চট্টগ্রাম রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

খাল খননে বদলে যাচ্ছে পটিয়ায় গ্রামীণ চিত্র

রবিউল আলম ছোটন

১৫ জুন, ২০২৩ | ১১:৫৮ পূর্বাহ্ণ

পটিয়া উপজেলার ১৭ ইউনিয়নে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য খাল পলি পড়ে ও কচুরিপানা জমে ভরাট ছিল। অনেক স্থানে জোয়ার-ভাটার পানি আসা-যাওয়া ছিল বন্ধ। এতে খালের পাশে আবাদি অনেক জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছিল। এ নিয়ে দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বিশেষ সংখ্যায় “বর্ষায় জলাবদ্ধতা, সেচ মৌসুমে পানি সংকট” শিরোনামে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ ১১টি খাল পুনঃখনন করা শুরু হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের পটিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ-নিষ্কাশ ও সেচ প্রকল্পের অধীনে। খালগুলো খননের মাধ্যমে প্রশস্ত করা হচ্ছে। পাড়ে মাটি দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। সহজে জোয়ার-ভাটার পানি সরবরাহের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। এর ফলে বর্ষায় জলাবদ্ধতা ও সেচ মৌসুমে পানি সংকটের দীর্ঘদিনের এ সমস্যা থেকে মিলছে মুক্তি। এছাড়া দীর্ঘদিন অনাবাদি পড়ে থাকা প্রায় সাড়ে তিন হাজার হেক্টর জমিতে নতুন করে ফসল উৎপাদন করার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ১৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির ফসল সুরক্ষার পাশাপাশি নতুনভাবে চাষের আওতায় আসবে আরো অন্তত সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর অনাবাদি জমি। প্রকল্পে ইতিমধ্যে দৃশ্যমান হয়েছে ১১টি খালের ৩০ দশমিক ২০০ কিলোমিটার খাল পুনঃখননের ৮০ ভাগ কাজ, ২৫ দশমিক ৫১০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের ৩০ ভাগ কাজ ও ২ দশমিক ৯৫০ কিলোমিটার নদী-খালের তীর সংরক্ষণের ৩০ ভাগ কাজ হয়েছে। বড়লিয়া ইউনিয়নের কৃষক রেজাউল করিম বলেন, আমাদের ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া গরুলুটা খাল পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলের খালের পাশের শত শত হেক্টর জমিতে কোন চাষাবাদ হয়নি। এ খাল খনন হওয়ায় ইতিমধ্যে চাষাবাদে নতুন করে আগ্রহ দেখা গেছে গ্রামের কৃষকদের মধ্যে।

 

কুসুমপুরা ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান শওকত আকবর বলেন, আবর্জনা ও পলিমাটিতে ভরাট হয়ে নালায় পরিণত হয়েছিল খালগুলো। পাড়ে গাছ-গাছালি ও লতাপাতায় হাঁটা যেত না। জোয়ার-ভাটার পানি আসা-যাওয়া ছিল বন্ধ। কিন্তু সেই চিত্র এখন বদলে গেছে। খালগুলো খননের মাধ্যমে প্রশস্ত করা হয়েছে। এখন খালখননে দৃষ্টিনন্দন হয়েছে আমাদের হরিনখাইন গ্রামের চিত্র।

 

পানি উন্নয়ন বোর্ড পটিয়া (পওর) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অপু দেব জানান,  প্রকল্পটি অতি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় দ্রুত সম্পন্ন করতে কাজ করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের অধীনে ৫৪ ভেন্টের ২৬টি খালে রেগুলেটর বসানো হবে, ৪ দশমিক ১০০ কিলোমিটার ফ্লাডওয়াল নির্মাণ করা হবে, খানমোহনা এবং ধলঘাট স্টেশনের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় চাঁনখালী খালের উপর একটি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ করা হবে। ৪৫ প্যাকেজের মধ্যে ফ্লাডওয়াল ও রেগুলেটরের ২৮টি প্যাকেজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এছাড়া পিসি গার্ডার সেতুর দরপত্র পক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পটিয়াবাসীকে প্রায় ১২শ কোটি টাকার এ প্রকল্প উপহার হিসেবে দিয়েছেন। এ প্রকল্পের কারণে পটিয়ার কৃষকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ নানাভাবে উপকৃত হবেন। তিনি বলেন, প্রকৃত জমির মালিক তাদের জমি অধিগ্রহনের সব টাকা পাবেন। টাকার জন্য কারো কাছে যেতে হবে না, জেলা প্রশাসক নিজে খালের পাড়ে এসে তাদের হাতে টাকা বুঝিয়ে দেবেন।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট