চট্টগ্রাম বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫

সর্বশেষ:

এক প্রকল্পেই বাড়তে পারে কর্ণফুলী টানেলে যান চলাচল
কর্ণফুলী টানেল

এক প্রকল্পেই বাড়তে পারে কর্ণফুলী টানেলে যান চলাচল

সুমন শাহ্, আনোয়ারা

১৩ এপ্রিল, ২০২৫ | ৪:১০ অপরাহ্ণ

উদ্বোধনের আগে কর্ণফুলী টানেল নিয়ে যেসব সমীক্ষা করা হয়েছে প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও সেসব সমীক্ষার বাস্তব প্রতিফলন হচ্ছে না। তবে কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে টানেলে যানচলাচল বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এবং বিভিন্ন পরিকল্পনাবিদরা।

 

কর্ণফুলী টানেল নিয়ে সমীক্ষাগুলোর একটি হলো, ২০১৭ সালের সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় যান চলাচলের প্রাক্কলন অনুযায়ী, এটি চালুর পর দৈনিক গড়ে ২০২৫ সাল নাগাদ ২৮ হাজার ৩০৫টি ও ২০৩০ সাল নাগাদ ৩৭ হাজার ৯৪৬টি যানবাহন চলাচলের লক্ষ্যমাত্রা করা হয়েছিল। বর্তমানে চালুর প্রায় এক বছরের মাথায় দেখা যায় এই টানেল দিয়ে প্রতিদিন গড়ে চার হাজার যানবাহন চলাচল করছে। তাই বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী ২০২৫ সালে টানেল দিয়ে ৫ হাজার গাড়িও চলাচল করবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

 

গত ২৩ সালের ৩১ অক্টোবর শেরে বাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্রায় ৫২ হাজার ৬১২ কোটি টাকা ব্যয় সম্বলিত ৩৭টি প্রকল্প অনুমোদন করে। এর মধ্যে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা মুরিদুল আলম সড়ক আনোয়ারা যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নতীকরণ’ নামে একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয় পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় ৪৯৫ কোটি ৭৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা।

 

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রকল্পের আওতায় গাছবাড়িয়া থেকে আনোয়ারা পিএবি সড়কের চৌনাপাড়া পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার ও চৌনাপাড়া থেকে শোলকাটা লাবীবা কনভেনশন হল পর্যন্ত ২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সড়ক নতুন করে নির্মাণ করা হবে। অন্যদিকে লাবিবা কনভেনশন হল থেকে কালাবিবির দিঘির মোড় পর্যন্ত ২ দশমিক ১০ কিলোমিটার এবং আনোয়ারা ফায়ার স্টেশন থেকে কালাবিবির দিঘির মোড় পর্যন্ত ২ দশমিক ৩৪৫ কিলোমিটার সড়ক মহাসড়কের মতো উন্নয়ন করা হবে।

 

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ২ দশমিক ৯৫০ কিলোমিটার রিজিড (আরসিসি) ইকুপমেন্ট নির্মাণ বাবদ ৩০ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় তিনটি বাস-বে নির্মাণ (বাস দাঁড়ানোর স্থান) বাবদ ৫৫ লাখ ১৭ হাজার টাকা এবং তিনটি যাত্রী ছাউনি বাবদ ৪৩ লাখ টাকা ধরা হয়েছিলো।

 

প্রস্তাবিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) এক হাজার ৬৮০ মিটার আরসিসি ইউ-ড্রেন নির্মাণ বাবদ তিন কোটি ৪০ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ছয় হাজার মিটার আরসিসি ড্রেন-কাম-ফুটপাত বাবদ ২৬ কোটি ৪১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা, চার হাজার ৩৯৫ মিটার আরসিসি রিটের্নিং ওয়াল নির্মাণ বাবদ ৪৫ কোটি ৫৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ইউটিলিটি শিফটিং বাবদ ১২ কোটি ৫৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিলো।

 

বীর মুক্তিযোদ্ধা মুরিদুল আলম সড়ক আনোয়ারা যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নতীকরণ’ প্রস্তাবনাটির মাধ্যমে টানেল এলাকার আনোয়ারা, চন্দনাইশের মানুষের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ শুরু হয়েছিলো। অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান এই সড়কে জায়গা জমিও কিনেছিলো। তবে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রস্তাবনাটি।

 

এই সড়কের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সহ-সভাপতি প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেন, কক্সবাজার লেনের শতভাগ গাড়ি টানেলে নিয়ে আসা গেলে টানেলের ব্যবহার অনেক বৃদ্ধি পাবে। এখন টানেলের আনোয়ারা প্রান্ত দিয়ে গাড়িগুলো বের হয়ে আবার কর্ণফুলী উপজেলা এবং পটিয়া অতিক্রম করে কক্সবাজার সড়কে যুক্ত হতে হয়। এতে করে সময় বৃদ্ধি পায়। তাই সময় কমাতে টানেল দিয়ে বের হয়ে আনোয়ারার মধ্যদিয়ে গাছবাড়িয়ায় কক্সবাজার সড়কে যুক্ত হওয়া উচিত।

 

এদিকে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করে চট্টগ্রাম দক্ষিণ সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)’র নির্বাহী প্রকোশলী পিন্টু চাকমা বলেন, একনেকের চাতুরী (চৌমুহনী)-সিইউএফএল-কর্ণফুলী ড্রাইডক মেরিন একাডেমি ফকিরনিরহাট সড়কটির জন্য টেন্ডার হয়েছে। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুরিদুল আলম সড়ক প্রকল্পটি অনুমোদন না হওয়ায় এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে না।

 

পূর্বকোণ/ইব

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট