চট্টগ্রাম শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪

ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির স্বার্থে তৈরি পোশাকবান্ধব বাজেট চাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ এপ্রিল, ২০২২ | ১:৫৮ অপরাহ্ণ

বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেছেন, রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্প বর্তমানে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন চাপের কারণে এক নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। এর নেপথ্যে রয়েছে পোশাকের দরপতন, রপ্তানি প্রবৃদ্ধির ক্রমাগত নেতিবাচক প্রভাব, ডলারের বিপরীতে মুদ্রার অবস্থান, সুতার দাম বৃদ্ধি, কনটেইনার ভাড়া বৃদ্ধি, ডাইস, ক্যামিক্যালের খরচ বৃদ্ধি, কোভিডের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা পরিচালনায় খরচ বৃদ্ধি, ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির ফলে পরিবহন ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, প্রতিযোগী দেশগুলো থেকে তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে থাকা ইত্যাদি। এসব কারণে আমাদের দেশের পোশাক শিল্প সক্ষমতা হারাচ্ছে। তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক করতে এবং সক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে আসন্ন বাজেটে (২০২২-২০২৩) গার্মেন্টস মালিকদের প্রস্তাবগুলো সুবিবেচনায় নিয়ে এর যথাযথ বাস্তবায়ন দেখতে চাই। অর্থাৎ বাজেট হওয়া চাই পোশাক শিল্পবান্ধব।

পূর্বকোণ প্রতিনিধির সঙ্গে ‘বাজেট ভাবনা’ নিয়ে আলোচনায় তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

দেশের রপ্তানি আয়ের সিংহভাগই আসে এই তৈরি পোশাক শিল্প খাত থেকে। তাই রপ্তানির ধারা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে দেশে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের পথ সুগম করতে আসন্ন বাজেটে গুচ্ছ প্রস্তাবনা দিয়েছে বিজিএমইএ। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পাঠানো ওই প্রস্তাবনায় ভ্যাট সংক্রান্ত ২টি, আয়কর সংক্রান্ত ৪টি এবং শুল্ক সংক্রান্ত ১২টি প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- রপ্তানিকে প্রতিযোগী করে তোলার জন্য স্থানীয় বাজার হতে সংগৃহীত পণ্য ও সেবা সমূহ এবং কিছু জরুরি সেবা যেমন, ছাপাখানা (প্রিন্টিং), কুরিয়ার বা এক্সপ্রেস মেইল সার্ভিস, অডিট এন্ড একাউন্টিং ফার্ম, আর্কিটেক্ট ইন্টেরিয়র ডিজাইনার বা ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন, ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম, কনসালটেন্সি চার্জ, কমপ্লায়েন্ট অডিট/ ইভ্যালুয়েশন অডিট/ইথিক্যাল অডিট চার্জ, আইন পরামর্শক চার্জ, সিএসআর সংক্রান্ত যাবতীয় খরচ, ভবন নির্মাণ ব্যয়, রপ্তানির কাজে নিয়োজিত জেনারেটরের জ্বালানি ব্যয় ইত্যাদিকে ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখা আবশ্যক। এছাড়া তৈরি পোশাক শিল্পের কর্মসংস্থান, বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার নিমিত্তে রপ্তানির জন্য সাব-কন্ট্রাক্টের বিপরীতে ভ্যাট আদায়ে অব্যাহতি প্রদান করা প্রয়োজন।

প্রস্তাবনায় আরো উল্লেখ করা হয়, পূর্বের বাজেটের ন্যায় রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর দশমিক ৫০ শতাংশ আগামী ৫ বছর পর্যন্ত কার্যকর রাখা। পূর্বের ন্যায় করোনাভাইরাসের প্রভাবে পোশাক শিল্পের ক্ষতি, জাতীয় অর্থনীতি, বিনিয়োগ ও রপ্তানির বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করে পোশাক শিল্পের জন্য কর্পোরেট ট্যাক্স হার ১২% এবং গ্রিন কারখানার জন্য ১০% আগামী ৫ বছর পর্যন্ত বলবৎ রাখা। পোশাক শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নগদ সহায়তার উপর আয়কর কর্তনের হার ১০% রহিত করা প্রয়োজন।

এছাড়া গার্মেন্টস সংক্রান্ত কাঁচামাল আমাদানিতে কাস্টমসের এইচএস কোড সংক্রান্ত সকল জটিলতা নিরসন করে একটি সচ্ছ নিয়ম চালু করা প্রয়োজন। অনুর্ধ্ব ১০ কেজি ক্যাপাসিটির ওয়াশিং ও ড্রাই মেশিন আমদানিকালে মূলধনী যন্ত্রপাতির ন্যায় রেয়াতি হারে শুল্কায়নের সুযোগ প্রদান করা। তৈরি পোশাকশিল্পের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য প্রতিবছর সর্বোচ্চ ৫ পিস ডামি বিনাশুল্কে আমদানির অনুমোদন প্রদান করা। বিল অব এক্সপোর্টে করনিক ভুলসমূহ কাস্টমস কর্মকর্তা কর্তৃক স্বাক্ষরিত ইনভয়েস, ইএক্সপি, প্যাকিং লিস্ট ও অন্যান্য জাহাজীকরণ দলিলাদি ও সংশ্লিষ্ট লিয়েন ব্যাংকের প্রত্যয়নপত্রের ভিত্তিতে সংশোধনের প্রয়োজনীয় আদেশ জারি করা প্রয়োজন।

 

পূর্বকোণ/এস

শেয়ার করুন