আবদুল মাবুদ আইয়ুবের সাথে বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা ৫৪মিনিটে ০১৮১৭৭৮৮২০৯ নাম্বারে ফোন করলে পরে কথা বলবে বলে ফোনটি রেখে দেয়।
হাটহাজারী রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার জয়নাল আবেদীন বলেন, এখানে গরুর বাজার না করার জন্য বার বার নিষেধ করেছি। তাছাড়া রেলওয়ে এলাকায় সব সময় ১৪৪ ধারা জারি থাকে। তারপরও গরুর বাজার বসানো হয়। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
এব্যাপারে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. শাহিদুল আলম বলেন, গরুর বাজারটি বছরের পর বছর ধরে রেলপথের উপর বসে আসছে। এছাড়া পৌরসভা বাজারটি থেকে বড় অংকের একটি রাজস্ব পাচ্ছে। হঠাৎ করে বাজারটি অন্যত্র সরানো যাবে না। ঝুঁকিমুক্তভাবে যাতে রেল চলাচল করতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানান।
পূর্বকোণ/এএইচ