কুকুরের থাকার জন্য ঘর না থাকায় নগর পুলিশের ডগ স্কোয়াড ইউনিটের কাজ থেমে আছে। স্কোয়াডের ২০টি কুকুর ও প্রয়োজনীয় জনবল বরাদ্দ হয়েছে ইতিমধ্যে। কিন্ত যথাসময়ে ভবন নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় প্রশিক্ষিত কুকুর আনতে পারছে না চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।
ডগ স্কোয়াড টিমে দায়িত্ব পাওয়া ২০ পুলিশ কর্মকর্তা অলস সময় কাটাচ্ছেন ঢাকায়। নগরীর মনসুরাবাদ পুলিশ লাইনে দুই তলাবিশিষ্ট ডগ স্কোয়াড ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। চাহিদা অনুযায়ী অর্থ সময়মতো বরাদ্দ না হওয়ায় বর্তমানে বন্ধ রয়েছে ভবনটির নির্মাণ কাজ। মনছুরাবাদ গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ের পাশে এ ভবন নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর) আবদুল ওয়ারিশ জানান, ইতিমধ্যে ডগ স্কোয়াডের কুকুর বরাদ্দ হয়েছে। স্কোয়াড দলে পদায়নকৃত পুলিশ কর্মকর্তাদের ট্রেনিং সম্পন্ন হয়েছে। কুকুরের ট্রেনিং চলছে। মনছুরাবাদের প্রশিক্ষিত কুকুর থাকার ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় কুকুরগুলো পুলিশ সদর দপ্তরের ডগ স্কোয়াডে রাখা হয়েছে। ডগ স্কোয়াড গঠনে প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে চিঠি পাঠায় সিএমপি।
২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) সানা শামীমুর রহমান স্বাক্ষরিত পাঠানো চিঠিতে আটটি কারণে ডগ স্কোয়াড গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়েছে। তা হলো- হজরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করা, ভিভিআইপির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বিস্ফোরক শনাক্ত করতে অভিযান পরিচালনা করা, তারকা বিশিষ্ট হোটেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, স্টেডিয়াম, আন্তর্জাতিক ইভেন্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও বন্দরনগরী হওয়ায় বাংলাদেশ পুলিশের অন্য যেকোনো ইউনিটের তুলনায় সিএমপির কার্যক্রম ও দায়িত্ব পালনের ধরনের ভিন্নতা রয়েছে। ব্যস্ত এ কর্ম পরিবেশে দায়িত্ব পালন করতে যথেষ্ট সংখ্যক কুকুরের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (এস্টেট) মোস্তাইন হোসাইন জানান, ডগ স্কোয়াডের দুই তলাবিশিষ্ট ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। তবে বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে। সময়মতো অর্থছাড় না পাওয়ায় নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে কিনা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিসি মোস্তাইন জানান, প্রশিক্ষিত কুকুরের জন্য ঘরটি বিশেষভাবে তৈরি করতে হচ্ছে, তাই সময় লাগছে।
ডগ স্কোয়াডের চাহিদাপত্রে ধাপে ধাপে ৩৫টি কুকুরের কথা বলা হয়েছে। এরমধ্যে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৫টি, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১০টি, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১০টি। এরমধ্যে প্রাথমিকভাবে ২০টি ডগ নিয়ে একটি নতুন ইউনিট গঠনের জন্য একজন এএসপির নেতৃত্বে ৫২ জনবলের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে ২০২১ সালে।
চাহিদাপত্রে ২০টি ডগ স্কোয়াডের মধ্যে মাদকদ্রব্য শনাক্ত করতে ছয়টি ল্যাবরাডর, চারটি জার্মান শেফার্ড, কারেন্সি শনাক্ত করতে দুটি ল্যাবরাডর, বিস্ফোরক শনাক্ত করতে চারটি ল্যাবরাডর, চারটি জার্মান শেফার্ডসহ ২০টি ডগের কথা বলা হয়েছে।
ডগ স্কোয়াড পরিচালনা করতে লাগবে একজন এএসপি, একজন ভেটেরিনারি অফিসার, একজন ইন্সপেক্টর, দুইজন উপপরিদর্শক, চারজন সহকারী উপ-পরিদর্শক, ৪০ জন কনস্টেবল (ডগ হ্যান্ডলার) ও তিনজন পরিচ্ছন্ন কর্মী। ইতিমধ্যে ২০ জন কর্মকর্তা নিয়োগও দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে পুলিশের আট সদস্যের একটি দল গত বছরের ৯ মে বাংলাদেশ থেকে নেদারল্যান্ডে যায়। ২৪ মে ছয়জন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। ট্রেনিংয়ে গিয়ে দল থেকে আত্মগোপনে যাওয়া দুই কনস্টেবল হলেন রাসেল চন্দ্র দে ও শাহ আলম। রাসেলের বাড়ি কক্সবাজারে আর শাহ আলমের বাড়ি কুমিল্লায়।
পূর্বকোণ/জেইউ