চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাঘাইছড়িতে বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে ১৫ জনকে অপহরণ

অবশেষে ১০ জনের মুক্তি

পূর্বকোণ প্রতিনিধি , রাঙামাটি অফিস

৩০ জুন, ২০১৯ | ২:০৩ পূর্বাহ্ণ

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়নের করেঙ্গাতলী বাজার থেকে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে অস্ত্রের মুখে ১৫জনকে অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নেয়ার পথে ও বিকেলে ১০ জনকে মুক্তি দেয়া হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার সকালে করেঙ্গাতলী বাজারে এঘটনা ঘটে। এঘটনার জন্য জনসংহতি সমিতিকে ( এমএন লারমা) দায়ী করা হয়েছে। তবে এমএন লারমা গ্রুপ তা অস্বীকার করেছে। পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বঙ্গলতলী ইউনিয়নে গতকাল করেঙ্গাতলী বাজারে হাটের দিন ছিল। সকাল সাড়ে আটটার দিকে বাজার জমে উঠতেই হঠাৎ ৮ থেকে ১০জন অস্ত্রধারী প্রবেশ করে। তাদের প্রবেশ করার কিছুক্ষণের মধ্যে ১০ থেকে ১৫ রাউন্ড

ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হয়। এরপর বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এসময় দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা অন্তত ১৫জন ব্যক্তিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে নেয়ার পথে ও বিকেলে পূর্ণ সাধন চাকমা (৪০), তপন চাকমা (২৮), মংগে চাকমা, কান্দারা চাকমা, সচারুময় চাকমা, শান্তি কুমার চাকমা, প্রিয়ময় চাকমা অমর চার্য চাকমা, ধন কুমার চাকমা ও সুবেশ চাকমাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
তবে বঙ্গলতলী ইউনিয়নের বঙ্গলতলী গ্রামের অঙ্গত চাকমা (৪০), একই ইউনিয়নের ডুলুবন্যা গ্রামের সন্তোষ কুমার চাকমা (৪৪), ভালুকমাজ্জ্যা গ্রামের সঞ্চয় চাকমা ( ২৮) ও মারিশ্যা ইউনিয়নের খেদারছড়া গ্রামের অজয় চাকমা (৪৫) ও ভূঁইয়োছড়া গ্রামে অরুন চাকমাকে মুক্তি দেয়া হয়নি। অপহরণকারীরা গতকাল শনিবার দুপুরে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য স্বজন ও গ্রাম প্রধানদের খবর দেয়। পরে গ্রামপ্রধানরা অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, করেঙ্গাতলী বাজারে হাট জমে উঠতে শুরু করেছে এমন সময় বাজারের দক্ষিণ থেকে কাচালং নদী পাড় হয়ে অস্ত্রধারীরা অস্ত্র তাক করে বাজারে ঢুকে পড়েন। ঢুকার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় ফাঁকা গুলি ছোঁড়া হয়। বাজারের লোকজন ভয়ে ছুটাছুটি করতে থাকেন। এসময় অস্ত্রধারীরা ১০ থেকে ১৫ জন মানুষকে তুলে নিয়ে যায়। পরে কাচালং নদী পাড় করে রুপকারী গ্রামের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
করেঙ্গাতলী বাজার কমিটির সভাপতি নিকাশ দে প্রথম আলোকে বলেন, সকালে ঘটনার পর বাজার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর বাজারে আসা লোকজন সবাই চলে যায়।
বঙ্গলতলী ইউয়িন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞানজ্যোতি চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে ১৫জন সাধারণ মানুষকে তুলে নেয়া হয়েছে। তবে পরে বিভিন্ন সময় ১০জনকে মুক্তি দেয়া হয়। বঙ্গলতলী ও মারিশ্যা ইউনিয়নের পাঁচ গ্রাম থেকে ৫জনকে এখনো ছেড়ে দেয়া হয়নি। তাঁদের স্বজন ও গ্রামের মুরুব্বীরা অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
বাঘাইছড়ি উপজেলা শাখার জনসংহতি সমিতির ( এমএন লারমা) সভাপতি সুরেশ কান্তি চাকমা জানান, করেঙ্গাতলী বাজারে ঘটনা ও অপহরণের বিষয়ে আমাদের দল দায়ী নয়। এমএন লারমাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দায়ী করা হচ্ছে। এমএন লারমা গণতান্ত্রিক বিশ্বাসী, এধরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার প্রশ্নও আসে না।
বাঘাইছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল মঞ্জুর বলেন, করেঙ্গাতলী বাজারে দুর্বৃত্তরা ফাঁকাগুলি ছুড়ার ঘটনা শুনেছি। ঘটনার পর বেশ কয়েকজনকে অস্ত্রের মুখে তুলে নেয়া গিয়ে পরে আবার ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে কতজন আটকে রাখা হয়েছে সে বিষয়ে আমাদের কেউ বলেনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট