চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

মোবাইল ফোন রিসাইক্লিং : সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে

১ জুলাই, ২০১৯ | ১২:৩৪ পূর্বাহ্ণ

১৯৯০-এর দশকে, এমনকি ২০০০ সালের প্রথম ভাগে কারো বাসায় একটি ল্যান্ডফোন থাকাটা বেশ গর্বের একটা ব্যাপার ছিল। আর হাতে একটি মোবাইল ফোন থাকলে তো কোনো কথাই নেই। গত দেড় দশকে এই দৃশ্যপটের দ্রুত পরিবর্তন হয়েছে। ব্যবহারের ফোন ঘরের কোণা থেকে চলে এসেছে একেবারে হাতের মুঠোয়। ফোন এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং প্রয়োজনীয়তা। আর ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার-উপযোগিতা শুরু হওয়ার পর থেকে বিশ্ব যেন মানুষের হাতের মুঠোয়। আমাদের যোগাযোগের ধরনে, জীবনযাপনে, ব্যবসায়, এমনকি বিনোদনেও মোবাইল ফোন এক বিশাল বিপ্লব নিয়ে এসেছে। ডিজিটাল বিপ্লবের এই যুগে আমরা আমাদের প্রয়োজনানুসারে যখন ইচ্ছে তখন যে কারো সঙ্গে কথাই বলতে পারি। শুধু তাই নয়, তাদের একই সঙ্গে সরাসরিও দেখতে পারি। এখন পর্যন্ত আমাদের জীবনযাত্রায় কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে, এগুলো তার ছোট কিছু উদাহরণ। সামগ্রিকভাবে প্রযুক্তি যে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে বাজারে প্রতিনিয়তই নতুন নতুন মোবাইল ফোনে বাজার ছেয়ে যাচ্ছে। এ জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে মানুষ পুরোনো ফোন ফেলে নতুন মডেলটি কেনার জন্য ছুটছে। তবে এখানে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, পুরোনো ফোনগুলোর কী হয় বা হবে?
পুরোনো ফোনটি বাসাতেই ফেলে রাখে। একপর্যায়ে ঘর পরিষ্কার করার সময় যখন এই বাতিল ফোন খুঁজে পেলে অধিকাংশ সময় তার স্থান হয় বাসার গারবেজ বিনে। ওখান থেকে তা চলে যায় আবর্জনার ভাগাড়ে, যে জায়গাটি এমনিতেই পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর একটি জায়গা। মোবাইল ফোনের বৈদ্যুতিক সার্কিটগুলোতে থাকে পারদ, ক্যাডমিয়াম, সিসা, বেরিলিয়ামসহ অগ্নিপ্রজ্বালক বিভিন্ন উপাদান। অসাবধানে রাখা আবর্জনার ভাগাড় থেকে সহজেই এই বিষাক্ত উপাদানগুলো মাটি ও পানির সঙ্গে মিশে যেতে পারে। একটি মোবাইল ফোনের ব্যাটারিতে যে পরিমাণ ক্যাডমিয়াম থাকে তা দিয়ে সহজেই ছয় লাখ লিটার পানি বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে। ফোনের সার্কিট তৈরিতে ব্যবহার্য অগ্নিপ্রজ্বালক, সিসা ও বেরিলিয়াম হতে পারে বিবিধ রোগবালাই যেমন ক্যানসার, যকৃতের ক্ষতি এবং স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতির কারণ। আমাদের পুরোনো ফোনগুলো যত্রতত্র ফেলে না দিয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে ও পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে রিসাইক্লিং বা পুনঃপ্রক্রিয়াজাতের ব্যবস্থা করা যাতে করে মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর পদার্থগুলোকে পরিবেশদূষণ থেকে বিরত রাখা যায়।গ্রামীণফোন পুরোনো মোবাইল ফোন সংগ্রহ এবং সেগুলোকে পরিবেশবান্ধব বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে রিসাইক্লিং-এর একটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গ্রামীণফোনের এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে। সবাইকে তাদের এই নাগরিক দায়িত্বটি নিতে হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ হোক ই-বর্জ্যমুক্ত।

আবুল কালাম
চট্টগ্রাম।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট