চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

এক বঁটির দাম ১০ হাজার টাকা!

এক বঁটির দাম ১০ হাজার টাকা!

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ জুলাই, ২০২০ | ৯:৪৫ অপরাহ্ণ

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদ্প্তরের এক প্রকল্পে একেকটি বঁটির দাম দেখানো হয়েছে ১০ হাজার টাকা। এত দাম দিয়ে কেনার প্রস্তাবনা কখন কীভাবে তৈরি হলো, কীভাবে বঁটি, চামচ, বয়াম জাতীয় রান্নার সামগ্রীর দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে নির্ধারণ হয়ে গেল সেই দায় এখন আর কেউ নিচ্ছেন না।

প্রকল্পের প্রস্তাবনায় স্বাক্ষরকারী কর্মকর্তা বলছেন, এত বড় প্রকল্পে অনেক ধরনের বড় যন্ত্রপাতির মধ্যে ছোট জিনিসের দাম বেশি ধরার বিষয়টি কীভাবে হলো তা এখন খতিয়ে দেখতে হবে।

এদিকে কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি কৃষি মন্ত্রণালয় ও প্ল্যানিং কমিশনের কাজ। তাই অধিপ্তরের ব্যবস্থাপনায় প্রকল্পটি হলেও এই প্রস্তাবনার সঙ্গে তাদের কোনও ধরনের সম্পৃক্ততা নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের প্রস্তাবনায় (ডিপিপি) অতিরিক্ত দামের এসব বিষয় উঠে এসেছে। প্রকল্পটি ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা ব্যয় ধরে গত সপ্তাহে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পেয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় এই চড়া দামে কেনাকাটা।

কিচেন সামগ্রীর বাজারমূল্যের সঙ্গে প্রকল্পের জন্য ধার্যকৃত মূল্য দ্বিগুণেরও বেশি কেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন, অর্থ ও সাপোর্ট সার্ভিসেস) মো. জহিরুল ইসলাম সরাসরি জানান, অধিদপ্তরের এর সঙ্গে কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। এটি কৃষি মন্ত্রণালয় ও প্ল্যানিং কমিশন দেখেন।

যদিও কৃষি মন্ত্রণালয় পুরো প্রক্রিয়াটা বর্ণনা করতে গিয়ে বলছে ভিন্ন কথা। মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী সংস্থা প্রকল্পের কাগজ প্রস্তুত করে। তারপর সেখান থেকে মন্ত্রণালয় পাঠানো হলে যাচাই-বাছাই চলে। এরপর প্ল্যানিং কমিশনে যায় এবং সেখানে আরেক দফা অধিকতর যাচাই-বাছাই করার পর অনুমোদনের পর্যায়ে পাঠানো হয়।

পরিকল্পনা উইংয়ের সিনিয়র সহকারী প্রধান সুজয় চৌধুরী কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পের বরাদ্দের জন্য প্রস্তাবনায় সই করেছেন। তিনি বলেন, এটা নিয়ে আমরা কাজ শুরু করা হয়েছে।

এর সঙ্গে কারা সংশ্লিষ্ট হতে পারে জানতে চাইলে তিনি এটি অধিদপ্তর থেকেই আসে বলে জানিয়ে বলেন, এটি অনেক পর্যায়ে যাচাই-বাছাই হয়। এটা অনেক বড় প্রকল্প তাই এখানে অনেক আইটেম ছিল। ছোট ছোট আইটেমগুলোর দাম বেশি বলায় বাজার দর দেখে যাচাই করার চেষ্টা করছি। এমন বড় প্রকল্প দেশে এটিই প্রথম। এখানে অনেক কৃষি যন্ত্রপাতি আছে। এর মধ্যে ছোট ছোট কয়েকটি আইটেমের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দাম হয়তো এসেছে। এখন এখানে ভুল করে হয়েছে না কীভাবে হয়েছে সেই ব্যাপারটি মন্ত্রণালয় দেখবে।

উল্লেখ্য, কৃষি সম্প্রসারণের প্রকল্পের এই কেনাকাটায় রাইস ডিস ৩ হাজার, তরকারি ডিস ২ হাজার, নন-স্টিক ফ্রাই প্যান ৫ হাজার, বড় চামচ ১ হাজার এবং মাঝারি চামচ প্রতিটি ৫০০ টাকা করে ধরা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি ছুরি ২ হাজার, বড় তরকারি কাটার কাচি প্রতিটি ২ হাজার, দুই চুলার গ্যাস স্টোভ ১০ হাজার, বঁটি প্রতিটি ১০ হাজার, শীল কড়ই কাঠের রুটি মেকার ৫ হাজার, শিলপাটা ৫ হাজার টাকা করে প্রতিটির দাম ধরা হয়েছে।

 

 

 

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট