চট্টগ্রামে শাহনাজ কামরুন নাহার নামে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যাওয়া স্বামীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) নগরের পাঁচলাইশ থানায় নিহতের বড় ভাই মো. শাহনেওয়াজ বাদী হয়ে এই মামলা করেন।
এর মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার আসামিরা হলেন- স্বামী মো. আল ফায়াদ চৌধুরী (২৭), শাহনাজ কামরুন নাহারের শাশুড়ি চেমন আরা রফিক (৬৪), শাহনাজের স্বামীর বড় বোন তাসলিমা আফরোজ (৪৪) ও তার স্বামী মো. লোকমান (৪২), শাহনাজের স্বামীর মেজ বোন খাদিজা আফরোজ (৩৭), স্বামীর সেজ বোন তাহমিনা আফরোজ (৩২) এবং স্বামীর ছোট বোন নাজিফা সালসাবিন (৩০)।
জানা গেছে- এর মধ্যে তাসলিমা আফরোজ, নাজিফা সালসাবিন ও মো. লোকমানকে হাটহাজারী থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার বিষয়টি তদারকি করছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার মো. আরিফ হোসেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মেয়েটা ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। তাকে তার স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করত বলে শুনেছি।
যার দরুণ তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন। মূলত আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগেই মামলাটি করেছেন তার ভাই। ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি। মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
শাহনাজের শ্বশুর বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার শান্তিরহাট এলাকায়। তারা থাকতেন নগরের কসমোপলিটন আবাসিক এলাকার ৫ নম্বর সড়কে কাইয়ুম রেসিডেন্সের চতুর্থ তলায়।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর তার বোনের সঙ্গে আল ফায়াদ চৌধুরীর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন সময় তার স্বামী যৌতুক দাবি করতেন। ভুক্তভোগী শাহনাজ ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা থাকায় অনাগত সন্তান ও নিজ ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তিনি সব নির্যাতন সহ্য করে সংসার করছিলেন।
ধীরে ধীরে তার ওপর নির্যাতনের চাপ আরো বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ১৬ অক্টোবর রাত দেড়টার দিকে শাহনাজের শাশুড়ি ফোন করে বাদীর স্ত্রীকে জানান, তার বোন অজ্ঞান হয়ে পড়েছে। বাদী বিষয়টি জানতে পেরে ঢাকা থেকে বিবাদীদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কেউ রিসিভ করেনি।
বাদী তার স্ত্রীর মাধ্যমে জানতে পারেন তার বোনকে চট্টগ্রামের বেসরকারি ন্যাশনাল হসপিটালে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই হাসপাতালে তাকে ভর্তি না করায় পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে নেওয়ার পর মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এরপর তার বোনের মরদেহ সেখানে ফেলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান বিবাদীরা। বাদীর ধারণা- বিবাদীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং প্ররোচনার কারণে তার বোন ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
পূর্বকোণ/এএইচ