চট্টগ্রাম সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

ক্যাপশন : রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এ পরীক্ষা। ছবি : শরীফ চৌধুরী

বোয়ালখালী উপজেলায় পুকুর ও টিউবওয়েল

ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া পুকুর ও নলকূপের পানিতে!

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এ পরীক্ষা

ইমাম হোসাইন রাজু

৯ জুন, ২০২৩ | ৫:৫৮ অপরাহ্ণ

বোয়ালখালী উপজেলায় পুকুর ও টিউবওয়েলের পানিতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর ‘কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া’র অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। সম্প্রতি উপজেলার পৌরসভা এলাকার পাঁচটি পুকুর ও তিনটি টিউবওয়েল থেকে সংগ্রহকৃত পানি পরীক্ষার পর এ ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এছাড়াও ৬টিতে কলেরার জীবাণু পাওয়া যায়। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এ পরীক্ষা পরিচালনা করে।

এদিকে, কলিফর্ম একটি ভয়ংকর ব্যাকটেরিয়া উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ব্যাকটেরিয়া মিশ্রিত পানির কারণে মানুষের খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়ে থাকে। তাই পুকুরের পানি পান করার আগে অবশ্যই অবশ্যই বিশুদ্ধকরণ বা ফুটিয়ে পান করতে হবে।

জানা যায়, ৫ মে চট্টগ্রামের পটিয়া, বোয়ালখালী, আনোয়ারা ও চন্দনাইশ উপজেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় আইইডিসিআরকে বিষয়টি তদন্তের জন্য চিঠি দেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। এরপর সংস্থাটির ১২ সদস্যের একটি দল চট্টগ্রামে এসে নগর ও পটিয়া এবং বোয়ালখালী উপজেলায় সরেজমিনে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। এরমধ্যে বোয়াখালী উপজেলার পৌর সদর এলাকার পশ্চিম গোমদণ্ডী ইউনিয়নের পাঁচটি পুকুর এবং ৩টি টিউবওয়েলের পানির নমুনা সংগ্রহ করেন। যা পরবর্তীতে আইইডিসিআর’র নিজস্ব ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে পাঠানো আইইডিসিআর’র প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচটি পুকুরের মধ্যে পাঁচটিতেই মানবদেহের ক্ষতিকারক ‘কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া’ এবং কলেরার জীবাণুর অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এছাড়া তিনটি টিউবওয়েলের মধ্যে দুটিতে কলিফর্ম এবং একটিতে কলেরার জীবাণুর উপস্থিতি পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, ‘ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের কারণ জানতে এসে বোয়ালখালী এলাকার কয়েকটি পুকুর ও টিউবওয়েলের পানি সংগ্রহ করেন আইইডিসিআর’র প্রতিনিধি দল। পরবর্তীতে এসন নমুনা পরীক্ষার পর কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব পাওয়া যায় মর্মে আমাদের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কে বাংলাদেশ ইনস্টটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) এর মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. শাকিল আহমেদ বলেন, ‘মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর এ ব্যাকটেরিয়া বিভিন্ন আন্ত্রিক ভাইরাস সংক্রমণের শঙ্কা তৈরি করে। কলিফর্ম মিশ্রিত পানি পানে ডায়রিয়া, আমাশয়, রক্ত আমাশয়, কলেরা, টাইফয়েড ছাড়াও ভাইরাল হেপাটাইটিস (জন্ডিস) রোগ হয়ে থাকে। তাই পানিতে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেলে সেই পানি কোনভাবেই পান করা যাবে না। বিশুদ্ধ করে পানি পান করতে হবে। না হয় নানান ক্ষতিরমুখে পড়তে হবে।’

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট