চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২৪

সর্বশেষ:

ট্যুরিস্ট পুলিশের অনন্য উদ্যোগ

নিরাপদে ফিরলেন কক্সবাজারে আটকে পড়া ২০ হাজার পর্যটক

এরফান হোছাইন, কক্সবাজার

২৬ জুলাই, ২০২৪ | ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজার। যেখানে দেশ-বিদেশের পর্যটকেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ও অবসর সময় কাটাতে ছুটে আসেন। আর সেই ভ্রমণে আসা পর্যটকেরা গত এক সপ্তাহ ধরে আটকে পড়েছিলেন কক্সবাজারে।

 

জানা যায়, পর্যটননগরী কক্সবাজারে কারফিউ চলাকালীন ঘুরতে আসা প্রায় বিশ হাজার পর্যটক আটকা পড়েন। বেশিরভাগ পর্যটক রাজধানী ঢাকা থেকে আগত। এছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ও বিদেশ থেকে আগত পর্যটকরাও বিভিন্ন হোটেল-মোটেলে আটকা ছিলেন।

 

কারফিউর কারণে কক্সবাজারে আটকা পড়া প্রায় ২০ হাজার পর্যটককে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ এক অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এবং বিদেশ থেকে আসা পর্যটকরা কারফিউর কারণে কক্সবাজারে আটকে পড়লে ট্যুরিস্ট পুলিশ তাদের পাশে দাঁড়ায়। ট্যুরিস্ট পুলিশের তথ্যকেন্দ্র বা ‘ইনফরমেশন টার্মিনালে’র মাধ্যমে আটকে পড়া পর্যটকদের সকল প্রকার সহযোগিতা করা হয়।

 

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক সালমান ও রামিসাসহ একাধিক ভ্রমণপিপাসু জানিয়েছেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের ইনফরমেশন টার্মিনালের মাধ্যমে পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন সেবা প্রদানের খবর পান। পর্যটকরা জানান, তারা এই টার্মিনাল থেকে মুভমেন্ট পাস সংগ্রহ, যাতায়াতের ব্যবস্থা, হোটেলের ভাড়া, খাবারের ব্যবস্থাসহ নানাবিধ তথ্য পেয়েছেন। এছাড়াও সবকিছুতেই ট্যুরিস্ট পুলিশ সহায়তা করেছে।

 

বিদেশি পর্যটকদের বিমানবন্দরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় পুলিশ স্কর্টের মাধ্যমে। দেশি পর্যটকদের জন্য যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয় এবং ভাড়া যেন অতিরিক্ত না হয় সেদিকে নজর রাখা হয়। এছাড়াও রেস্টুরেন্টগুলোতে যাতে অতিরিক্ত দাম না নেওয়া হয় সে বিষয়েও নজর রাখা হয়।

 

ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক গাজী মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, গত ১৮ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার পর্যটককে নিরাপদে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এ সময়ে ১৯ জুলাই ২৪টি, ২০ জুলাই ১০০টি, ২১ জুলাই ৬৫টি, ২২ জুলাই ১০০টি এবং ২৩ জুলাই ১৪৩টি বাসে করে পর্যটকদের নিজ নিজ গন্তব্যে পাঠানো হয়। এছাড়া অনেকে নিজস্ব গাড়িতে করেও চলে গেছেন।

 

হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম জানান, ট্যুরিস্ট পুলিশের উদ্যোগে ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট সকলের যৌথ সহযোগিতায় পর্যটকদের তেমন সমস্যা হয়নি। যার ফলে নিরাপদেই বাড়ি পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছেন কক্সবাজারে আটকে পড়া হাজারো পর্যটক।

 

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের এসপি মনজুর মোরশেদ বলেন, কারফিউতে ভয়াবহ অবস্থায় কক্সবাজারে আটকা পড়া বিভিন্ন জেলা ও বিদেশ থেকে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করেছে। একজন পর্যটকও যেন হয়রানির শিকার না হয় তাতে আমরা সম্বন্বয় করে কাজ করেছি।

 

তিনি আরও বলেন, জরুরি অবস্থায় কোন হোটেল-রেস্তোরাঁয় কর্তৃপক্ষ যাতে অতিরিক্ত কিছু আদায় করতে না পারে তার জন্য কক্সবাজারে দায়িত্বরত সকলকে নিয়ে সম্বন্বয় করে সবসময় দায়িত্ব পালন করছি। এছাড়া আমরা গত পাঁচদিনে আটকে পড়া সতেরো হাজারের অধিক পর্যটককে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে সহায়তা প্রদান করেছি। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রমাণ করেছে যে তারা কেবল নিরাপত্তা রক্ষাই করে না, প্রয়োজনে মানবিক সেবাও প্রদান করে।

পূর্বকোণ/এসএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট