চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে ফিরেছেন হৃদয় ও ফরহাদ। তবে শিক্ষার্থী হিসেবে নয়, ফুল হয়ে। ইতিহাস বিভাগের এই দুই শহীদের সহপাঠীদের মধ্যে ছিল বিয়োগের সুর। শ্রেণিকাজে মনযোগী হলেও সবার মাঝেই বিরাজ করছিল হৃদয় ও ফরহাদের শূন্যতা।
দীর্ঘ ৯৭ দিন বন্ধ থাকার পর রবিবার (৬ অক্টোবর) থেকে সশরীরে শুরু হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঠদান। আন্দোলন পরবর্তী ক্লাসে ফেরা নিয়ে উচ্ছ্বসিত ছিলেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কিন্তু ব্যতিক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে। এই বিভাগের দুইজন শিক্ষার্থী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন। একজন হৃদয় চন্দ্র তরুয়া, অন্যজন মো. ফরহাদ হোসেন।
হৃদয় ২৩ জুলাই চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট মোড়ে আন্দোলনে গিয়ে নিহত হন। অন্যদিকে ফরহাদ ৪ আগস্ট নিজ এলাকায় আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। হৃদয় ছিলেন ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং ফরহাদ দ্বিতীয় বর্ষের।
রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন হিসেবে ছিল ইতিহাস বিভাগের নবীনবরণ। অনুষ্ঠানে একেবারে সামনের সারিতে হৃদয় ও ফরহাদের ছবি ছিল শূন্য বেঞ্চে। আর ছবির সামনে ফুল। এভাবেই না থেকেও সকলের মাঝে ছিলেন হৃদয় ও ফরহাদ।
হৃদয়ের সহপাঠী সোহেল বলেন, ‘আজ ক্লাসে হৃদয়ের শূন্যতা অনুভব করেছি। সব কিছু আছে কিন্তু সেই প্রাণচঞ্চল হৃদয় নেই। হৃদয় অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে শহীদ হয়েছেন। যতদিন বেঁচে থাকবো হৃদয়কে আমরা আমাদের হৃদয়ে লালন করবো। ইতিহাস বিভাগ ও হৃদয়ের সহপাঠীরা হৃদয়কে ভুলবে না।’
আরেক সহপাঠী এনামুল হক বলেন, ‘৩ বছর আমরা হৃদয়ের সঙ্গে ক্লাস করেছি, আড্ডা দিয়েছি। ক্যাম্পাসে সময় কাটিয়েছি। শুধু আজকে না, প্রতিদিনই আমরা হৃদয়ের শূন্যতা অনুভব করি।’
হৃদয়, ফরহাদসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের জন্য দোয়ার মাধ্যমে আজকের কার্যক্রম শুরু করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পূর্বকোণ/পিআর