প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে, কাটা হচ্ছে পাহাড়। রাতভর পাড়ার ভেতর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ড্রাম ট্রাক। যানবাহনের বিকট শব্দে হাজারো পরিবারের রাতের ঘুম হারাম। কথাগুলো বলছিলেন বাঁশখালী উপজেলার বৈলছড়ি ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা চাকুরিজীবী (ছদ্মনাম) আবুল কালম।
গতকাল শনিবার চেচুরিয়া গ্রামে একটি দোকানে বসে তার মনের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। এসময় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বৈলছড়ি এলাকায় দিনে কোন ট্রাক দেখা যায় না। রাত ৯ টার পর গ্রামের রাস্তা দিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পাহাড়ের মাটি বহনকারী ট্রাকগুলো। এলাকার লোকজন অনেকবার অভিযোগ তুলেছে। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। পাহাড়ি মাটি এনে প্রধান সড়কের পাশে চেচুরিয়ার ঐতিহ্যবাহি ধানি জমির বিলটি এখন ভরাট করে বসতবাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। মানুষ রাতেও ঘুমাতে পারে না। ভূমি দস্যুদেরকে বাধা দেওয়াও যাচ্ছে না। প্রশাসন ইচ্ছে করলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে। মাসের পর মাস এ গ্রামের সড়ক দিয়ে রাতভর চলছে পাহাড়ি মাটি ভর্তি ড্রাম ট্রাক।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বৈলছড়ি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের নুরুল আলম, মোহাম্মদ আলমগীর, রিদুয়ান, এর নেতৃত্বে ২০-২২ জনের একটি গ্রুপ সড়কে পাহারা বসিয়ে রাতের অন্ধকারে প্রতি ট্রাক ২৮শ থেকে ৩২শ টাকা দামে মাটি বিক্রি করছে। এলাকার লোকজন জানিয়েছে চেচুরিয়ার ধুইল্লাঝিরি পাহাড় দখলকারী নুর হোসেন ফকির এককালীন ৪০ হাজার টাকায় পাহাড় কর্তনের অনুমতি দিয়েছেন। সন্ধ্যা নামতে না নামতেই পাহাড় খেকো ব্যক্তিরা ১০-১২ টি ট্রাক নিয়ে মাটি কর্তনে নেমে পড়ে ।
এ ব্যাপারে কালিপুর রেঞ্জের চেচুরিয়া বিট কর্মকর্তা শফি আলম জানান, পাহাড়ের মাটি কাটার বিষয়টি নজরে আসার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি তুলেছি। ভূমিদস্যুদের তালিকা তৈরি করেছি। স্যারকে বিষয়টি অবহিত করেছি। মাটি কাটার সাথে জড়িত ভূমিদস্যুরা আস্ফালন করে বলছেন, সাংবাদিক, পুলিশ ম্যানেজ করেই আমরা এই ব্যবসা করছি। আপনি (ফরেস্ট কর্মকর্তা) আমাদের কিছুই করতে পারবেন না। ভূমিদস্যুদের তালিকা করা হয়েছে।
বাঁশখালী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়ে জানার পরে পুলিশকে অবহিত করা হয়। পুলিশ অভিযানও চালায়। কিন্তু তাদেরকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায় না বলে জানিয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোন অবস্থাতেই পাহাড় কর্তনকারীদের ছাড় দেয়া হবে না।
পূর্বকোণ/পিআর