চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

চট্টগ্রাম আদালতে ৩৪৬ আইন কর্মকর্তা নিয়োগ

আদালত প্রতিবেদক

১৮ অক্টোবর, ২০২৪ | ১২:৪০ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতে ৩৪৬ জন আইন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্তেণালয়ের সলিসিটর অনুবিভাগ থেকে আইন কর্মকর্তাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। উপ-সলিসিটর (জিপি-পিপি) সানা মো. মারুফ হোসাইন স্বাক্ষরিত তালিকাটি ইমেইলে চট্টগ্রাম জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দপ্তরেও পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টসূত্র জানিয়েছে।

 

জেলা দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) পদে নিয়োগ পেয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক। মহানগর পিপি পদে নিয়োগ পেয়েছেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সাবেক পিপি মফিজুল হক ভুঁইয়া। জেলার দেওয়ানি আদালতের সরকারি কৌঁসুলি বা গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) পদে নিয়োগ পেয়েছেন কাশেম চৌধুরী।

 

এছাড়া দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি এসইউএম নুরুল ইসলাম, বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের পিপি পদে আহমেদ কামরুল ইসলাম চৌধুরী সাজ্জাদ, সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে আব্দুস সাত্তার সরোয়ার, মানবপাচার ট্রাইব্যুনালে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও এসইউএম নুরুল ইসলাম, সাইবার ট্রাইব্যুনালে সেলিম উদ্দিন শাহীনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

 

চট্টগ্রামের সাতটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পিপি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ১৩ জন। তারা হলেন- শফিউল মোর্শেদ চৌধুরী, হায়দার মো. সোলায়মান, রওশন আরা বেগম, আলমগীর মো. ইউনুচ, মাহমুদুল আলম চৌধুরী, সাইফুল আবেদীন, শামীম মো. খান, এরশাদুর রহমান রিটু, আ ন ম কামরুল হাসনাত চৌধুরী, ফৌজুল আমিন চৌধুরী, আলী আকবর ও জেবুন নাহার।

 

নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে আরও রয়েছেন দেওয়ানি আদালতে অতিরিক্ত জিপি ২০ জন, সহকারী জিপি ৪৫ জন, মহানগর দায়রা জজ আদালতে অতিরিক্ত পিপি ৪৭ জন ও সহকারী পিপি (এপিপি) ৬০ জন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অতিরিক্ত পিপি জেলায় ৫৯ জন ও সহকারী পিপি নিয়োগ দেয়া হয়েছে ৮৯ জন।

 

এদিকে, বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত শীর্ষস্থানীয় অনেকের নাম তালিকায় না আসায় কেউ কেউ অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তবে নিয়োগপ্রাপ্ত জেলা পিপি আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক এক প্রতিক্রিয়ায় পূর্বকোণকে বলেন, এ তালিকা নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। কেননা এটা কোন রাজনৈতিক সরকারের তালিকা নয়। অবশ্যই রাজনৈতিক সরকার হলে আমরা আরও কিছু দাবি জানাতাম। তবে যে তালিকা প্রকাশ হয়েছে সেটা বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিবেদন যাচাই-বাছাইয়ের পরই চ‚ড়ান্ত করা হয়েছে।

 

এ প্রসঙ্গে জানতে জানতে চাইলে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, আমি আইন কর্মকর্তা হিসেবে কোন পদে থাকতে ব্যক্তিগতভাবে আগ্রহী নই। তবে আগ্রহী এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত অনেকের নাম বাদ গেছে। নাম বাদ যাওয়া যোগ্যদের তালিকা সংশোধনের মাধ্যমে পরবর্তীতে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। যাদের নাম তালিকায় এসেছে সমিতির পক্ষ থেকে তাদের অভিনন্দন।

 

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় এতদিন জেলা পিপি হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গ-সংগঠন লইয়ার্স কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুল আলমের নাম শোনা গিয়েছিল। জেলা পিপি পদে নাম না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মুখ্য ভ‚মিকা পালন করেও আমি বৈষম্যের শিকার। আমার মতো অনেকেই বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। যারা আন্দোলনে ছিলেন না তাদের অনেকের নাম আইন কর্মকর্তার তালিকায় আছে। কোন সুবিধাবাদী অদৃশ্য শক্তির ইন্ধনে একদিনের মধ্যেই আমার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।

 

সাবেক মহানগর পিপি আব্দুস সাত্তার তালিকায় নাম না থাকা প্রসঙ্গে পূর্বকোণকে বলেন, আমি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলাম। আমি আন্দোলনে গুরুতর আহত হয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমিই বৈষম্যের শিকার হয়েছি। আইন কর্মকর্তাদের তালিকায় এমন কয়েকজন আইনজীবীর নাম এসেছে যারা আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না। তালিকায় কয়েকজন আইনজীবীর নাম একাধিক পদে রয়েছে বলেও তিনি জানান।

 

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নিয়োগপ্রাপ্ত পিপি মো. শফিউল মোরশেদ চৌধুরী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, এ তালিকায় সন্তুষ্ট। তবে অনেক যোগ্য প্রার্থী বাদ গেছে। আশা করি তাদেরকে মূল্যায়ন করে সম্পূরক তালিকা প্রকাশ করবে সরকার।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট