চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪

হজের প্রস্তুতি ও ওমরা পালন রমজানেই সেরে ফেলতে হয়

রায়হান আজাদ

৩ এপ্রিল, ২০২৪ | ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

মাহে রমজান আল্লাহ পাকের সান্নিধ্য লাভের মাস। এ মাস হজ্জে বায়তুল্লাহর প্রস্তুতিরও মাস। হজ যাদের উপর ফরজ হয়েছে তাদের এ মাসেই হজ আদায়ের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। জাকাত যেমনি রমজানে দেয়া উত্তম, তেমনি হজের ভিসা গ্রহণসহ আনুষঙ্গিক প্রয়োজনীয় কাজও রমজানের মধ্যেই সেরে ফেলতে হয়।

হজ প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ ও আর্থিকভাবে সক্ষম সকল মুসলমানকে জীবনে একবার অবশ্যই পালন করতে হবে। আল কোরআনে আদেশ করা হয়েছে, ‘মানুষের মধ্যে যারা বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর ফরজ হলো তারা আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহ শরিফে হজ করবে। আর যে তা করতে অস্বীকার করবে তার জানা উচিত আল্লাহ বিশ্ববাসীর মুখাপেক্ষী নন।’ (সুরা আলে ইমরান-৯৭) অন্য জায়গায় এসেছে, ‘আল্লাহর সন্তোষ বিধানের জন্য যখন হজ ও ওমরার নিয়ত করবে, তখন তা পূর্ণ করবে।’ (সুরাতুল বাকারা-১৯৫)

হজ একটি আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত। এ ইবাদতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সীমাহীন। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যার কাছে বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার বাহন ও পাথেয় আছে; তা সত্ত্বেও সে হজ করে না, তবে সে ইহুদি হয়ে মরুক কিংবা নাসারা হয়ে মরুক (তাতে আমার কিছু যায় আসে না)।’

আরেক জায়গায় ইরশাদ হয়েছে, ‘হজের ইচ্ছা পোষণকারী যেন তাড়াতাড়ি তা সমাপন করে ফেলে। কেননা সে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে, তার উট হারিয়ে যেতে পারে বা তার ইচ্ছা বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে।’ (ইবনে মাজাহ)

হাদিস শরিফে মকবুল হজের বহু ফজিলত সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। হজের ফলে এর পালনকারী নিষ্পাপ শিশুর মতো পবিত্র হয়ে যায়। মুমিন ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালা ও তার রাসুলের প্রতি গভীর ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ দেখায় বায়তুল্লাহ শরিফ তাওয়াফ ও রওজা মোবারক জেয়ারতের মাধ্যমে। হাদিসে এসেছে, ‘মকবুল হজের বিনিময় জান্নাত ব্যতীত আর কিছুই নয়।’

হজ ও ওমরা সফরকারী অবশ্যই মদিনাতুল মুনাওয়ারা গিয়ে বিশ্বনবীর রওজা পাক জেয়ারত করে থাকেন। আর এ জেয়ারত সম্পর্কে নবীজি ফরমায়েছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার রওজা জেয়ারত করবে তার জন্য আমার সুপারিশ আবশ্যক হয়ে পড়বে।’

হজে গমনের ফলে কাবা শরিফের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। কাবা শরিফ সম্পর্কে আল কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘বস্তুত সর্বপ্রথম গৃহ যা ইবাদতের জন্য নির্মিত হয়েছে, তা হচ্ছে ঐ গৃহ যা মক্কায় বিদ্যমান। তা অত্যন্ত বরকতময় এবং বিশ্ববাসীর জন্য হেদায়াতের কেন্দ্রবিন্দু রূপে পরিগণিত।’ (সুরা আলে ইমরান: ৯৬)

রমজান মাসে ওমরা পালন করা অত্যধিক সওয়াবের কাজ। তাই প্রতিবছর মুসলিম বিশ্ব থেকে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান এ মাসে পবিত্র মক্কা শরিফে জমায়েত হন। তারা আল্লাহ পাকের সান্নিধ্য লাভে নিজেদের সকল সত্তা বিলিয়ে দিয়ে দিনরাত ইবাদতে মশগুল থাকেন।

একই উদ্দেশ্যে দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোক্তা মুহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী ২০০৭ সালে রমজানের প্রারম্ভে ওমরা পালনের উদ্দেশ্যে পবিত্র মক্কা শহরে গমন করলে বার্ধক্যজনিত রোগে ইন্তেকাল করেন এবং এ পবিত্র নগরীতেই তাকে চিরশায়িত করা হয়। আয় আল্লাহ মালিক! আপনি এ সৌভাগ্যময় মৃত্যুকে জান্নাতে যাওয়ার উসিলা বানিয়ে দিন আর আমাদের সবাইকে ফরজ হজ আদায় এবং পবিত্র রমজানে বেশি বেশি ওমরা পালন করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

পূর্বকোণ/এসএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট