যুদ্ধের প্রস্তুতি জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির একটি সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শনের পর এই নির্দেশ দেন তিনি।
এর আগে সিউল এবং ওয়াশিংটনকে তাদের ‘বেপরোয়া’ এবং ‘উন্মত্ত মহড়া’ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিল উত্তর কোরিয়া।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের পশ্চিমে অবস্থিত একটি বড় সামরিক ঘাঁটিতে সৈন্যদের কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করার পর যুদ্ধের জন্য জোরদার প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) এই তথ্য সামনে আনলেও বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে তারা ওই সামরিক ঘাঁটির অবস্থান প্রকাশ করেনি।
উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ এই নেতা বলেছেন, সামরিক বাহিনীকে অবশ্যই ‘বিরাজমান পরিস্থিতির প্রয়োজনীয়তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে যুদ্ধের প্রস্তুতি জোরদার করার কাজের সূচনা করতে হবে। আমাদের সেনাবাহিনীর উচিত… নিখুঁত যুদ্ধ প্রস্তুতির জন্য সক্ষমতার দ্রুত উন্নতিতে প্রকৃত যুদ্ধ মহড়াকে ক্রমাগত জোরদার করা।’
আল জাজিরা বলছে, সামরিক ঘাঁটিতে পরিদর্শনে গিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি জোরদার করার নির্দেশ কিম এমন এক সময়ে দিলেন যখন যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বাহিনী তাদের বৃহৎ আকারের বার্ষিক ফ্রিডম শিল্ড সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে।
এই মহড়ায় মিসাইল ইন্টারসেপশন ড্রিল, বোমা বিস্ফোরণ, বিমান হামলা এবং লাইভ-ফায়ারিংসহ ৪৮টি মাঠ মহড়া অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণ সৈন্যের অংশগ্রহণে গত সোমবার থেকে এই মহড়া শুরু হয়েছে।
মূলত উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক মহড়ার নিন্দা করে আসছে। দেশটির দাবি, এসব মহড়া আসলে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য কোনও আক্রমণের মহড়া। এছাড়া অতীতে এই ধরনের মহড়ার প্রতিক্রিয়া হিসেবে অস্ত্র পরীক্ষাও করেছে পিয়ংইয়ং।
এদিকে গত সোমবার কেসিএনএ উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে জানায়, সিউল এবং ওয়াশিংটনকে তাদের ‘বেপরোয়া’ এবং ‘উন্মত্ত যুদ্ধ মহড়া’ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া।
সেসময় ওই মুখপাত্র আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে ‘তাদের এই কর্মকাণ্ডের জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।’
অবশ্য কিম সরাসরি ফ্রিডম শিল্ড মহড়ার কথা উল্লেখ করেছেন কিনা তা বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেনি কেসিএনএ। পিয়ংইয়ংয়ের রাষ্ট্রচালিত এই নিউজ এজেন্সিটি বলেছে, ঘাঁটিতে থাকা সৈন্যরা বাস্তব যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির অনুকরণে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
এছাড়া উত্তর কোরিয়া তার সামরিক বাহিনীকে আধুনিকায়ন করার সাথে সাথে গত বছরেরও মতো চলতি বছরও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
পূর্বকোণ/এসি