যেমন বাহারি রঙ, তেমন চমক লাগানো সৌন্দর্য। গড়ন অনেকটা দেশীয় টিয়া পাখির মতো। তবে আকারে বেশ বড়। মাথা থেকে গলা সবুজ, বুক সোনালী, পিঠ ও পাখনায় আকাশের মতো নীল রঙের পালক। মন ভোলানো এই পাখির নাম ‘ব্লু গোল্ড’ বা নীল সোনালী ম্যাকাও। দেশি-বিদেশি ১০০ প্রজাতির পশু-পাখি নিয়ে শনিবার আয়োজন করা ‘সিটিজি পেট ফেয়ারে’ দর্শনার্থীদের প্রধান আকর্ষণ ছিল অস্ট্রেলিয়ান প্রজাতির এই পাখি। শুধু ম্যাকাও নয়- ফিঞ্চ, অস্ট্রেলিয়ান ডাভ, বাজরিগার, ক্রিমসন কুনোর, লাভ বার্ড, টেইল মার্ক, ডেনিশ টেম্বলার, লাহোরি বার্ডসহ ২২ প্রজাতির দেশি-বিদেশি পাখি প্রদর্শন করা হয় এই প্রদর্শনীতে। পাখি ছাড়াও কুকুর, কবুতর, ঈঁদুর, হেমস্টার্ড, একুরিয়াম ফিশের প্রদর্শনের পাশাপাশি কয়েকটি বার্ডস এন্ড পেট এনিম্যাল ক্লিনিকের পক্ষ থেকে নানান ধরনের সেবা দেওয়া হয় সেখানে।
নগরীর সিআরবি এলাকার রেলওয়ের অফিসার্স ক্লাবে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করে ‘ফেয়ারগ্রাউন্ড’। বৈরি আবহাওয়া ও বৃষ্টি উপেক্ষা করে সেখানে ভিড় করেন পাখি ও পশুপ্রেমী নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষ। বন্য প্রাণী রক্ষা, পাখি কিংবা পোষা প্রাণীর প্রতি মানুষের মধ্যে ভালোবাসা জন্মাতে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয় বলে জানিয়েছেন আয়োজক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
এক ছাদের নিচে ১০০ প্রজাতির পশু-পাখির এই প্রদর্শনীতে এসে মুগ্ধতা প্রকাশ করেন দর্শনার্থীরা। তাদের একজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসমিয়া রিফাত। তিনি পূর্বকোণকে বলেন, বাসায় একুরিয়াম নিয়েছি কয়েক মাস আগে। ব্লু পোলার পেররট, ব্ল্যাক মলি ফিস নিয়ে নানা কথা শুনলেও সরাসরি দেখিনি। এই প্রদর্শনীতে এসে দেখলাম। খুব ভালো লেগেছে।
এক স্টলে ২২ প্রজাতির পাখি দেখে মুগ্ধতার কথা জানাল মুসলিম হাই স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী মুহিতুল আলম। সে জানায়- ম্যাকাও আমার স্বপ্নের পাখি। এখানে এসে ম্যাকাও’র সঙ্গে ছবি তুলেছি। ধরে দেখেছি। বইয়ে বা ইন্টারনেটে দেখা নতুন নতুন অনেক পাখির সঙ্গে পরিচিত হয়েছি। সব মিলিয়ে আষাঢ়ের বৃষ্টি ভেজা বিকালটা খুব ভালো কাটলো। আয়োজকদের ধন্যবাদ।
পাখির স্টল দেওয়া চিটাগং বার্ড ব্রিডার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি রেজোয়ান হোসাইন পূর্বকোণকে বলেন, সব বয়সী মানুষকে- বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের পাখির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে আমরা এই প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছি। পাশাপাশি ‘বনের পাখি বনে রবে, খাঁচার পাখি বন্ধু হবে’ স্লোগানে বন্য প্রাণি ও পাখি রক্ষায় মানুষকে সচেতন করছি আমরা।
আয়োজক প্রতিষ্ঠান ফেয়ারগ্রাউন্ড এর আহ্বায়ক মাহবুব ইলব পূর্বকোণকে বলেন, চিটাগং বার্ড ব্রিডার্স এসোসিয়েশন, সোসাইটি অব রাইজ ফর পোউস এন্ড ক্লস, হাউজ অব প্যাররটসসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় আমরা এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছি। এক ছাদের নিচে ১০০ প্রজাতির পশু-পাখি নিয়ে করা এই প্রদর্শনীতে দারুণ সাড়া পাচ্ছি আমরা।
পূর্বকোণ/পিআর