চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

সর্বশেষ:

অক্সিজেন-হাটহাজারী সড়ক

নিত্য যানজটে নাকাল যাত্রীরা

হাটহাজারী সংবাদদাতা

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ | ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ

অক্সিজেন-হাটহাজারী-রাঙামাটি-খাগাড়াছড়ি ব্যস্ততম এ মহাসড়কের প্রবেশমুখ হাটহাজারী পৌরসদরের বাস স্টেশন এলাকায় তীব্র যানজটে উভয় পাশের হাজার হাজার যাত্রী ও পথচারীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রাম-অক্সিজেন-হাটহাজারী ব্যস্ততম এ মহাসড়কের ওপর ১২ কিলোমিটারে ১২টি বাজার। সড়কের পাশে মালামাল রাখা, ফুটপাত দখল ও যাত্রী ওঠানামা করতে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকার কারণে প্রতিদিনের নিত্য যানজটে সড়ক দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন।

 

যানজটের অন্যতম কারণ হচ্ছে সড়কের ওপর হাইএস, মাইক্রোবাস, জিপ, সিএনজি ট্যাক্সি, ব্যাটারিচালিত রিকশার প্রতিনিয়ত পার্কিং। অক্সিজেন-হাটহাজারী মহাসড়কটি দুই পার্বত্য জেলা রাঙামাটি-খাগড়াছড়ির জন্য গুরুত্বপূর্ণ যাতায়াত মাধ্যম। এ মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলাসহ ২৬টি রুটের কয়েক হাজার ছোট-বড় গাড়ি চলাচল করে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কের অক্সিজেন মোড় থেকে হাটহাজারী বাজার পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে ১২টি হাট। বাজারগুলোর মধ্যে রয়েছে হাটহাজারী বাজার, হাটহাজারী বাস স্টেশন বাজার, মদনহাট, ইসলামিয়াহাট, নন্দীরহাট, চৌধুরীহাট, বড়দিঘির পাড় বাজার, লালিয়ারহাট, আমানবাজার, বালুছড়া বাজার, বটতল বাজার ও অক্সিজেন বাজার। সড়কের মধ্যে অবৈধভাবে গড়ে ওঠেছে এসব বাজার।

 

সড়কের বাজার এলাকায় দোকানগুলোর মালামাল ফুটপাত দখল করে সড়কের উপর রাখার কারণে লোকজনও সড়কের উপর দিয়ে চলাচল করছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে সিএনজি অটোরিকশা, বাস ও মিনিবাস (হিউম্যান হলার) দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানামা। এ অবস্থায় চট্টগ্রাম শহরের সাথে যাতায়াতকারী রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও নাজিরহাটগামী গাড়ি নিত্য যানজটের শিকার হচ্ছে। হাটহাজারী বাসস্টেশন জিরো পয়েন্ট, শেরেবাংলা মাজার গেট, চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কের মেডিকেল গেট পর্যন্ত যানজট লেগে থাকে। বাসস্টেশন এলাকায় চার লেন মহাসড়কের দুটি লেনে অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রুটের জিপ (চাঁদের গাড়ি) ও যানবাহন পার্কিং করে রাখা হয়। হাটহাজারী সদরে দাঁপিয়ে বেড়ায় অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা। এসব ছোট গাড়িও সদরে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি করছে। বাসস্টেশন জিরো পয়েন্ট ছাড়াও হাটহাজারী বাজারের ত্রিবেণী মোড়, চৌধুরীহাট, আমান বাজার ও বড়দিঘির পাড়েও নিত্য যানজট লেগে থাকে।

 

চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘হাটহাজারী থেকে অক্সিজেন পর্যন্ত গড়ে উঠেছে অসংখ্য বাজার। সড়কের উপর হাট ও অবৈধভাবে সিএনজিচালিত ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে থাকার কারণে যানজট নিত্যসঙ্গী হয়েছে। তাই এসব হাট সড়ক থেকে সরানোর জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

 

পৃর্ব মেখল এলাকার সাইফুল আলম আক্ষেপ করে বলেন, ‘হাটহাজারী কলেজ গেট ও বাসস্টেশন, চৌধুরীহাট ও বড়দিঘির পাড় এলাকায় যানজটে আটকা না পড়ে কখনো চট্টগ্রামে যেতে পারেননি।’

 

সওজ হাটহাজারী উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী মো. এহসান বলেন, ‘চট্টগ্রাম অক্সিজেন-হাটহাজারী ব্যস্ততম এ মহাসড়কে সরকারি জায়গা উচ্ছেদ করার পর কিছুদিন যানজট ঠিক থাকে। পরে আবার মালামাল রেখে কিংবা অস্থায়ী দোকান বসিয়ে রাখা হয়।’

 

এ ব্যাপারে হাটহাজারী ট্রাফিক পরিদর্শক মো. বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ‘বাস স্টেশন এলাকায় অবৈধ পার্কিং সরাতে উপজেলা প্রশাসন, থানা ও রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা পেলে যানজট মুক্ত করা যেতে পারে। এ ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা দরকার। আমি যোগদানের পর থেকে প্রতিদিন হাটহাজারী সদরে অভিযান চালিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা, সড়কের ওপর পার্কিং করা সিএনজি অটোরিকশা আটক ও অবৈধভাবে পার্কিং করে রাখা যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে।’

 

হাটহাজারীর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাহীদুল আলম বলেন, ‘চট্টগ্রাম অক্সিজেন-হাটহাজারী মহাসড়কের হাটহাজারী বাস স্টেশন থেকে বালুছড়া পর্যন্ত বৈধ হাট রয়েছে মাত্র চারটি। বাকি সব অবৈধ। এর মধ্যে সড়কে যানজট নিরসনের জন্য অবৈধ হাটগুলো উচ্ছেদের পাশাপাশি সওজের জায়গাগুলো উদ্ধার করা হবে।’ 

 

 

পূর্বকোণ/জেইউ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট